নাটোর সড়ক বিভাগের কোয়ার্টার সংস্কারের ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের রিপোর্টে তোলপার!

0
563

নাটোর সড়ক বিভাগের কোয়ার্টার সংস্কারের ১৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর রিপোর্ট প্রচারে তোলপার!

নাটোর কণ্ঠ: নাটোরের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন দৈনিক সজাগ নিউজ ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক বণিক বার্তা পত্রিকায় নাটোরে সড়ক বিভাগের কোয়ার্টার সংস্কারের ১৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ এই খবরটি প্রচার এর পর চারিদিকে শুরু হয়েছে তোলপাড়। চা দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্রই এখন সড়ক বিভাগের দুর্নীতির আলোচনা নিয়ে সরগরম। সজাগ নিউজের নিউজটি তে দেখা যায় সজাগ নিউজের সম্পাদক মহোদয় মাহবুব হোসেন বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধান করে রিপোর্ট তৈরি করেছেন। শোনা যাচ্ছে রিপোর্টটি প্রচার এর পরপরই সড়ক বিভাগে নাকি সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে। মূল গেটে লাগানো হয়েছে তালা।

সজাগ নিউজ এর রিপোর্ট টিতে বলা হয়েছে- ”
শুধুমাত্র কাগজ-কলমে শ্রমিক-কর্মচারিদের কোয়ার্টার সংস্কার দেখিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে ১৯লাখ টাকা। আর ঠিকাদারের সহযোগিতায় এমন সব অনিয়ম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে।  অথচ সেই সরকারী কোয়ার্টারে সওজের শ্রমিক-কর্মচারীরা জরাজীর্ন অবস্থায় বসবাস করছে।  কর্মকর্তার পকেট উন্নতি হলেও শ্রমিক-কর্মচারীদের উন্নয়ন হয়নি।

নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিস চত্বরের উত্তর পার্শ্বে পরিবার-পরিজন নিয়ে সরকারী কোয়াটারে বসবাস করেন সওজের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সাজ্জাদ হোসেন। কম ভাড়া হওয়ার কারনে পরিবার পরিজন নিয়েই জরাজীর্ন ভবনে বসবাস করে আসছেন তিনি।  কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে কোয়াটার সংস্কার না হওয়ার কারনে চরম দুর্ভোগের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে তাদের। টিনের চালা ফুটো হওয়ার কারনে বৃষ্টি এলেই বসে থাকতে হয় পরিবার-পরিজন নিয়ে।

সরেজমিনে এই প্রতিবেদক দেখতে গেলে এমন সব দুর্ভোগের কথা বলেন সাজ্জাদ হোসেন। কিন্তু উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে তাদের কোয়াটার সংস্কারের কথা জানালেও কোন সংস্কার না হওয়ার কারনে দুভোর্গ মাথায় নিয়েই সেখানে বসবাস করছেন বলে জানান সাজ্জাদ হোসেন।

সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী বলেন, বৃষ্টি এলে খুব কস্ট করে রাত কাটাতে হয়। ঘরের চালার সব টিন ফুটো হওয়ার কারনে চারদিক দিয়ে পানি পড়ে। তখন বসে থেকে রাত কাটাতে হয়। তবে গত এক বছরের মধ্যে তাদের কোন ঘর সংস্কার করা হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সওজের কর্মচারীদের কোয়ার্টার সংস্কারের জন্য চলতি বছরের গত ১৪মে দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৯লাখ টাকার টেন্ডার দেয় সওজ বিভাগ। কিন্তু সংস্কার কাজ না করেই পুরো টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আলী কন্সট্রাকশন কোম্পানীর ঠিকাদার আলী হোসেন মিন্টু। তবে ঠিকাদার মিন্টু নামেই ঠিকাদার হলেও পুরো টাকা পকেট ভরেন এসডি ইউনুস আলী। বর্তমানে জরাজীর্ন ভবনে বসবাস করছে অন্তত ১০জন কর্মচারীর পরিবার। কোন সংস্কার কাজের ছোঁয়া লাগেনি তাদের সরকারী কোয়াটারে। অন্তত ৫টি পরিবারের সাথে এই প্রতিবেদক কথা বললে, কেউ সংস্কারের কথা বলেনি।

এবিষয়ে ঠিকাদার আলী হোসেন মিন্টু বলেন, কাজ করেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কোন অনিয়ম করা হয়নি।  তবে ঠিকাদারের এই কথার প্রেক্ষিতে প্রতিবেদক কাজ না করে টাকা উত্তোলনের জন্য তাকে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

নাটোর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগী প্রকৌশলী ইউনুস আলী বলেন, প্রকল্পটিতে কোন অনিয়ম করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ হয়েছে। কোন টাকা উত্তোলন করা হয়নি।

এসডি ইউনুস আলীর সময়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন নওজিস রহমান বিশ্বাস। এই প্রতিবেদক তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করলে তিনি কোন উত্তর দেননি।

এবিষয়ে নাটোর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে এই নিউজটি প্রচারের পর সচেতন সমাজে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তারা বলছেন এই সমস্যা সমাধানে এবং এই দুর্নীতি নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সড়ক বিভাগের নিরবচ্ছিন্ন দুর্নীতির কারণেই নাটোর জেলার কোন রাস্তা কিংবা সড়কই ভালো নেই। তাদের নিরবচ্ছিন্ন দুর্নীতির ফলে ভোগান্তি বাড়ছে সর্বত্র। দীর্ঘদিন থেকে জেগে বাসায় দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের বিচার কে করবে? এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধবড়াইগ্রামে কমলা নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত
পরবর্তী নিবন্ধবাগাতিপাড়ায় ছেলের বৌকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগে শশুর গ্রেফতার

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে