সংগোপনে
কবি বনশ্রী বড়ুয়া
একদিন ঠিক মিলিয়ে যাব,
একদিন ঠিক রং হারাবো,
তুমি আমায় খুঁজবে কারণে অকারণে….
আমি ভাসবো মেঘের সাথে,
লুকোচুরি খেলবো রংধনুর সাথে,
ঝরে পড়বো তোমার গায়ে বৃ
ষ্টি হয়ে অঝোর ধারায়।
তুমি তখন দূরছাই করে
নীল ছাতাটা মাথায় দিয়ে
খুঁজতে বেরুবে আমায়।
হায় ঈশ্বর!! কি বোকা তুমি!!
শার্টের বোতাম ছেঁড়ায় রবে,
সুঁই – সুতা পড়েই রবে,
খাবার টেবিল এলোমেলো,
রিমোটটাও মেঝের পরে,
তুমি তখন চিৎকার,চেঁচামেচি,
থালা – বাটি ভাঙবে হয়ত!
আমি তখন চুপটি করে
মিষ্টি কোন হাওয়া হয়ে
তোমার গালে হাত বুলাবো।
রাগের মাথায় হঠাৎ করে
জানালা গুলো আটকে দেবে,
আমি তখন হেসেই যাব
তোমার অমন মেজাজ দেখে।
একদিন ঠিক চলেই যাব,
ওই আকাশের তারা হবো,
সন্ধ্যে হলেই উঁকি দেব
তোমার আকাশ জুড়ে,
তুমি তখন ভাববে হয়ত
প্রথম চুমুর কথা…..!
নিজে নিজেই হেসে যাবে,
খানিক পরে মনে খারাপে
চোখ ভাসাবে,,
ভাববে হয়ত আমি কেন
পালিয়ে গেলাম তোমায় ছেড়ে?
এমন বোকা আর দেখিনি,
একটু দেখো রাতের আকাশ..
আমি কেমন তাকিয়ে আছি মুগ্ধ হয়ে;
উষ্কখুষ্ক চুলগুলো,খুসকি হবে মাথা জুড়ে,
হঠাৎ করেই সাদা চুলের আনাগোনা
বয়স তোমার বেড়েই যাবে…..
তখন আমি সবুজ হবো,
ঘাসের ডগায় শিশির হবো,
সকাল হলেই শিশিরজলে পা ভেজাবে।
তখন তোমায় চুপিচুপি
জড়িয়ে নেবো বুকের পরে…আলতো করে।
একদিন ঠিক ঠিকানা হারাবো,
ফিরবো না আর ভোর বিছানায়…
ভোর বিছানা বাসিই রবে,
তুমি হয়ত দৌড়ে যাবে,
আলসেমি সব ভুলে গিয়ে
স্নানঘরের দরজা পানে,
আমি তখন হেসেই যাব,
তোমার অমন অদ্ভুতুড়ে মুখটি দেখে।
চলে যাওয়া সেই আমিটা
দাঁড়িয়ে রবো সম্মুখ পানে।
ফাগুন এলেই তুমি যখন
কিনবে গাঁদাফুলের মালা,
খুঁজবে আমার খোঁপা!
আমি তখন তোমার হাতের ফাগুন হবো,
এক পলকে তাকিয়ে রবো তোমার দিকে,
হঠাৎ জমা এক ফোঁটা জল,
পড়ার আগেই আমি তোমার
বুক গহীনে আটকে রবো।
আমি তোমায় একলা করে চলেই যাব…
তবু আমি তোমার মাঝেই ডুবে রবো।