নাটোরে সরকারি খাল উদ্ধার

0
668

সদর উপজেলার বলদখাল সরকারি খাল উদ্ধা । সরেজমিনে উপস্থিত থেকে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ।

নাটোর কন্ঠ : নাটোর সদর উপজেলার পদ্ম বিল, কাকবাড়িয়া, দিয়ারপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া ও গাঙ্গইল বিলের পানি নিষ্কাষন বন্ধ হয়ে যায় প্রতি বছর, এতে করে কয়েক হাজার বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে যায়। প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে সরকারি খালের মধ্যে বাঁধ দিয়ে একাধিক পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করছিল দীর্ঘদিন ধরে। খালটি পদ্ম বিলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ।

বাঁধ দেওয়ার কারণে  নিষ্কাষন হতনা পানি, ফলে কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা সরকারি খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে, পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিপূর্বে আবেদন করেছে বহুবার। প্রতি বছর তারা ফসল আবাদ করার জন্য কড়া নাড়ে সরকারি মহলে। চলতি বছরেও তারা আবাদ করার প্রয়োজনে যোগাযোগ করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে, জানান তাদে অভিযোগ।

নাটোর সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কৃষকের কথা চিন্তা করে গত ছয় জানুয়ারি, সরেজমিনে সরকারি খাল এবং জলাবদ্ধ জমিগুলো সহকারী কমিশনার (ভূমি),কে নিয়ে পরিদর্শন করেন। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন। অবৈধ বাঁধ প্রদানকারীদের গত সাত জানুয়ারিতে অফিসে দেখা করতে বলেন। তারা গত সাত জানুয়ারিতে দেখা করলে, তাদের অবৈধ বাঁধ অপসারণের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

অবৈধ বাঁধ প্রদানকারিরা মাছগুলো অপসারণের জন্য কিছু সময় চান। উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাদেরকে এক সপ্তাহের মধ্যে মাছ অপসারণ করার নির্দেশ প্রদান করেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা গত ষোল জানুয়ারিতে পুনরায় উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সাথে দেখা করে এবং তারা জানান, দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব না হলে তারা ধান লাগাতে করতে পারবেন না।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা গতকাল আঠারো জানুয়ারি, সনিবারে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ বাঁধ অপসারণ করেন। অভিযান পরিচালনাকালে সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তিন নং  দিঘাপতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বার ও স্থানীয় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জনতা।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার নির্দেশে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা, কোদাল দিয়ে অবৈধ পুকুরের বাঁধ কেটে দেন তবে একেবারে অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। স্হানিয় চেয়ারম্যান, আগামী তিন  দিনের মধ্যে পুকুরের মাছ ধরার জন্য সময় বেঁধে দেন। নিবার্হী কর্মকর্তার  জানান, আগামী তিন দিন পর এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে বাঁধগুলো সম্পূর্ণ অপসারণ করা হবে। নিবার্হী কর্মকর্তার  এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য স্থানীয় জনতা ও ক্ষতিগ্রস্থকৃষকরা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

নিবার্হী কর্মকর্তার আরো জানান, অত্র ইউনিয়নের গোবিন্দপুর সুইজ গেইট হতে পদ্মবিল পর্যন্ত খালটি সরকারি ভাবে বিএডিসি‘র মাধ্যমে খনন করা হবে। কৃষকের পাশে সরকার ও প্রশাসন সবসময় থাকবে। কোন সরকারি খাল অথবা নদীতে কোন প্রকার বাঁধ দেওয়া যাবে না, যদি কেউ পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করে তাদেঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

অত্র এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা আবার আশায় বুক বেঁধেছে , তাঁরা আবার আগের মতন ফসল উৎপাদন করতে পারবে, গোলা ভরা ধান উঠবে, কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।স্বপ্নে বিভোর এই কৃষকের স্বপ্ন আর কোনো অবৈধ দখলদার বা প্রভাবশালীরা ভেঙে দেবে না,এমনটাই প্রত্যাশা করছে সচেতন মহল।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধ“প্রথম লগ্ন” -মুন রায় চৌধুরী’র কবিতা
পরবর্তী নিবন্ধ“সূর্যস্নানে যাব” কবি কাজী মোহিনী ইসলামের কবিতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে