সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার ও কবিতায় একুশে পদক! রাষ্ট্রের এ কেমন ইয়ার্কি !!-স্বকৃত নোমান
ঘোষিত হলো স্বাধীনতা পুরস্কার। সাহিত্যে এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ। আমি প্রায় বাইশ বছর ধরে সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত। চৌদ্দ বছর ধরে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। সাংবাদিকতার সুবাদেও বাংলা সাহিত্যের খোঁজ-খবর রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কখনো রইজ উদ্দিন আহম্মদের নাম শুনিনি। তিনি কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছড়াকার নাট্যকার? কিছুই জানি না। নেটে সার্চ দিয়ে দেখলাম। একটি লিংকে পেলাম তিনি অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব। আরেকটি লিংকে পেলাম খুলনা বিভাগের সাবেক উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার হিসেবে এই নাম। রকমারি.কম-এ সার্চ দিয়ে দেখলাম তার কোনো বই আছে কিনা। নেই। কে এই রইজ উদ্দিন আহম্মদ? আমি তাকে চিনি না, এটা কি আমার মূর্খতা? মনে হয় না। এদেশের কবি-সাহিত্যিকদের কেউ রইজ উদ্দিন আহম্মদের নাম ইতোপূর্বে শুনেছেন কিনা আমার সংশয়।
এর আগে এ বছর ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক দেওয়া হয়েছে ড. নুরুন নবী ও নাজমুন নেসা পিয়ারিকে। জনাব নুরুন নবী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক, গবেষক। তাঁকে গবেষণা বা মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা যেত। ভাষা ও সাহিত্যে দিয়েছে, তবু মানা গেল। কিন্তু নাজমুন নেসা পিয়ারিকে কেন কবিতায় একুশে পদক দেওয়া হলো? কবিতায় তাঁর কী অবদান?
একজন সাহিত্যকর্মী হিসেবে আমি মনে করছি, এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদকে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার এবং নাজমুন নেসা পিয়ারিকে একুশে পদক দিয়ে বাংলাদেশের সাহিত্য-সমাজকে অপমানিত করল রাষ্ট্র। এটা রীতিমতো ইয়ার্কি। স্বাধীনতা পুরস্কার যেন-তেন ব্যাপার নয়। এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার। কারা এই পুরস্কারকে এভাবে খাটো করছে? রাষ্ট্রের এই ইয়ার্কি এবং সরকারের ভেতরে থাকা দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে সাহিত্য-সমাজের প্রতিবাদ করা উচিত বলে মনে করি। নইলে এই অপকর্ম থামবে না।
মহাকালে রেখাপাত
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০