আজ নাটোরের প্রথম মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান পটল এর মৃত্যুবার্ষিকী

0
485

আত্মত্যাগকারী জননেতার মৃত্যু নাই ,নাটোরের কৃতি সন্তান জননেতা পটল ভাই চিরদিন আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন

নাসিম উদ্দীন নাসিম –জনগণের জন্য আত্মত্যাগকারী জননেতার মৃত্যু নেই। তাঁরা আজীবন বেঁচে থাকবেন জনগণের হৃদয়ে। নাটোরের রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রথম মন্ত্রী ও কৃতি সন্তান জননেতা ফজলুর রহমান পটল তাঁর আপন কীর্তিতে চিরদিন আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।এমনই একজন ব্যক্তিত্ব যিনি দেশ ও জাতিকে নানাভাবে ধন্য করে গেছেন। এই মানুষটি আমাদের রাজনৈতিক দীক্ষার প্রেরণা।ফজলুর রহমান পটল স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত একটি নাম। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দেশ ও মানুষের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করায় তিনি মানুষের মনে চিরজাগরুক হয়ে থাকবেন।

আজ ১১ আগষ্ট ছিল ক্ষণজন্মা রাজনীতিবিদ, দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন অনন্য সংগঠক ও দেশের কীর্তিমান রাজনীতিক নাটোর জেলার প্রথম মন্ত্রী পটল ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকী তাই নতুন প্রজন্মকে এই রাজনীতিবিদের বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে কিছু জানাতে চাই….

“`বক্ততা যদি শিল্প হয় তবে সে শিল্পের নিপুণ কারিগর ছিলেন পটল ভাই ।। একজন অনলবর্ষী বক্তা এবং জনগণের প্রকৃত সেবক হিসেবে পটল ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী ।।
ফজলুর রহমান পটল ১৯৪৯ সালে ২৪ এপ্রিল নাটোরের লালপুর উপজেলার গৌরিপুর গ্রামে এক সম্ভান্ত মুসলমি পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর বাবার নাম মরহুম আরশাদ আলী এবং মাতার নাম মরহুম ফজিলাতুন নেছা। ৫ভাই ও১ বোনের পরিবারে তিনিই ছিলেন সবার বড়।গৌরিপুরে প্রাথমিক ও গৌরিপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে পাবনাতে গিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। সেখানে স্থাণীয় একটি বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন এবং পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যামিক পাস করেন। এর পর তিনি ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি পরিসংখ্যান বিষয়ে পড়াশুনা করেন।। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তবে রাজনৈতি উত্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।১৯৭৩ সালে ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে আওয়ামী ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন। ফজলুর রহমান পটল নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে চারবার সাংসদ নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯১-১৯৯৩ পর্যন্ত যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী, ১৯৯৩-১৯৯৬ পর্যন্ত সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১-০৬ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।তিনি বিএনপির প্রচার সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। এর পর তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপষ্ঠো হিসাবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে বি এনপি’র প্রার্থী হিসাবে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মন্ত্রী এবং এমপি থাকাকালে নাটোর জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করেন।

পারিবারিক জীবন==== প্রায় ৩৭বছর আগে ১৪ মে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইন্সটিটিউটের সাবেক অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার শিরিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক। বড় ছেলে ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন। পেশায় একজন চিকিৎসক। রাজন ২০০৪-০৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। ছোট ছেলে ইস্তেখার আরশাদ প্রতীক বর্তমানে ইউনিলিভার লিমিটেডের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত আছেন। বড় মেয়ে ফারহানা শারমিন কাকন গৃহীনি। ছোট মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুল সুপ্রীম কোর্টে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের জুনিয়র আইনজীবি হিসেবে কর্মরত আছেন।

জীবনের শেষ সময়ে বেশ কয়েক বছর ধরে কিডনির জটিল রোগে ভুগছিলেন। তিনি দেশে বিদেশে চিকৎসা নিয়েছেন। সর্বশেষ তিনি চিকিৎসার জন্য কলকাতা যান। সেখানে রবীন্দ্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৬ সালের ১১ আগষ্ট দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভাতিজা ডাঃ রাজন এবং স্বামীর শূন্যতা পূরণে শিরিন ভাবী নাটোরের মানুষের সেবায় নিয়োজিত আছেন ।।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিএনপিতে যোগদান করার পর থেকে আমৃত্যু দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তার জীবদ্দশায় দেশ ও দলের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অকৃত্রিম। বিএনপির বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্রকে দৃঢ়চিত্তে মোকাবিলা করতে তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন, তা দলের সব নেতাকর্মীর জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ‘।’
বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত দলকে সুসংগঠিত করতে তার ভূমিকার কথা দলের নেতাকর্মীরা কোনোদিন বিস্মৃত হবে না। দেশের বর্তমানসময়ে তার না ফেরার দেশে চলে যাওয়া রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের মানুষকে অকৃত্রিম ভালোবাসায় কাছে টেনে নেয়ার এক সহানুভূতিসম্পন্ন মানুষ মরহুম ফজলুর রহমান পটলের

আল্লাহ আমাদের সবার প্রিয় নেতা পটল ভাইকে জান্নাত নসিব করুন । আমিন

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৬ আগস্ট থেকে ৩২ ট্রেন সচল হবে, আজ থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরের মহারানী ভবানী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে