নাটোর কন্ঠ : চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুরে বোরো ধান রোপণে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষি প্রধান এই অঞ্চলে অর্থকরী ফসল হিসেবে বোরো ধানই একমাত্র ভরসা। চারা রোপণের প্রতিটি কাজ ঠিকমতো হলেও ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে সবাই চিন্তিত ও হতাশায় রয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, হাড় কাপানো শীতের মধ্যে জমির কাদা পানিতে নেমে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধানের চারা রোপণ করছেন চাষিরা। কেউ জমি প্রস্তুত করছেন। আবার কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলছেন। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে কৃষকদের এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে বলছে , চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮’শ ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশ জমিতে ধান রোপনের কাজ শেষ হয়েছে। এরমধ্যে জিরা শাইন জাতের ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৪, ব্রি-৮৬, ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৯ ধানসহ অন্যান্য জাতের ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে।
উপজেলার খুবজীপুর শ্রীপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, রাতদিন পরিশ্রম করে আবাদ করতে হয়। লাগানোর পরে নিয়মিত পরিচর্যাও করতে হয়। তেল-সারের দাম বৃদ্ধিতে গতবারের চেয়ে এবছর খরচটা বেশি হচ্ছে। তারপরও যদি ন্যায্য দাম না পায় তাহলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই সরকারের কাছে বোরো আবাদে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য দাবি জানান তিনি।
একই গ্রামের চাষি মহরম আলী মোল্লা বলেন, এবছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে বর্গাচাষীদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২০হাজার টাকা খরচ হয়। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘায় ২৫-৩০ মণ ধান হবে। বর্তমানে প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ২’শ থেকে ১৫’শ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিসার হারুনর রশীদ বলেন, বোরো ধান চাষে কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ ও সহোযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমির রোপণ কাজ শেষ হবে।
রোপন শেষ হলে পরবর্তীতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য আলোক ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতি স্থাপন করা হবে।চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ধান আবাদ হবে বলে তিনি আশা করেন।