কান্না – জান্নাত লাবণ্য
ছোট বেলায় একদিন এক লোককে বলতে শুনেছিলাম, খুব কাঁদতে ইচ্ছা করে কিন্তু কীভাবে কাঁদবো?
সেদিন কথাটার মানে বুঝিনি। কিন্তু আজ মনে হয় সত্যিইতো কতদিন কান্না করিনা আমি বা আমরা। তবে কী আমাদের জীবনে দুঃখ, কষ্ট, বেদনা নেই। এ সবই আছে, কিন্তু এগুলো প্রকাশ করার কান্না শুধু হারিয়ে গেছে। কান্না করার সময় নেই, স্থান নেই, সুযোগ নেই। আমরা যেন আবেগের এ প্রকাশকে হারিয়ে ফেলছি।
একদিন তাই ছেলেবেলা থেকে পাওয়া সব দুঃখের আর আনন্দের কথা গুলো এক এক করে ভাববো। নিশ্চয়ই তখন কান্না আসবে আমার। পিঠাপিঠি ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মায়ের কাছ বিচার চেয়ে যেমন হাউমাউ করে কাঁদতাম, ঠিক সেভাবে আবার কাঁদতে চাই আমি। কিংবা প্রিয় নায়কের মৃত্যু খবর জেনে বাথরুমে লুকিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতাম নিঃশব্দে, কেউ টের পেলে লজ্জা পাব , ঠিক তেমন করে কাঁদতে চাই আমি। আর প্রিয় বন্ধুটি অন্য স্কুলে চলে যাওয়ার শোকে, জড়িয়ে ধরে যেভাবে কেঁদেছিলাম, কিংবা আব্বার কিনে দেওয়া জামাটা ছিড়ে যাওয়ার দুঃখে যেভাবে চিৎকার করে কেঁদেছিলাম।
ঠিক তেমন করে বর্তমানের কষ্ট গুলো ভেবে আমি আবার কাঁদতে চাই। এটা মানুষ হিসাবে আমার অধিকার, আমার বৈশিষ্ট্য। আমি তাকে হারিয়ে যেতে দিব না।
কে কি ভাবলো, মেকআপ নষ্ট হয়ে গেল, কেন বোকামি করছি – এসব কিছুই ভাববো না। আমি একটু খোলা মনে আমার মতো করে কাঁদতে চাই কারনে কিংবা অকারনে।