বিভূতিভূষণের বিমাতা হেমাঙ্গিনী ও বৈরামপুরের কথকতা ll
ll অমিতকুমার বিশ্বাস ll
ইতিহাসকথা রোমাঞ্চিত করে। আঞ্চলিক ইতিহাস যেন আরও। ইতিহাসগ্রন্থগুলিতে আঞ্চলিকতাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হয় বলেই হয়তো এই ভালোবাসা। ভাষার আঞ্চলিকতার প্রতিও তাচ্ছিল্য থাকে আমাদের শিক্ষিত-অবচেতনে। আবার তুচ্ছতার প্রতি থাকে এক অচেনা মায়া। অতএব অবচেতনের স্তরে-স্তরে শুরু হয় দ্বান্দ্বিক পৃষ্ঠটান। কিন্তু ছায়া-মায়া-মমত্বের অধ্যায়গুলো ইতিহাসকারদের উগ্র হাসিতে উবে যায় একসময়। হৃদয় নয়, সেখানে সন-তারিখ-জায়গাজমি-শাসন-শোষণ-বিবিধ ঘটনাপ্রবাহ ও চরিত্রদের ভর-ভার গুরুত্ব পেয়ে যায় শেষমেশ।
অন্তরের চিরায়ত দরদি সোপানে অতীতের চরিত্রগুলো যেন ইয়া লাফ মারে, উঁচিয়ে ধরে তলোয়ার, তারপর হুঙ্কার ছেড়ে বলে, শোন শোন শোন রে গল্পদাস, শোন শোন আমাদের এ-গল্পগাছা- নটেগাছা! গল্প নয়, গল্প নয়, স-অ-অ-অ-ব সত্য! এ না-শুনলে তুই কীসের হরিদাস? আমি নেই, মানে তোর অতীত নেই। তোর অতীত নেই, মানে তোর শেকড়-বাকড় কিছুই নেই। তুই তখন এক্কেবারে কচুরিপানা! পানাদামের ফুলে ভোলাতে পারিস, কিন্তু নদীনালা-খালাবিলায় মন্থর বিষ কিন্তু তুই-ই!
অগত্যা!
ll ২ ll
১৯৬১।
নীল-কমিশন নীলচাষীদের পক্ষে রায় দিয়েছে অনেকাংশেই। এদিকে ল্যাবে কৃত্রিম নীল আবিস্কৃত। বাজারেও ছড়াচ্ছে। হতাশ নীলকরেরা হয় ফিরে যাচ্ছে দেশে, নইলে শোষণের নতুন মুখোশ নিয়ে নেমে পড়েছ এদেশেরই ভিন্ন-ভিন্ন স্থানে। দেশীয় জমিদার, অর্ধ-জমিদারগুলো তখনও তাদের পা-চাটা দালাল, এবং অর্থ ও ক্ষমতার আঁতাতে বিশ্বস্থও বটে। শোষক ভোল পালটায় বারেবারে।
ঔপনিবেশিক ব্যবসায়ীরা শোষক হতে বাধ্য। শেষে শাসক। এবং প্রয়োজনে যুদ্ধ, সে নীল নিয়ে হোক কিংবা তেল নিয়ে।
১৮৯০-’৯২।
ইছামতীর বুকে তখন মহাপ্লাবন। দীর্ঘদিন পর জল সরে গেলে বালুচর জেগে ওঠে খয়রামারী থেকে শ্রীপল্লি-বারাকপুর পর্যন্ত। চারিদিকে কেবল ধূধূ বালি। এক রুপোলি মরুভূমি যেন। ধীরে-ধীরে তা শ্যামল-আভা পাবার অপেক্ষায়।
নীলের আপদ গেছে। চাষিরা প্রাণখুলে ধান-পাট চাষে নামতে পারছে মহোল্লাসে। ১৯৬৩-তে সৃষ্টি হয়েছে বনগ্রাম মহকুমা, জুড়ে গেছে যশোর জেলার সঙ্গে। ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেস তৈরি হয়ে গেছে। দেশজুড়ে চলছে ক্ষুধা। বিদেশি রক্তচোষারা দেশীয় জমিদার, ছদ্মরাজা-ছদ্মনবাবদের সঙ্গে মিলেমিশে নব নব কৌশলে লুটেপুটে খাচ্ছে গোটা বাংলা, গোটা ভারতবর্ষ। খিদে যেন তাদের কমে না কোনওকালেই!
