খ্যাংরামুখী বুড়ী
কবি মাহফুজা আরা পলক
শান্তিপুরের পথের ধারে
অশ্বত্থ গাছের ঝুরি,
সেখানটাতে করত যে বাস
খ্যাংরামুখী বুড়ী।
কোন জনমে কে ছিল তার
কেউ জানে না খোঁজ,
বুড়ীর কাছে শুধালে কেউ
গালি খেতো রোজ।
আসলে কাছে ভালোবেসে
বিনা পারমিশনে,
খ্যাঁচখেঁচিয়ে বলত কথা
কারো ঈক্ষণে।
উনুনেতে অনল জ্বেলে
ভাবত কী যে রোজ,
সেদ্ধ কিংবা পান্তা দিয়ে
সারত রোজই ভোজ।
খড়কুটোর ঐ ঝুপড়িটা তার
ছিল প্রাসাদ সম,
দিন ফুরোলে সূর্য ডুবে
নামত গভীর তম।
গ্রামের সকল ইতিকথা
গল্প গাঁথা যত,
জানতে হলে ঝুপড়ি ঘরে
আসত মানুষ কত।
ধমকি ধামকি দিয়ে যখন
খুলত বুড়ীর গাঁট,
বুড়ীর চতুর্দিকে তখন
জমতো লোকের হাট।
অতীত স্মৃতির ডালা খুলে
তড়পাত তার জান,
কৈছালি প্রাণ ডাঙায় পড়ে
দিত ব্যথার জানান।
কুঞ্চিত চোখ ঝাপসা হয়ে
স্মৃতির বারান্দায়,
ঘোলাটে সব সোনার অতীত
খুঁজে দুরাশায়।
সবাই ভাবত কেমনতরো সে
শতবর্ষী খ্যাংরামুখী,
জানতো না কেউ ত্রিভুবনে
বুড়ী চির দুঃখী।
ছিল যে এক সাত রাজার ধন
খ্যাংরামুখী বুড়ীর ভাতি,
মা বিনে সে টাকার আশে
হলো পরবাসী।।
১৭.০৮.২০২১