‘ব্যবসায়ীরা কী মানবিক হবেনা?’,- কামরুল হাসান কামু
সারাবিশ্ব আজ মহামারিতে আক্রান্ত।স্থবির হয়েছে অর্থনীতির চাকা।অর্থনীতিতে শক্তিধর দেশগুলো যেখানে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমাদের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে কে জানে!বড় শহর গুলো ধীরে ধীরে ফাঁকা হচ্ছে,নিম্নবিত্তের মানুষ গুলো হা হুতাশ করছে।
উদাস দুপুরের রিক্সায় গা এলিয়ে দেওয়া শীর্ণ মানুষটির কথা কে ভাববে?সে জানেনা মর্মান্তিক করোনা ভাইরাসের লীলা,সে জানে বাসায় অপেক্ষা করছে কতোগুলো চোখ।এনজি’র কাছে ঋণ নেওয়া সেই মানুষ গুলোর কথা কে ভাববে?কে ভাববে গার্মেন্টসের সেলাই দিদিমণিদের কথা?করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পোশাক রপ্তানিতে ভাটা পড়বেই কারণ এদেশের পোশাকের সবচেয়ে বেশি ক্রেতা ইউরোপ যারা আজ ভয়াবহ মহামারিতে আক্রান্ত।শীঘ্রই বন্ধ হতে পারে গার্মেন্টস গুলো।
এর মাঝে লকডাউন এর আভাষ পাওয়া যাচ্ছে।জনবিচ্ছিন্ন হতে পারে পুরো দেশ।একবিংশ শতকের এই মহারুদ্র সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা কি মানবিক হতে পারিনা?ইতোমধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে স্থানীয় বাজারে।নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের মানুষ গুলো এমনিই হা হুতাশ করে তার ওপর এমন এক পরিস্থিতিতে যদি ব্যবসায়ীরা সুযোগ গ্রহণ করে তবে এদের চেয়ে অমানবিক আর কে! এদেশের মানুষ নাকি খুব ধর্মপ্রাণ।
আহা ধর্মের কথা কি শুধু মুখে মুখে?পবিত্র ধর্ম ইসলামের বার্তা কি তারা শুনে নাই?রাসূলুল্লাহ (সা.) সৎ ব্যবসায়ীদের শহীদি মর্যাদায় ভূষিত করে ঘোষণা করেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন ত্যাগ স্বীকার করে সওয়াব প্রাপ্তির আশায় মুসলিম জনপদে কোনো প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করেন এবং ন্যায্য মূল্যে তা বিক্রয় করেন তখন আল্লাহর কাছে তিনি শহীদের মর্যাদা লাভ করেন।’ এইদেশের ব্যবসায়ীরা কবে যে মানবিক হবে কে জানে! এ
ঘৃণ্য ব্যবসায়ীদের প্রতি এইটুকুই বলা চলে,করোনা ভাইরাস চিনেনা-কে গরীব,কে ধনী,কে ব্যবসায়ী,কে চাকুরীজীবী।আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।তৃতীয় বিশ্বের এই ছোট দেশের অনেক সমস্যা থাকবে তবু আমরা যদি একটু মানবিক হই,এই জনপদ সজীব থাকবে বসন্তের পল্লবিত বৃক্ষের মতো।
–লেখক
কৃষিবিদ কামরুল হাসান কামু