নদীয়ার কাঁচড়াপাড়া-হালিশহরের কোলে ঘোষপাড়া-মুরাতিপুর গ্রাম। গুরুচরণ চট্টোপাধ্যায়ের চার কন্যার প্রথমা মৃণালিনী চট্টোপাধ্যায়ের পূর্বে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতাঠাকুর মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় শাস্ত্রী বিবাহ করেন নদীয়ার (বর্তমানে উত্তর চব্বিশ পরগনা) বৈরামপুরের রামকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের কন্যা হেমাঙ্গিনী মুখোপাধ্যায়-কে। রামকৃষ্ণবাবু ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, ব্রিটিশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। তাঁর জ্যৈষ্ঠ পুত্র খগেন মুখোপাধ্যায় ‘রায় বাহাদুর’ খেতাবধারী। সে-সময় বৈরামপুর একটি সমৃদ্ধ জনপদ। ব্যাপক নীলচাষের ক্ষেত্রভূমি, অর্থাৎ অত্যাচার ও হত্যার ইতিহাসটাও সেখানকার মাটির অন্তরে লেখা। ১৯৭৯-এ এখানে তিনশো ঘর মুণ্ডা-পরিবার ছিল। অর্থাৎ নীলকুঠিও ছিল। বনগ্রাম মহকুমায় যেখানে আদিবাসীপাড়া আছ, তার আশেপাশে একটা নীলকুঠি থাকতে বাধ্য, কারণ এইসব আদিবাসীদের মানভূম-সিংভূম থেকে কুঠিয়ালের কাজে নিয়ে আসা হয়। আমার বৈরামপুরের মুণ্ডাপাড়ায় যাওয়া হয়নি এখনও, সেখানকার নীলকুঠির খোঁজও করা হয়নি। আসলে কোথায় যে আছে সে-খোঁজ পাইনি এখনও। খোঁজ দিতেও পারে না কেউ আর। নিশ্চয়ই ছিল। হয়তো ধ্বংস হয়ে গেছে। মাটিতে মিশে গেছে। এখন চিহ্ন নেই। চিহ্ন থাকা উচিত ছিল। যত্ন করে রাখাও উচিত ছিল আমাদের। এ তো আমাদের করুণ অতীতের স্মৃতিচিহ্ন। জানিপুর-বাঁওড়ের পাশে ( মাতলাবিল যেখানে শুরু হচ্ছে) শুলকা-দুর্গাপুরের নীলকুঠিটার ধ্বংসাবশেষ কয়েক ঘণ্টার পরিশ্রমে কনক-কে সঙ্গে করে খুঁজে পেয়েছিলাম প্রকাণ্ড এক কলাবাগানের নীচে। সংগ্রহ করেছিলাম শতাব্দী-প্রাচীন কুঠির ধ্বংসাবশেষ।
ll ৩ ll
হেমাঙ্গিনী দেবীর পুতুলখেলার বয়সেই বিয়েটা হল। সালটা জানা যায়নি। তবে ধরে নেওয়া যায় ১৮৭৯-এর সামান্য আগে-পরে বিবাহটা সম্পন্ন হয়, কারণ মহানন্দ দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন ১৮৮৯ সালে, নিঃসন্তান হেমাঙ্গিনীর অনুরোধেই, বিবাহের এক দশক পর তিনিই স্বামীর জন্য পাত্রীর তত্ত্বতালাশ করতে লোক পাঠিয়েছিলেন বলে জানা যায়। বিবাহের পর হেমাঙ্গিনী