নাটোরে টেন্ডার ছাড়া খাল খননের অভিযোগ বিএডিসি‘র বিরুদ্ধে

0
107

নাটোর কন্ঠ : নাটোরের সিংড়া উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের, শৈলমারী বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য, ২ কিলোমিটার খাল খননের মৌখিক অনুমতি দেয় সিংড়া বিএডিসি অফিস। সরকারি এই খাল নিজ খরচে খনন করছেন, সিংড়া পৌরসভার ১১ এবং ১২ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

খনন শেষে বিএডিসি টেন্ডারের মাধ্যমে বিল উত্তোলন করে পরিশোধ করবে কাউন্সিলরদেরকে। খাল খনন করে, খালের মাটি বিক্রি করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিএডিসি সিংড়া জোন অফিস থেকে। বিষয়টি সত্য নয়- বলছেন জন অফিস।

স্থানীয় কৃষক মো. আব্দুল মজিদ তালুকদার, নাটোর কন্ঠকে জানান, “এই বিলের পানি সময় মতন নিষ্কাশন না হওয়ার জন্য, ফসল ফলাতে বিলম্ব হয়। অনেক সময় আমন ধান করা সম্ভব হয় না। খাল খনন হলে সময় মতন পানি বিল থেকে বের হয়ে যাবে।

স্থানীয় কৃষক মো. আব্দুর রাজ্জাক, নাটোর কণ্ঠকে জানান, বন্যার পানি বেরিয়ে যাওয়ার পরে জমিতে প্রচুর পরিমাণ কচুরিপানা থাকে। জমি পরিষ্কার করতে আমাদের অনেক টাকা ব্যয় হয়। খাল খনন করা হলে দ্রুত বিলের পানি বেরিয়ে গেলে, পরিষ্কার খরচ কম হবে। এছাড়া খরা মৌসুমে খালের পানি ব্যবহার করতে পারব।

গ্রামবাসী মো. শফিকুল ইসলাম নাটোর কণ্ঠকে বলেন, “সরকারি খাল সরকারিভাবে খনন করা হবে। এই খনন কেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা করছেন। বিষয়টি সন্দেহজনক। হয়তো ২ লাখ টাকা ব্যয় করে তারা ২০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করার পরিকল্পনা থাকতে পারে।’’

স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ আলী, নাটোর কণ্ঠকে জানান, “খালটি খনন করা হলে আমার মতন কয়েক হাজার কৃষক উপকৃত হবে। আর এই খাল খননের করে মাটি রাখার জায়গা এখানে নেই। তাই মাটি বিক্রি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিএডিসি সিংড়া জোন।’’

স্থানীয় কৃষক খোকন মোল্লা, নাটোর কন্ঠকে বলেন, “টেন্ডার ছাড়াই এই খালটি খনন করা হচ্ছে আর এই খালের খননকৃত মাটি কোটি টাকায় বিক্রি করবে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং যুবলীগের নেতা।’’

সিংড়া পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আবুল কালাম, নাটোর কণ্ঠকে জানান, “বিএডিসি‘র লোকজন সরজমিনে এসে, ম্যাপ দেখে ডিজাইন করে দিয়েছে। বিএডিসি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে আপনারা কাজ করেন।

পাবনা হেড অফিসে টেন্ডার করে, ঠিকাদারের মাধ্যমে বিল প্রদান করা হবে। এখন আপনারা নিজেদের অর্থায়নে খালটি খনন করে নিন। বিল আপনারা পেয়ে যাবেন।’’ এ পর্যন্ত কত টাকা ব্যয় হয়েছে? কত টাকার টেন্ডার হবে? এমন প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

বিএডিসি সিংড়া জোন‘এর সহকারী প্রকৌশলী মো. মানিক রতন, নাটোর কন্ঠকে জানান, “সরকারি নিয়ম মেনেই টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে, সাব-ঠিকাদারী নিয়েছেন, সিংড়া পৌরসভার ১১ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আব্দুল লতিফ।’’

ওয়ার্ক অর্ডারটি দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। তবে মাটি বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, “খালের পাড়ে মাটি রাখার জন্য সরকারি কোনো জমি নেই। অন্যের জমির উপরে মাটি রাখতে দেবে না। বিধায় যে কৃষকের দরকার তারা বিনামুল্যে মাটিগুলো নিয়ে যাবে।’’

এ বিষয়ে বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নাটোর কণ্ঠকে জানান, “টেন্ডার ছাড়া খাল খনন করার কোন সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে তবে সরজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধঅর্থ লোপাটের অভিযোগ ইউএনও’র বিরুদ্ধে
পরবর্তী নিবন্ধব্ল্যাকহোল -কন্ঠযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ‘এর কবিতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে