উড়ন্ত চঞ্চল কিশোরী
কবি নীলিমা শামীম
শীতল নামের কিশোরীটির সখের ছিল বায়না
চটি বেঁধে ঘুরবে গ্রাম, গলায় ঝুঁলিয়ে আয়না
কাজল কালো আঁখির পাপড়ি এঁকে মনের মতো
ভ্রু যুগল ঢেউ খেলাবে নাচিয়ে গ্রাম মাতাবে যতো।
সেই মেয়েটির কাঁধে চাপালো সংসারের দ্বায় দ্বায়িত্ব
সকাল বিকাল কিভাবে যায় বুঝার উপায় নেইকো
সপ্তাহ তার স্বপ্ন বুনে, শেষের রয়না খোঁজ খবর
মাস কবে যে হলো শুরু, বছর ফুরোয় তার যাযাবর।
একুল ছেড়ে ওকুল ঘরে এটাই বকুলে কাজকর্ম
স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দেবর,জা,কন্যা পুত্র চলে ধর্ম
অফিস, বাড়ি,হাট, বাজার, স্কুল কলেজ সীমাহীন
সবার খবর রাখার জন্য নিজের উপর হয় অত্যাচার।
উড়তে চাওয়া সেই মেয়েটা বন্দী রাখার কারসাজি
হঠাৎ আসা বাজপাখিটার মিষ্টি লাগা তার সাজি
রুপের রানী হয়েও বকুল হাড়ি নিয়ে রয় সারাবেলা
স্বামীর হুকুম মাথা পেতে শ্রবণ করে সে একেলা।
ভোরের সূর্য, রাতের চাঁদ দেখার হয়না সময় তার
চুলো থেকে টেবিল পর্যন্ত বিস্তৃত রয় কাজকারবার।
হাড়ি বাসন কাপড় চোপড় ধৌত-ইস্ত্রি সব করে
পান থেকে চুন খসলে চুলের মুঠি ধরে সকলে মারে।
রুপে গুনে সবই আছে, নেইকো মনে কোনো শান্তি
স্বামী রুপে পাষন্ডটার হওয়া দরকার ভীষণ শাস্তি।
রুপসী বউ ঘরে রেখে যায় সে রোজ পতিতা পাড়াতে
রাজপ্রাসাদে বেশ্যা রেখে, বউকে রাখে ঘরভাড়াতে।