কাশীবাসী হন। হৃদয়ে পাথর চাপা দিয়ে আপন পথে ফুল বিছিয়ে সে-পথ ছাড়তে হল চিরদিনের মতো। মহানন্দ যদিও হেমাঙ্গিনী-কে ভুলতে পারেননি। মাঝে-মাঝেই কাশী ছুটে যেতেন। দীর্ঘদিন কাটাতেন সেখানে। শেষে কিনা হেমাঙ্গিনী-কেই জোর করতে হত মহানন্দের ঘরে ফেরার জন্য। পেছন-পথে যে তিনি ফুল ছড়িয়ে রেখেছিলেন আগেই। রোজই ছড়ান, নিজ হাতে, বহুদূর থেকে। বারাকপুরের বাটিতে মৃণালিনী একা, জন্ম-উদাসীন লোকটির অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে। এরপর হেমাঙ্গিনীর কী হল, কবে এ-পৃথিবীর ছায়ামায়া ছেড়ে চলে গেলেন চিরতরে, বারাকপুর কিংবা বৈরামপুরে আর ফিরেছেন কি না তা আর জানতে পারি না। নিশ্চয়ই ফিরেছিলেন। শেকড়ের টানে এসেছিলেন হয়তো। ফিরেও গেছেন দ্রুত। গ্রামদেশের পথে-পথে আরও বকুল আরো চাঁপা লাগিয়ে, যাতে তিনি না-থাকলেও ফুল ঝরবে, ঝরতে থাকবে ভালোবাসার পথে-পথে।
বৈরামপুরের কোন বাড়িটা হেমাঙ্গিনীদের ছিল জানি না। জানতে পারিনি। ‘রায় বাহাদুর’-এর দিদি ছিলেন যখন, তখন এত সহজে স্মৃতিটা মুছে যাবার নয়। ভিটেটা আজ যার-ই হোক, অন্তত একটা স্মৃতিফলক থাকা উচিত সেখানে। ইতিহাসকে একটু ছুঁয়ে দেখা, অনুভব করা। অনুভবই তো শ্রেষ্ঠ এ-জীবনে, সে চুম্বনকাব্য হোক আর গ্রন্থদিঘিতে ডুবে যাওয়া। অনুভূতিহীন হয়ে উঠলেই সে-মানুষের মৃত্যু অনিবার্য, মৃত্যুর বহু আগেই।
যাইহোক, তারিণী-তনয় মহানন্দের জীবনে হেমাঙ্গিনী দেবীর এই ত্যাগ ও উদ্যোগ কিন্তু তাঁকে মহান করে তোলে। বিভূতিভূষণের মতো এক মহান কথাসাহিত্যিকের জন্মবৃত্তান্ত লুকিয়ে আছে তাঁর এইসব ত্যাগ ও উদ্যোগ-পর্বের ভিতরই কিন্তু। ভাবলেই তাঁর প্রতি প্রণাম জাগে, শ্রদ্ধা জাগে। কিন্তু তাঁকে কেবলই উপেক্ষার-ইতিহাস দিলাম আমরা, ভেবে কষ্ট পাই ঢের।
বিভাসদা, তমাল, কনক, শুভঙ্করের সঙ্গে এই শরতে বৈরামপুর গিয়েছিলাম, মহাষ্টমীর সকালে, সেখানের রায়-বাড়িতে প্রায় সাড়ে-চারশো বছর পুরোনো দুর্গোৎসব দেখতে। এই রায়েরাই এ-গ্রামের প্রতিষ্ঠাতা বলে জেনেছি। গ্রামের এমন নামের পেছনে একটা চমৎকার কাহিনি প্রচলিত।
সুরেশ্বর পালিত গঙ্গাতীরে ব্যবসা করেন। আদি বাড়ি বর্তমান খুলনা অঞ্চলে। ১৫৩৯ সালে এক ঝড়ের সন্ধ্যায় মাঝি যাত্রী-বোঝাই নৌকো নিয়ে পাড়ে আসেন। আশ্রয় চান সুরেশ্বরের কাছে। এই যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন হুমায়ুনের এক বেগম। তিনি সুরেশ্বর-কে একটি ‘পাঞ্জা’ উপহার দিয়ে বিদায় নেন। এর বেশ পরে হুমায়ুন গৌড়ে এলে সুরেশ্বর সেই পাঞ্জা-সহ হুমায়ুনের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু বিষয়টি সহজ ছিল না। তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বৈরাম খাঁ। হুমায়ুনের সঙ্গে দেখা হয়। হুমায়ুন তাকে স্থানীয় ‘রাজা’ করে দেন, সঙ্গে দেন ‘রায়’ উপাধি, বিরাট এক ভূখণ্ডের জায়গীরও দেন। সুরেশ্বর পালিত স্থানীয় রাজা হলেন। হলেন সুরেশ্বর রায়। তারপর ফিরে গড়ে তোলেন রাজার বাড়ি। সেটা এই বৈরামপুরে। জায়গাটির আগে কী নাম ছিল জানি না। আরও ঘাঁটলে নিশ্চয়ই জানতে পারব হয়তো। যদিও বিভিন্ন দপ্তর ও গ্রন্থাগারে, সরকারি হোক আর বেসরকারি, নথিপত্র কিংবা তার প্রতিলিপি দেখতে চাইলে বড়ই বিড়ম্বনায় পড়ে যাই। মনে হয় এর চেয়ে চোরাচালান করা অনেক সহজ, অন্তত আমাদের মতো সীমান্তবাসীদের কাছে। অতীতের গুরুত্ব বুঝতে চায় না বহু মানুষ। পিতা সম্পর্কে না-জানলে পুত্র তার ভবিষ্যৎ-পরিকল্পনা করবে কীভাবে? পিতা-মাতার যাপন-ইতিহাসের ভিতরই তো সন্তানদের সকল সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে।
বৈরামপুরের এই ইতিহাসকথা (নামকরণের ইতিহাস) ইতিহাস কি না জানা নেই। নির্মলকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘ইতিহাসের বনগ্রাম’ থেকে জেনেছি এ-কাহিনি, কিংবা কাহিনির আড়ালে পরম সত্য। তবে ‘বৈরাম খাঁ’-র সঙ্গে এই গ্রামের কোনও-না-কোনও সম্পর্ক তো আছেই।
ll ৪ ll
বিভাসদা-তমালদের সঙ্গে গত শরতে ঘুরে-ঘুরে দেখেছি পুরোনো বাড়ির ধ্বংসচিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এখানে-সেখানে। দেখেছি প্রকাণ্ড ‘পদ্মবিল’, যা এখন টুকরো টুকরো হয়ে ভেড়ি-সভ্যতার পেটে চলে যাচ্ছে। মুছে যাচ্ছে প্রকৃতির স্বাধীন জলবৈচিত্র। ভেড়ি মানেই অর্থ। অর্থ মানেই পেছনে ‘পাওয়ার’। এদের সঙ্গে লড়া মুশকিল। বড়ই অসম এ-লড়াই। অথচ বিল মুছে গেলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবেই। মশার কারখানা হয়ে উঠবে সেখানে। হবে মৃত্যুর কারখানা! কলকাতার নিম্নভূমি বুজিয়ে খুব কি লাভ হয়েছে আদৌ?
এই বিলের ভিতর দিয়ে দুটি খাল বয়ে যেত এককালে——-যার একটি মিশত যমুনাতে, আর-একটি মিশত ইছামতীতে। আজ কই তারা? খালের মৃত্যু নদীর মৃত্যু কিন্তু শেষমেশ এই সর্বভুক দো-পেয়ে মানুষের পৃথিবী থেকে মুছে যাবার ইঙ্গিত বহন করে।
বনগ্রাম শহর থেকে বনগ্রাম-চাকদহ রোড ধরে বারো-তেরো কিলোমিটার এগিয়ে গেলে বর্ধনবেড়িয়ার মোড় পড়ে। সেখান থেকে বাঁদিকে আরও তিন কিলোমিটার। একদা নদীয়ার বর্ধিষ্ণু গ্রাম ববৈরামপুর এখন উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি অবহেলিত জনপদ। আঞ্চলিক ইতিহাস-ভাবুক বিভাসদা ঘুরে-ঘুরে দেখাচ্ছিলেন ইতিহাসের পদচিহ্ন। বিলের মাঝে হঠাৎ হাঁটুগেড়ে বসতে বললেন আমায়। বসলাম। বললেন, উপরে তাকাও! তাকালাম। উপরে তখন এক-টুকরো স্বর্গ! মেঘ আর রোদের অলঙ্কার পৃথিবীর মুকুটে অহংকার হয়ে বিলের মাথা জুড়ে প্রকাণ্ড আকাশের চুড়োয় হীরক-পর্বতের মতো চমকায়! আহ্, প্রাণ ভরে গেল আমাদের!
পদ্মবিলে বিষ স্প্রে করে পদ্ম মেরে-ফেলা মানুষগুলো জানে না তারা মারছে নিজেদেরকেই। তবু কিছু পদ্ম আছে হেথা-হোথা। জল আটকে শালুকের চাষ হয়েছে কোথাও। চাষ হয়েছে পানিফলের, মাছের। কোথাও বিলের পিঠে মাটির কুঁজ বানিয়ে চলছে স্বামী-স্ত্রীর ধাননাড়া। ওরাই এখন বিকিয়ে যাওয়া নব্বই বিঘে বিল-অংশের ‘কেয়ার-টেকার’। বাকিটা এখনও ভেড়ি-সংস্কৃতির খপ্পরে পড়েনি। বিলের ওপাশে বৃদ্ধপাল্লা গ্রাম। তারও ইতিহাস আছে ঢের। বৈরামপুর ও বৃদ্ধপাল্লার শ্রীকৃষ্ণ মন্দির নিয়ে অলৌকিক কাহিনি আছে। আছে কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কথাও। পৃথিবীর মনোরম ইতিহাস-সব। বলব কখনও।
বিভূতিভূষণ দিয়ে শুরু করেছিলাম লেখাটা। তাঁকে দিয়েই শেষ করি। বিভূতিভূষণের দ্বিতীয় বিবাহ হয় রমাদেবীর ( কল্যাণী ) সঙ্গে ১৯৪০ সালে। বনগ্রাম শহরে। এইসময় তাঁর লিচুতলা ক্লাবের বন্ধুরা পল্লীবার্তা প্রেস থেকে একটা লিফলেট ছাপিয়ে সবাইকে বিতরণ করেন। তাতে লিচুতলা ক্লাবের প্রধান মন্মথ চট্টোপাধ্যায়ের ছড়া ছিল। বিভূতিভূষণের জীবনে এই লিচুতলা ক্লাবের প্রভাব ছিল ব্যাপক। আধুনিক বনগ্রাম এই লিচুতলা ক্লাব সম্পর্কে বড়ই উদাসীন। যাইহোক, এই লিফলেটটি ছাপানো হয়েছিল পল্লিবার্তা প্রেস থেকে, যে প্রেসটা বৈরামপুর-রায়বাড়ির উত্তরপুরুষদের, বনগ্রামের প্রথম প্রেস।
এই প্রেসের কাহিনি, লিচুতলার কাহিনি, বিভূতিভূষণের দ্বিতীয় বিবাহ নিয়ে ফের হাজির হব কখনও।