শাহিনা খাতুন : টাকা-পয়সা, জমি-জমা, বিভিন্ন প্রকার বস্তুর প্রতি মানুষের আসক্তি আজন্মকাল। শিশুকাল থেকে কৈশোরে, যৌবন থেকে প্রৌঢ়ে, প্রৌঢ় থেকে বৃদ্ধকালে মানুষ প্রচণ্ড বেগে ছুটে বেড়ায় সঞ্চয় করে এসব যোগাড় করার জন্য। টাকা পয়সা উপার্জন করে ব্যাংক ব্যালেন্স তৈরী করে। জমি কেনে, ফ্ল্যাট কেনে নিশ্চিন্তে বাস করার জন্য।
ব্যবহার্য জিনিসপত্র কেনে এক ধরনের পরিতৃপ্তির আশায়। সারাজীবন যে যতটুকু সামর্থ্য রাখে সে ততটুকু বস্তু সংগ্রহ করে। এসব করে করে মানুষ তার জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করে ফেলে। ধীরে ধীরে অর্থ উপার্জন, জিনিসপত্র ক্রয় করা,, জমি /ফ্ল্যাট কেনা মানুষের নেশায় পরিনত হয়।
যখন অনেক অর্থ অনেক জমি জমা, অনেক জিনিস পত্র হাতে চলে আসে তখন মানুষের ভিতর তার অজান্তে এক ধরনের অহংকার জন্ম নেয়।
আমার এত এত টাকা আছে
আমার এত এত জমি আছে
আমার এই এই জিনিস আছে
খেয়াল করে দেখবেন সবগুলো ভাবনার মধ্যে আছে “আমার” শব্দ। এই আমার শব্দটার অনুভূতি মানুষকে নিম্নগামী করে। মূলতঃ আমার বলতে কিছু নেই। এ শব্দটা বলার ক্ষমতা রাখেন কেবল আল্লাহপাক। তিনি বলতে পারেন কারন সব তাঁর সৃষ্টি। তিনি আদি, তিনি মধ্য, তিনিই অন্ত। আর কেউ বললে তা হয় প্রগলভতা। কারন যে বলবে যে এটা আমার সে যে কোন সময় বিদায় নিয়ে চলে যাবে। তখন বস্তুটি টাকা পয়সা সব অন্য একজনের দখলে চলে যাবে।
লালন সাঁইজী বলেন
“গেল দিন ছাড়ো বিষয় বাসনা
মাওলা বলে ডাকরে সোনা”
লোকনাথ ব্রম্মচারী বলেন
দেখ- অর্থ উপার্জন করা, তা রক্ষা করা, আর তা ব্যয় করবার সময় বিষয় দুঃখ ভোগ করতে হয়। অর্থ সকল অবস্থাতেই মানুষকে কষ্ট দেয়। অর্থ ব্যয় হলে বা চুরি হলে তার জন্য চিন্তা করে কোন লাভই হয় না।
শাহিনা খাতুন
২৭/৪/২০২০