আমার ঈর্ষা বোধ
কবি গোলাম কবির
ছেলেবেলায় আমার ক্লাসের সবচেয়ে
কম মেধাবী যে বন্ধুটি আজ
একজন বড়ো সরকারি কর্মকর্তা হয়ে
ভীষণ প্রতাপে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে
সারা দেশে ওকে নিয়ে আমার
কোনো ঈর্ষা বোধ কাজ করেনা।
আমার সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে
ফেল করা যে বন্ধুটি পরবর্তীতে
ভুয়া সার্টিফিকেট জোগাড় করে
এখন একজন মস্ত ব্যবসায়ী হয়ে
আজ চায়না তো কাল জাপান কিংবা
কয়েকদিন পরেই আবার ব্যবসায়
প্রয়োজনে সবুজ পাসপোর্ট হাতে নিয়ে
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছে,
ওর সাফল্য নিয়েও আমার কোনো
ঈর্ষা বোধ হয়না।
তারপর এই যেমন –
আমার সঙ্গে একই কলেজে পড়া
যে বন্ধুটি আজ একজন প্রতিষ্ঠিত
রাজনৈতিক নেতা হয়ে কী সুন্দর
বিশাল সম্পদের মালিক বনে গেছে
তাকে নিয়েও আমার কোনোই ঈর্ষা বোধ
হয়না কিংবা বলতে পারো এটা নিয়ে
আমার কোনো মাথা ব্যথাই নেই!
কিন্তু বিশ্বাস করো, যখন কোনো
একটা দুষ্টু রঙিন প্রজাপতি এসে
তোমার জামায় কিংবা ওড়নায় অকষ্মাৎ
বসে পড়ে আমার তখন ভীষণ ঈর্ষা হয়।
তারপর – যখন তুমি মনে করো হাঁটছো,
তখন হঠাৎ করে বৃষ্টি এসে তোমার চুল,
কপাল, তোমার গন্ডদ্বয়, তোমার ঠোঁট
ভিজিয়ে দেয়, তখন বৃষ্টির ঐ ফোঁটা
গুলোর ওপর আমার ঈর্ষা হয় খুব!
যখন তুমি ত্রয়োদশী চাঁদের আলোয়
উঠোনে দাঁড়িয়ে অপলকে চাঁদের দিকে
তাকিয়ে থাকো আর জ্যোৎস্নারাতের
আলোয় তুমি ভিজে যাচ্ছো খুব
এবং তা সানন্দেই উপভোগ করছো,
তখন আমার খুব ঈর্ষা জাগে মনে!
মনেহয় আমি কেনো যে
ঐ প্রজাপতি, বৃষ্টির ফোঁটা
কিংবা ত্রয়োদশী চাঁদের আলো হলাম না!
এছাড়া আমার আর কোনো কিছুর ওপরই
কখনো কোনো ঈর্ষা বোধ হয়নি, হয়না!