জয়া ঘোষ : যদি কোনোদিন এমন হয় তুমি হেঁটে যাচ্ছো আমার কবরের পাশ দিয়ে গুনগুন করে কবিতা বলতে বলতে হয়তো বা নতুন প্রেমিকার হাত ধরে…। তোমার শুভ্র পাঞ্জাবি, কাঁধের ব্যাগ, চোখের চশমা আর খুব চেনা তোমার গায়ের সেই গন্ধে আমার কবরের ওপর আত্মাটা যদি পাখি হয়ে তোমায় ডেকে ওঠে চেনা নাম ধরে…
তুমি একবার ও পিছু ফিরে দেখবে তো? একবার কবরের ওপর ওষ্ঠ আদর দিয়ে সেই চেনা সুরে বলে যাবে তো! যেমন করে হাতের মধ্যে হাতদুটো জাপটে ধরে বলতে … ” ভালোবাসি “তোমায় আমি শুধরে দিয়ে বলবো ভালোবাসি কি গো, বলো ভালোবাসতাম। কবিরা সত্যি পাগল, দেখতে পাচ্ছো না আজ আমি মৃত।
নয়তো এতক্ষণে কতবার প্রজাপতি সুখ হতাম তোমায় ছুঁয়ে। আর তুমি সে ছোঁয়ায় আরোও রঙিন হতে। যেমন করে তিন প্রহরে লেখা কবিতা শোনাতে ভোরের হেঁটে যাওয়া পথ ধরে। কতবার ছুঁয়ে দিতে এ আমার আমিরে সবটুকু সেদিন ও রয়ে যাবে …
শোনো কবি, শুনছো.. তুমি কিন্তু ওদের বোলো জাত্যাহংকারে আমায় যেন বাক্সবন্দী ছাই করে না দেয়… আমায় যেন ওরা কবর দিয়ে যায়… ঠিক তোমার হেঁটে যাওয়া কোনো পথের ধারে। তবুও তো প্রতিদিন ইটের পাঁজরেও তোমার সুগন্ধ বাতাস ছুঁয়ে যাবে আমায়।
ভোরেরবেলায় যখন তপোবনে যাবে, তখন আমার কবরের উপর একটি ফুল দিয়ে যেও। যেমন প্রতিদিন বকুল কুড়িয়ে দিতে আমায়। বাঁশিতে যেদিন প্রথম সুর তুলতে পারবে সেদিন নতুন প্রেমিকাকে লুকিয়ে আমায় প্রথম শুনিয়ে যেও, সেভাবেই… যেমনটি ঠিক সময় লিখে গেছে ….।
অনেকগুলো দিন পরে যেদিন তোমার নতুন প্রেমিকাও আমার মত পুরোনো হয়ে যাবে …অথবা ফিরে আসবে দুঙ্গেশ্বরী পাহাড়ের গুহা ছেড়ে সেদিন এসে দেখবে আমার কবরের পাশ দিয়ে তোমার প্রিয় ফুলের গাছ। ওগুলো গাছ নয় আমার রক্তবিন্দু।
আর মনে রেখো যে পূর্ণিমায় সাতটি ব্রহ্মকমল ফুটবে সেই প্রথম প্রহরে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখো ঠিক তোমার মাথার উপরে আমি জ্বলজ্বল করে হাসবো। আমি জানি যে চোখে আমার জন্যে একবার ও জল পড়েনি সেদিন একবার তুমি মুছে নেবে দু ফোঁটা মুক্ত ….
আমার অসম্ভব কষ্ট হবে তবুও তোমায় দূর হতে দেখে যাবো। না হয় দূর হতেই ভালোবাসবো। সব নিভে যাবে নিভৃতে। আকাশগঙ্গায় উজ্জ্বল সমস্ত নক্ষত্রের চেয়েও আমি উজ্জ্বল হয়ে থাকবো চাঁদের পাশে আমার প্রিয় ঐ অরুন্ধতী তারাটির মত।
…………………………………………../ জয়া ঘোষ …
কখনও লেখারা ডানা মেলে গল্প হয়ে যায়