নাসিম উদ্দীন নাসিম : কখনও মিনু, কখনও সুমি, কখনো মিথিলা আবার কখনও রোমানা নামে পরিচিত তিনি। এসব নামের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে একাধিক নামে একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র এবং নাগরিক সনদপত্র। এমন অভিযোগ অনেকের।
ভুক্তভোগী অভিযোগকারীরা বলছেন- তিনি একাধিক প্রতিষ্ঠানে ছদ্মনাম এবং ভিন্ন ভিন্ন নামের সার্টিফিকেট ব্যবহার করে একাধিক চাকরিও করেছেন নির্বিঘ্নে। নাটোর শহরের বিভিন্ন মহল্লায় বাসা ভাড়া নিয়ে দেহব্যবসা এবং ফিটিং বানিজ্য চালিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। তার সাথে সখ্যতা রয়েছে সমাজের নামিদামি মুখোশধারী অনেকের।
বিয়ের নামে অনেক পুরুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ-সম্পদ লুট, জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে নানামুখী প্রতারণা-জালিয়াতি ও নিরীহ লোকদের হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই নারীর বিরুদ্ধে। মুঠোফোনে বিভিন্ন পুরুষকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নাটোরে নিয়ে আসতো।
নিজ বাসায় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসে মিথিলার বন্ধু বলে পরিচিত রনি, রকিসহ সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তদের দিয়ে জোরপূর্বক অন্তরঙ্গ মূহর্তের ছবি বা নগ্ন করে ছবি তুলতো। এটা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার ফিটিং বানিজ্য চালিয়ে আসছিল এই মিথিলা।
এস এসসি পরিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৩ ধর্ষক ও সহযোগীতার অভিযোগে মিথিলা এবং তাঁর কথিত স্বামী মৃদুল হোসেনকে গত মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে শহরের স্টেশন হাফরাস্তা এলাকায় জনৈক সাগর মিয়ার ভাড়া বাসা খেকে আটক করে নাটোর সদর থানা পুলিশ।
সেই গণধর্ষণের সহযোগী নারী‘র প্রকৃত পরিচয় হলো, নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ইউনিয়রে কাজীপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরুল ইসলাম ভুট্টোর কন্যা মোছাঃ নুরুন নাহার মিথিলা (২৬)। অনেকেই বলছের ৩ জন বৈধ স্বামীর পরিচয় পাওয়া গেলেও রয়েছে আরও অনেক স্বামী।
ভুক্তভোগী মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, ‘প্রায় ৪/৫ মাস আগে আমাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় মিথিলা। পরে শহরের একটি ক্লিনিকের পাশে নিয়ে গিয়ে শহরের কিছু চিহৃিত সন্ত্রাসীকে দিয়ে মারপিট করে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং বিকাশের মাধ্যমে আরোও ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি।’
দিঘাপতিয়া এম.কে কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ও সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদ নাটোর জেলা শাখার উপদেষ্টা, প্রভাষক নাসির উদ্দিন, ওরফে নাসির বাদশা‘র নামে, শিক্ষার্থী হিসেব যৌন হুয়রানির অভিযোগ করে, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে। অভিযোগ পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমানীত হয়। মিথিলা নিজেই সেই অভিযোগ লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেল আরোহীর অভিযোগ, ‘খুব জরুরী আছে ভাইয়া’, এই কথা বলে গন্তব্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ করে। গন্তব্যে গেলে কয়েকজন হোমরা চামড়া ছেলেসহ, হয়রানির হুমকি দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই তার ব্যবসা।’ মান সম্মানের ভয়ে, থানায় কোন অভিযোগ করেননি, মোটরসাইকেল আরোহীরা।
নাটোর সদর থানার অফিস ইনচার্জ, নাসিম আহম্মেদ বলেন, ‘গণধর্ষণের অভিযোগে রনি মিয়া, রকি এবং সোহান। এছাড়া এ ধর্ষণে সহযোতিতার অভিযোগে, মৃদুল হোসেন ও তার স্ত্রী মিথিলা পারভীন‘কে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন। এই নারীর বিরুদ্ধে যদি কোন লিখিত অভিযোগ পাই, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’