বইটি সম্পর্কে লেখকের নিজের মন্তব্য………….
মৌচাকে কেবল মধু থাকে না, মোমও থাকে। মৌয়ালের কাছে মধুই দরকারি। কিংবা মাড়াইকলে যখন আখ মাড়াই হয়, রসগুলো চলে যায় ভাণ্ডে, ছোবড়াগুলো বাইরে। তাই বলে মোমগুলো কি ফেলে দেওয়া হয়? ছোবড়াগুলো? না, মোমও কাজে লাগে। ছোবড়াও। জ্বালানির কাজে।
আমি গল্প-উপন্যাস লিখি। এ দুটি আমার কাজ। দরকারি বিষয়। হাতটাকে চালু রাখার জন্য এর বাইরে আমি প্রচুর লিখি। প্রতিদিনই কিছু না কিছু লেখার চেষ্টা করি। লিখতে হবে এমন কোনো শর্ত আমাকে কেউ দেয়নি। লিখে আনন্দ পাই বলে লিখি। সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন, সমাজ, রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে। ‘টুকে রাখা কথামালা’ নামে কোনোটি ফেসবুকে পোস্ট করি, কোনোটি করি না। এই কথামালাকে মৌচাকের মোম বলা যেতে পারে, কিংবা আখের ছোবড়া। ফেলেও দেওয়া যায়, কাজে লাগালেও লাগানো যায়।
সাত বছর ধরে লেখা এই কথামালার মোট শব্দসংখ্যা তিন লাখ একুশ হাজার। বাছাই করা প্রায় ১০০টি লেখা নিয়ে এই বই। বাকিগুলো কম্পিউটার থেকে মুছে দিয়েছি। ওগুলো কোনো কাজের নয়। জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহারের অযোগ্য।
এই কথামালায় আমি যা লিখেছি, এগুলো আমার গত সাত বছরের চিন্তার প্রকাশ। সাত বছর পর এই চিন্তায় আমি স্থির নাও থাকতে পারি। কেননা, কোনো মতই চিরন্তন নয়। সত্যের রূপও এক নয়। সত্যের বহুরূপ। আমার কাছে যা সত্য, অন্যের কাছে তা মিথ্যা। এই দেশে যা সত্য, অন্যদেশে তা মিথ্যা। আমি যা লিখেছি তাই সত্য, এর বাইরে আর কোনো সত্য নেই, এমন মনোভাবকেই বলে গোঁড়ামি।
.
বইটি প্রকাশের জন্য বিদ্যাপ্রকাশের প্রকাশক মজিবর রহমান খোকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সন্ধ্যায় হাতে পেলাম বইটির সৌজন্য কপি।
স্বকৃত নোমান
২৫.০১.২০২০