নাটোরের সিংড়ায় আগুন আতঙ্কে সাজুরিয়াবাসী

0
510
রাশেদুল ইসলাম, নাটোর কন্ঠ:
করোনার সংক্রমণ এড়াতে গ্রামবাসী সরকারের নির্দেশনা মেনে ঘরেই অবস্থান করে। এ সুযোগে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা প্রায় প্রতি রাতে গ্রামের কারও না কারো সম্পদে আগুণ লাগিয়ে ভষ্মিভূত করছে। পুলিশও আগুণ সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করতে পারছে না। বাধ্যহয়ে গ্রামের তরুণরা পালা করে বাড়িঘর ও মাঠের ফসল পাহারা দিচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের সাজুরিয়ার গ্রামে। এ ঘটনায় সিংড়া থানায় মামলা করেছেন এক ভূক্তভোগী।
সিংড়া থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১১ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে হঠাৎ করে গ্রামের মো.বাবুর পানের বরজে আগুণ জ্বলে উঠে। আধা ঘন্টা চেষ্টার পর আগুণ নেভায় গ্রামের লোকজন। কিন্তু কি কারণে কে বা কারা আগুণ লাগালো তা জানতে পারেন না তাঁরা। সবাই ভাবেন এটা হয়তো দুর্ঘটনা। কিন্তু ছয় ঘন্টার ব্যবধানে রাত তিনটার দিকে ওয়াজ উদ্দিনের বরজেও আগুণ লাগে। বরজটির অনেকটায় পুড়ে যায়। এর চারদিন পর ১৫ এপ্রিল মধ্যরাতে গ্রামের আতাহার আলীর বাড়ির খড়ের পালায় দাউ দাউ করে আগুণ জ্বলে উঠে। এ আগুণ নেভানো যায় না। একদিন পর আবারও ১৭ এপ্রিল শুকুর আলীর খড়ের পালায় আগুণ লাগে। পরের দিন (১৮ এপ্রিল) রাতে আবারও গ্রামের ফেরদৌস আলমের হাঁসের খামারে ও এরাল সর্দারের খড়ের পালা আগুণে পুড়ে যায়। গ্রামবাসি চিন্তিত হয়ে পড়েন। সব ঘটনায় ঘটছে রাতে। এর আগে তো এমনটা হয়নি। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় গ্রামের তরুণরা রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত পালা করে প্রতি রাতে লাঠি হাতে বাড়িঘর ও ফসল পাহারা দিবে। শুরু হয় পাহারা। সবাইকে অবাক করে ২১ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটায় আব্দুর রশিদের খড়ের পালা আগুণে পুড়ে যায়। সবাই তখন এশার নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরছিলেন। বিষয়টি যে আগুণ সন্ত্রাস তা বুঝতে আর বাঁকি রইলো না কারও।
বুধবার দুপুরে এই প্রতিনিধি সাজুরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখেন,গ্রামে প্রায় ৩০০ পরিবারের বসবাস। অধিকাংশই পেশায় কৃষক। প্রায় প্রতিটি বাড়ির সামনে রয়েছে গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে রাখা ধানের খড়ের পালা। বাড়ির সাথে লাগুয়া রয়েছে পানের বরজ ও হাঁসমুরগীর খামার। গত কয়েকদিনে আগুণে পুড়া খড়ের পালা,খামার ও পানের বরজের ধ্বংসাবশেষ চোখে পড়ে।
গ্রামের যুবক মনিরুল ইসলাম বলেন,এসব ঘটনায় সিংড়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। পুলিশ এসে তদন্ত করেছেন। কিন্তু কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি। এটা যে সন্ত্রাস সে ব্যাপারে সবাই নিশ্চিত। একজনকে সন্দেহমূলক ধরে পুলিশে দেয়া হয়েছিল। তাকে মুচলেকায় ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর এ আলম জানান,ভূক্তভোগী ফেরদৌস আলমের ভাই রজব আলী বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন। মামলায় আলাল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে জামিনে আছে।
Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে কর্মহীন ৫০০ পরিবারের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা অন্তরের ইফতার সামগ্রী বিতরণ
পরবর্তী নিবন্ধবিরল এক রমজানের অপেক্ষায় ১৮০ কোটি মুসলমান- আবু জাফর সিদ্দিকী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে