আজ ২১ ডিসেম্বর নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস

0
112
নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস

নাটোর কন্ঠ : ২১ ডিসেম্বর ১৯৭১ নাটোর হানাদার মুক্ত দিবস। সাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে ১৬ ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও নাটোর কেন ২১ ডিসেম্বর মুক্ত হলো? এর কারণ হল নাটোর ছিলো পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ২য় সামরিক হেডকোয়াটার।

সেই কারনে নাটোরের মানুষ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের স্বাদ পায় বিজয়ের চারদিন পর। মুক্তিযুদ্ধে নাটোরে বড় ধরনের কোন লড়াই না হলেও একাধিক স্থানে হানাদার বাহিনী চালায় গণহত্যা। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানি সেনা ও

তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসাম্স বাহিনী বর্তমান নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী, পতেঙ্গাপাড়া, মোহনপুর, লালবাজার, কাপুড়িয়াপট্টি,শুকলপট্টি, মল্লিকহাটি, চৌকিরপাড় বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক মিশন, আহম্মেদপুর,

গুরুদাসপুরের নাড়িবাড়ি, সিংড়ার হাতিয়ান্দহ, কলম এবং লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস্ চত্বরে গণহত্যা চালায়। ৭১’র ৪ জুন নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী গ্রামের গণহত্যা ছিল বাংলাদের ইতিহাসে নৃশংস ও হৃদয়বিদারক ঘটনা।

১৬ ডিসেম্বর সারাদেশে পাকিস্তানী সেনাদের আত্নসমর্পণের মাধ্যমে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও নাটোরে এর চারদিন পর ২১ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নাটোর ছিল ৭ নং সেক্টরের অধীন। আর পাকিস্থানী সেনাদের ২ নং সামরিক হেডকোয়াটার।

তৎকালীন সিও অফিসে( বর্তমানে ইউএনও অফিস) পাকসেনাদের ২নং সামরিক হেডকোয়াটার স্থাপন করা হয়। ফলে ১৬ ডিসেম্বর থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে পাকিস্তানি পরাজিত সেনারা নাটোরে এসে জড়ো হতে থাকে। নাটোর পিটিআই স্কুল, আনসার হল, রিক্রিয়েশান ক্লাব,

এনএস কলেজ, নাটোর রাজবাড়ি, দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরগুলোতে আশ্রয় নেয়া পাকিস্তানি সেনারা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্নসমর্পণ করলেও দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি চত্বরে আত্নসমর্পণের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয় ২০ ডিসেম্বর গভীর রাতে। ফলে নাটোর পুরোপুরি শত্রুমুক্ত হয় ২১ ডিসেম্বর ১৯৭১।

আত্নসমর্পণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার নওয়াব আহমেদ আশরাফ মিত্র বাহিনীর ১৬৫ মাউন্টেন বেটিলিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার রঘুবীর সিং পান্নুর কাছে আনুষ্ঠনিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করে।

ঐ দিন পাকিস্থানী বাহিনীর ১৫১ জন অফিসার, ১৯৮ জন জেসিও, ৫৫০০ জন সৈনিক, ১৮৫৬ জন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য, ৯ টি ট্যাংক, ২৫ টি কামান ও ১০ হাজার ৭৭৩ টি ছোট অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করে।

উল্লেখ্য, নাটোর মুক্তিযুদ্ধে ৭ নং সেক্টর আওতাধীন থাকলেও আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল কাজী নূরুজ্জামান ও সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর গিয়াস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন না।

তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনাঃ–
রফিকুল ইসলাম নান্টু
যুগ্ম আহ্বায়ক
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, নাটোর জেলা ইউনিট।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার : দুই শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে ১ পৌরসভা ও ২ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ চলছে 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে