জাহিদ আলী, বড়াইগ্রাম, নাটোরকন্ঠ:
“বুড়া মায়েকে খাতি দিলে ছেলিদের ফুরায়ে যাবি বাবা, ওরা ভালো থাকুক”-এমনই আর্তি জানালেন ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা গড়মাটি গ্রামের মৃত হাজিরউদ্দিন প্রামাণিক এর স্ত্রী বুন্জনী। ছয় ছেলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্বেও দু’মুঠো খাবার জোটে না ৯০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা মায়ের। অথচ এই বৃদ্ধা মা’ই বড় আদরে লালন-পালন করেছে তাদের। আজ সেই মা ঘুরাচ্ছে বেড়ায় পথে-প্রান্তরে।
এমনটা ঘটনা ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি বাজারস্থ গড়মাটি গ্রামে। ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা হলেন গড়মাটি গ্রামের মৃত হাজিরউদ্দিন প্রামাণিক এর স্ত্রী বুন্জনী। মাকে দু’মুঠো খেতে দিলে নাকি খাবার ফুরিয়ে যাবে ছেলেদের। তাই আজ বাড়ি থেকে বের করে দিল মাকে। ছেলেরা শিক্ষিত প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের এমনটা ধারণা কোথা থেকে তা কারো বোধগম্য নয়।
এই আজব প্রকৃতি ছেলেরা হলেন, গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মতিউর রহমান, আতিউর রহমান, লুৎফর রহমান, মোশাররফ হোসেন মসুর, রফিকুল ও শফিকুল। বর্তমানে মা বুন্জনী লুৎফর রহমানের বাড়িতে ছিল কিন্তু বউয়ের প্ররোচনায় লুৎফর রহমান মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এবং বলে তোমার আরো অন্য ছেলেরা আছে তাদের বাড়িতে গিয়ে থাকতে পারো। আমি আর তোমাকে খেতে দিতে পারব না। এই বলে লুৎফর রহমান একই গ্রামের দফাদার ইয়াসিন আলীর বাড়িতে রেখে আসে মাকে। পরে দফাদার ইয়াসিন আলী গ্রামপ্রধান বাবুল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় সেই বৃদ্ধা মাকে।
পরে এ ব্যাপারে গ্রামপ্রধান বাবুল ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গ্রামের সকল জনগণ মিলে এই বৃদ্ধ মাকে ছেলের বাড়িতে একমাস করে থাকা খাওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দেই। কিন্তু ছেলেদের কথা অনুযায়ী কাজ ভিন্ন। তারা এই একমাস ই মাকে খেতে দিতে চায় না দেয় বিভিন্ন ধরনের অপবাদ। আমরা এই ছেলেটার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করি। যেন এই বৃদ্ধা মায়ের মত আর অন্য কোন মায়ের এই দিন না দেখতে হয়।
পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ কে জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ কে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান।