‘সাংবাদিকের সাথে আমার কোনো কথা নেই’

0
135
nATORE KANTHO

নাটোর কন্ঠ : নাটোর সদর উপজেলার বড়হরিশপুর ইউনিয়নের শংকরভাগ গ্রামে, একজন বৃদ্ধার জমি জোরপূর্বক দখল করে, ১২টি মেহগনি গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী বলছেন- মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ক্রয়কৃত সম্পত্তি বলে ১৩ বছর পরে সর্বমহল ম্যানেজ করেই দখল নিতে চাইছেন আমার জমি।

তবে অভিযুক্ত বলছেন তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি। অনুসন্ধানে জানাযায়, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে মৃত তিন ব্যক্তির টিপসই স্বাক্ষরিত মাত্র ২০ হাজার টাকায় কেনা সাড়ে ৬ শতক সম্পত্তির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা।

মোছা. জয়গন বেগম জানান, “আমরা দুই ভাই দুই বোন। বাবা মারা যাওয়ার পরে ওয়ারিশ সূত্রে সম্পত্তি ভাগ করা হয়। শংকরভাগ বাজারের পাশে রাস্তা সংলগ্ন সাড়ে ৬ শতক জমি আমাদের আছে। যার মধ্যে আড়াই শতক জায়গার মালিক আমি। হঠাৎ করেই শোনা যাচ্ছে ২০০৯ সালে আমার ভাইবোনেরা আনোয়ার নামক ওই ব্যক্তির কাছে-

জায়গাটি মাত্র ২০ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করেছে মর্মে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে আমার তিন ভাইবোনের টিপসই দেওয়া একটি কাগজ উপস্থাপন করছেন। আমার অংশের আড়াই শতাংশ জায়গায় আমি মেহগনি গাছ রোপন করেছিলাম, সেই গাছগুলি আজ আনোয়ার, পলান, কুতুবসহ প্রায় পনের বিশ জন ব্যক্তি কেটে নিয়ে যায়।

এ সময় আমি বাধা প্রদান করলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।আমার শাড়ির আচল ছিঁড়ে যায় এবং আমি আঘাত প্রাপ্ত হই। সুবিচার পেতে আমি স্থানীয় অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আনোয়ারের হয়েই কথা বলে।প্রভাবশালী আনোয়ার সবাইকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে।”

ভুক্তভোগির ছেলে রুহুল আমিন জানান, “আমার মায়ের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ওই জমিটি বর্তমানে আমাদের দখলে আছে। নিচু জায়গা ছিল আমরা মাটি ফেলে উঁচু করেছি এবং একটি ঘর তোলা আছে। ঘরের পেছনে ১২টি মেহগনি গাছ রোপন করা ছিল।যা আজ আনোয়ারসহ তার সহযোগীরা জোরপূর্বক কেটে নিয়ে গেছে।”

অভিযুক্ত শ্রম অধিদপ্তরের কর্মরত কর্মচারী আনোয়ার’এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “সাংবাদিকের সাথে আমার কোনো কথা নেই, আমি টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করেছি। ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপর স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।”

এ ব্যাপারে বড়হরিশপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আলাউদ্দিন হোসেন জানান, “মেহগনি গাছ কর্তন বা জমি দখল সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে ইতিপূর্বে শুনেছিলাম শ্রম অধিদপ্তরের কর্মচারী আনোয়ার ওই জায়গাটি কিনেছেন।”

বড়হরিশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলালুর রহমান জানান, “বৃদ্ধা জয়গন বেগম সত্য কথা বলছেন না। এ বিষয়ে মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে বহুবার চেষ্টা করা হলেও তারা সালিশে উপস্থিত হয়না।

শ্রম অধিদপ্তরের কর্মচারী আনোয়ার হোসেন ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ওই জায়গাটি ক্রয় করেন। ক্রয়কৃত জায়গার মধ্যে তিনি নিজেই মেহগনি গাছ রোপণ করেছিলেন। স্থানীয়ভাবে মীমাংসায় ৪২ লিংক জায়গা বৃদ্ধাকে দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, “যদি কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, অন্যায় ভাবে কারো জায়গার গাছ কেটে নেয়, তাহলে তার ক্ষতিপূরণসহ সম্পূর্ণ বিষয় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধজমি সংক্রান্ত বিরোধে বাগানের গাছ কেটে বিনষ্ট করার অভিযোগ
পরবর্তী নিবন্ধঅবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন : ভেকু জব্দ করলেন প্রশাসন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে