নাটোর কণ্ঠ : বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকার বাইরে একমাত্র বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবন। নাটোর শহর থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে দিঘাপতিয়ায় উত্তরা গণভবন ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে দর্শনীর বিনিময়ে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য খুলে দেওয়া হয় । তখন থেকে নাটোরের পর্যটন খাতে সরকারের রাজস্ব আয়ের চিত্র পালটে যায়।
দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসতে শুরু করে। দর্শনার্থীদের জন্য দিনে আলোতে যেমন চমৎকার ঐতিহ্যবাহী দৃশ্যের দেখা মিলে এ স্থাপনায়। সন্ধ্যা নামলে ঐতিহাসিক এই স্থাপনার ভিন্ন চিত্র। আলো সল্পতায় এক ভুতুরে পরিবেশের সৃষ্টি হয় সাঁঝ থেকে। এই ঐতিহাসিক স্থাপনায় নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানান, কর্মব্যস্ত সারা দিনের পর স্থানীয়রাসহ দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদনের একটি অন্যমত একটি স্থান উত্তরা গণভবন এলাকা।
নলডাঙ্গা উপজেলার ব্যাংক কর্মচারী হামিদুল ইসলাম নাটোর কন্ঠকে জানান, ‘সন্ধ্যার পরে পরিবার নিয়ে বাইরে চা খেতে এত দুরে এসেছি। কারন এখানে এলে হিস্টোরিক্যাল থিমের সাথে নিজেদের মেলানো যায়। তাছাড়া বাইরের পর্যটকরা এলেও সন্ধ্যার পরের একটা হিস্টোরিক্যাল ইমেজ এখানে নিতে আসে।
কিন্তু উত্তরা গণভবনের সামনে খুবই আলো কম। ভ্রমন পিপাসুরা ছবি তুলতে চাইলে তা খুব সুখকর হয় না। তিনি এই ঐতিহাসিক স্থাপনার প্রধান ফটকসহ সামনের অংশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে কতৃপক্ষের দৃষ্ট আকর্ষন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টেটাস দিয়েছেন।’
ব্যাংক কর্মকর্তা জাকির হোসেন নাটোর কন্ঠকে জানান, ‘ঐতিহাসিক একটা স্থাপনায় সন্ধ্যার পরে ভুতুরে পরিবেশ মানায় না। আমরা যারা সারদিন কর্মব্যস্ততার পরে একটু প্রশান্তির জন্য ঘুরতে আসি, আলো সল্পতার কারনে পরিবেশটা ভুতুরে লাগে। তবেুও আমরা প্রানের টানে ছুটে আসি ঐতিহ্যের স্বাদ পেতে। তবে প্রধান ফটকটা অন্তত আলোকিত করা উচিৎ।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রাজা নাটোর কন্ঠকে জানান, ‘সারা দিনের তুলনায় সন্ধ্যায় বেচাবিক্রি অনেক বেশি হয়। কারন দিনের চেয়ে সন্ধ্যায় বিপুল পরিমান লোকের সমাগম ঘটে। উত্তরা গণভবনের মুল ফটকের আকর্ষণেই তারা ছুটে আসে এখানে। তারা মনে করেন প্রধান ফটক ও সামনের অংশে আলোর ব্যবস্থা করা হলে আগত দর্শনার্থীরা আরও বেশি সময় এলাকায় মানুষের সমাগম থাকতো। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপকৃত হত।’
নাটোরের গণমাধ্যম কর্মি মেহেদী বাবু নাটোর কন্ঠকে বলেন, ‘সারাদিন যে প্রতিষ্ঠান সরকারের কোষাগারে বিপুল পরিমান অর্থ জোগান দেয়, সেই প্রতিষ্ঠান সন্ধ্যার পরে কেন ভুতুরে রুপ ধারণ করে! স্থানীয় ভ্রমন পিপাসুরা সন্ধ্যার পরে মানষিক প্রশান্তির জন্য উত্তরা গণভবনের মূলফটকে পছন্দের তালিকায় রাখলেও অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে। এই স্থাপনায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা উচিৎ।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নিরাপত্তা কর্মি জানান, প্রধান ফটক ও ভেতরের অনেক বৈদ্যতিক বাতিতে (ল্যাম্পপোষ্ট) আলো জ্বলে না।
উত্তরা গণভবনের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. খায়রুল বাশার নাটোর কন্ঠকে জানান, ‘ল্যামপোষ্টের বাল্ব মাঝে মাঝে ফিউজ হয়। তখন আমি স্থানীয় গণপূর্ত অধিদপ্তরকে জানালে ইন্জিনিয়ার এসে দেখে সেসব বাতি পুনরায় চালু করে দেন।
তবে এই প্রক্রিয়া অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যপার। আজ বাল্ব বন্ধ হলে তা কবে ঠিক হবে তা প্রশ্ন থেকে যায়!’ ঐতিহাসিক এ স্থাপনার প্রধান ফটকে দর্শনীয় আলোর ব্যবস্থা করাগেলে আরও বেশি জনসমাগম ঘটত। নাটোরে পর্যটন খাত আরও সমৃদ্ধ হত বলে মনে করেছেন স্থানীয়রা।