জনাব মনিমূল হক, তিনি নাটোর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন। অবসরের পর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। সেখানকার শীতের তীব্রতা নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে “নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে স্বর্গসুখ আমার বিশ্বাস”শিরোনামে তুলে ধরেছেন আদ্যপান্ত। নাটোর কন্ঠের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
এরপর জরুরী কথাটি মনেই করতে পারলেন না। শীতের এ ভয়াবহতার অস্থিরতা দেখে ছোটবেলার সেই ভাবসম্প্রসারন উদিত হলো মনে, যেটি লেখার বিষয়ে বলেছি। এবার আমি আমার অবস্থান থেকে এখানকার শীতের একটু বর্ণনা সবিনয়ে বলতে চাই।
গত ১৫ দিন থেকে ওয়াশিংটন ষ্টেটস-এ বরফ পড়া শুরু হয়েছে। চলবে আগামী দুই মাসের অধিক। এক রাতে মাঠ-ঘাট-রাস্তা সবকিছু বরফে সাদা। বরফের উচ্চতা প্রায় এক ফিট। এখনো শক্ত হয়নি। চোরাবালির মত পা দেবে যাচ্ছে। চারিদিকের পরিবেশ এতো সাদা যে,থুতু ফেললেও তার রং রক্তের মত লাল দেখাচ্ছে। প্রকৃতির কি বিভ্রম। সুর্যের কোন দেখা নাই। কবে দেখা মিলবে তাও অজানা।
এসময় সুর্যে আলট্রা ভালোলেট থাকবে উচ্চ মাত্রায়। সাদা মানুষের কোন অসুবিধা না হলেও আমাদের মত কালো দেশের মানুষেরা সুর্য থেকে ভিটামিন ”ডি” নিতে পারবে না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। মনের কোনে জমবে মেঘমালার মত ডিপ্রেশন। এ অবস্থায় আপনাকে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ”ডি” খেতে হবে। যারা এখানে নতুন আসেন তারা প্রথমদিকে বুঝে উঠতে পারেন না। তাই ডিসেম্বর মাস আসলেই কান্নাকাটি করে ছেলেমেয়ে ফেলে নিজ দেশে পলায়নপর হন। তবে এটি স্থায়ী হয় না।
সময়ের সাথে সাথে প্রকৃতি হয়তো আপনাকে খাপ খাইয়ে নেয়। আমিও সেই পর্যায়ের একজন। আমার সকালের হাটাঁহাটিও চলছে কিন্তু বরফের মধ্যেই। যে ছবিটি দেখছেন সেটি আজ সকালের। দেখলাম,স্কুলের বাচ্চারাও মাঠে বরফ দিয়ে মানুষ বানাচ্ছে। গাছের ছোট ছোট পাতা দিয়ে সে বানানো মানুষের চোখমুখ বানিয়ে তার সাথে খুনসুটি করছে। জীবন চলেছে স্বাভাবিক।
— Spokane, Washington এ।