বেনজির শিকদার,নিউইয়র্ক,নাটোর কণ্ঠ:
দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ‘সাহিত্য একাডেমি’র বন্ধুদের আয়োজনে আমাদের প্রাণোচ্ছাস পুনর্মিলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ আগস্ট শুক্রবার কুইন্সের এস্টোরিয়া পার্কে করোনাকালীন এ আয়োজন ছিল যেন প্রাণের মিলন।
মনের ভেতর মনই ভ্রমণকারী! সত্তায় সাহসের সংকট, তবুও বেশ ক’মাস যাবৎ আমরা মরুচারী পাখির মতো তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পুষ্টিময় আলোর অপেক্ষায়।
যতই ঘিরে থাকুক দীর্ঘশ্বাসের রাত্রি কিবা দিন; বুকের ভেতর নিভৃতে বয়ে চলা প্রিয় নদীটি পোড়ে অহর্নিশ। স্নেহ-মায়া-প্রীতি-বন্ধনের পিছুটান আর বিগত ভালোবাসার মতো প্রিয়মুখের প্রিয়জনদের প্রতি আকর্ষণ আহ্নিক দগ্ধ করে চলে।
তাই তো হেতু স্বরূপ ‘সাহিত্য একাডেমি’র বন্ধুদের আয়োজনে ২৮ আগস্ট শুক্রবার কুইন্সের এস্টোরিয়া পার্কে করোনাকালীন এই মৌনব্রতের মাঝে কিছুটা হলেও নান্দনিক উন্মোচন আর ভালোলাগার অন্বেষণে অরুণোদয়ের ন্যায় মিলেছিলাম সবাই।
ছায়াঘেরা সবুজ বীথিকায় ফেলে আসা জন্মভূমির বকুলতলার মতো সারিবদ্ধ গোলাকৃতি হয়ে সাথী প্রাণপাখির কলরবে গুণীজনদের মুখনিঃসৃত দিগন্তবিস্তৃত স্মৃতিচারণায় শুনছিলাম— নিউইয়র্ক শহর আলো করে থাকা কবিতার বরপুত্র কবি শহীদ কাদরীর কথা। বন্দনামুখর পরিবেশে যেন বিহবল যেন আপ্লুত নিমগ্নতায় প্রত্যেকের অন্তরাত্মায়ই ছড়াচ্ছিল মন হরণকারী ভালোলাগানিয়া লোবান।
সময়; সে তো বহতা নদী!
বেলা ফুরোয়। মন না চাইলেও চারিদিক হতে ঘনিয়ে আসা অন্ধকার আর ঘড়ির কাঁটার অন্তর্গত বাস্তবতায়— অদূরে প্রবাহিত নদীর স্বচ্ছ জল, তরুবেষ্টিত পথরেখা এমনকি সবুজাভ মায়াকানন জানান দেয় সন্ধ্যা নামলো বলে, ঘরে ফিরতে হবে।
নীরব হৃদ্স্পন্দনে বিদায়ী চুম্বন এঁকে ঘরারণ্যের দিকে পা বাড়াই।
মনের ঘরে বান ডেকে শব্দহীন আওড়াই…
সুকোমল শুশ্রূষায় খুব শ্রীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে পৃথিবী, বিপুল প্রাণাবেগে ভেসে যাবো, এভাবেই আবার মিলবো সবাই প্রতিমাসের শেষ শুক্রবার প্রিয় প্রাঙ্গন ‘সাহিত্য একাডেমি, নিউইয়র্ক’র উঠোনে।
আগামী পৃথিবী হোক কবিতার মতোই অনুপম…