নাটোরের চলনবিলে তরমুজের ভালো দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে

0
345

গুরুদাসপুরে তরমুজসহ সাথী ফসলে কৃষকের সফলতা

মিজানুর রহমান ,গুরুদাসপুর , নাটোর কণ্ঠ:
নাটোরের গুরুদাসপুরে বিনাচাষে রসুন আবাদের পর সাথী ফসল বাঙ্গি,তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়া চাষে সফলতা পেয়েছে স্থানীয় কৃষকরা। এবছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও হয়েছে বাম্পার। এই এলাকার সাথী ফসল আকারের যেমন বড় তেমন মিষ্টি ও সুস্বাসু হওয়ায় বাজারে এর কদরও প্রচুর। কৃষকরা এবছর দাম পাচ্ছে বেশি।

নাটোর চলনবিল তরমুজ চাষী এনামুল হক, এবছর তার পাঁচ বিঘা জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। তরমুজের দাম ভালো পাওয়ায় হাসি ফুটেছে তার মুখে। শুধু এনামুল হক নয় চলন বিলের সকল তরমুজ চাষী দাম ভালো পাচ্ছেন। তবে তাদের দাবি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন খারাপ হয়েছে। তরমুজের ভালো দাম পেয় কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের মুখ ভার। বেশি দামে মাঠ থেকে তরমুজ এরইমধ্যে কিনে ফেলেছেন তারা। কিন্তু আরতে অভিযানের ফলে দাম কমিয়ে দিয়েছে। তাই দু চোখে অন্ধকার দেখছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

প্রকার ভেদে প্রতি ১০০ টি তরমুজ বিক্রি করছেন ১৫ থেকে ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি তরমুজের ওজন ৫ থেকে ৮কেজি পর্যন্ত। এতে প্রতি কেজি তরমুজ কৃষকরা বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে। এবছর একদিকে প্রচন্ড খড়া অপরদিকে রমজান মাস তাই তরমুজের দামের এই ঊর্ধ্বগতি বলছেন তরমুজ ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন মাঠ পর্যায়ে খরচ সহ প্রতি কেজি তরমুজ কিনতে খরচ পড়ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানোয় আরতে নিয়ে গিয়ে তাদের কম দামে তরমুজ বিক্রি করতে হচ্ছে ফলে লস হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

কৃষকরা তরমুজের ফলন কম হয়েছে বললও কৃষি বিভাগের দাবি তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে দামও পাচ্ছে ভালো। এবছর জেলায় তরমুজ ও বাঙ্গীর আবাদ হয়েছে প্রায় ১৫শ হেক্টর জমিতে , তারমধ্যে গুরুদাসপুরের চলনবিলে ১৩শ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন নাটোরের তরমুজ লেট ভ্যারাইটি। নাটোরের তরমুজ বাজারে উঠেছে রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। আর সে সময় বাজারে দাম ভালো পেয়েছেন কৃষকরা।

হশষ্য ভান্ডার খ্যাত নাটোরের গুরুদাসপুরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া হাটিকুমরুল মহাসড়কের দুই পাশ্বসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা জুড়ে এবার প্রায় ১৩শ হেক্টর জমিতে সাথী ফসলের আবাদ হয়েছে।সবুজ বিস্তীর্ণ জমির চারদিক তাকালে দেখা যাবে বাঙ্গি,তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার ফুল ও ফল।

ফসল রক্ষায় জমি পরিচর্যার পাশাপাশি সবুজর পাতার আড়ালে ধরে থাকা উপযুক্ত বাঙ্গি,তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়া বাজারজাতকরণে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকরা জানান,রসুন চাষের পর রসুন গাছ একটুকু বড় হওয়ার পরপরই গাছের ফঁাকে ফঁাকে বাঙ্গি,তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ  লাগাতে হয়।এবছর বাঙ্গি ও তরমুজের ফলন ভাল হয়েছে। তাতে রসুনের চাষের খরচ উঠেও লাভ হবে।

কৃষকরা জানান,গতবছর বিঘা প্রতি ৪০হাজার থেকে ৫০হাজার টাকা বিক্রি করলেও এবছর ৮০হাজার খেকে ৯০হাজার টাকা পযন্র্Í বিক্রি করছি। আল্লাহর রহমতে এবছর বাঙ্গি ও তরমুজ আবাদ ভাল হয়েছে। আমরা অনেক লাভবান হয়েছি। আগামী বছরও হবে এমনটাই আশা করি।

শ্রমিকরা জানান,সকাল ৭টায় এসে বিকাল ৪টায় কাজ শেষ করি। প্রতিদিন কাজ শেষে ৪০০টাকা থেকে ৫০০টাকায় পাই। তাতেই আমাদের সংসার ভাল ভাবে চলে।

বেপারিগণ জানান,এই ফসলের সুনাম থাকায় প্রতিবছরই আসি। কিন্তÍু এবছর লকডাউন ও গাড়ি ভাড়া বেশি হওয়ায় আমাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। আবার কেহ কেহ বলেন,এবছর ফলের দাম ও গাড়ি ভাড়া বেশি হওয়ায় এখান থেকে মাল কিনে বাইরে বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না।

এলাকাবাসী জানান,আমাদের এলাকার বাঙ্গি ও তরমুজের গুনগত মান খুবই ভাল। এই কারণে প্রতিবছরই এখানে বাইরে থেকে অনেক বেপারিগণ আসেন। প্রতিদিন ৪০থেকে ৫০টা বাঙ্গি,তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার গাড়ি লোড হয়ে দেশের অন্যত্র যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান,রসুন জমিতে সাথী ফসল হিসেবে ১৩শ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি.তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আমরা আশা করছি এবার ৪৫হাজার মেট্রিক টন ফসল উৎপাদিত হবে। ভাল ফলন হওয়ায় ইতিমধ্যে কৃষক ফসল সংগ্রহ শুরু করেছে। বাজারে দামও ভাল পাচ্ছে।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধবড়াইগ্রামে মাইক্রোবাস – ট্রাক সংর্ঘষে আহত – ৩
পরবর্তী নিবন্ধবাগাতিপাড়ায় দুইটি রাস্তা পাকাকরণ কাজের উদ্বোধন 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে