কবিতা, তোমাকে বলছি
কবি গোলাম কবির
অনেক তো কবিতা পড়লাম!
আজ না হয় কবিতা আমাকেই পড়ুক,
তন্ন তন্ন করে পাঠ করুক
আমার বেদনার নীল উপাখ্যান!
একটু একটু করে কাছে এসে
দেখুক কেমন আছি আমি!
কবিতা একবার, শুধু একবার এই বুকের
খাঁচা খুলে দেখুক আমার ভিসুভিয়াস,
দেখে চমকে উঠলোই না হয় একটুখানি।
অনেক তো কবিতার বারান্দায় হাঁটলাম!
জানালায় উঁকি মেরে ওর সুখ দুঃখের,
আনন্দ বিরহের সঙ্গী হলাম!
এখন কবিতাও একটু একটু করে
আমার খোলা বারান্দায় আসুক,
জানালার পাশে এসে চুপ করে দাঁড়িয়ে
দেখুক আমার হৃদয়ের ভাঙচুরের খেলা,
বারান্দায় এসে আমার বন্ধ দরজার
কাছে এসে মৃদু টোকা দিয়ে অপেক্ষা করুক,
যেমনি করে আমি কবিতার জন্য
অপেক্ষা করি টিসিবির ট্রাকের লম্বা লাইনে
দাঁড়িয়ে থাকা ধৈর্যবান পুরুষদের
সয়াবিন তেল, চিনি, চাল, আটা,
মসুরির ডাল এসব কেনার জন্য
ঘর্মাক্ত অপেক্ষার মতো নির্বিকার!
ভালোবেসে কতো বিনিদ্র রাত্রি কাটিয়েছি
বিমর্ষতায় শুধু একটা কবিতার জন্য,
কারফিউ এর রাতে জলন্ত সিগারেট কে
সঙ্গী করে শহরের অলিগলিতে হেঁটেছি
বেওয়ারিশ কুকুরের মতো, নিজের হেঁড়ে গলায়
আউড়েছি রবীন্দ্রনাথের গান,
” আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে “!
অপারগতায় নিজের মাথা ঠুঁকেছি
কবিতার লৌহ প্রাচীরের গায়ে,
কবিতাও তো সেকথা জানে ;
আজ কবিতা না হয় একটু
আমার জন্য অপেক্ষায় থাকুক,
অপেক্ষার প্রহর গুনে আমার জন্য
একটু না হয় বৃষ্টিতে ভিজুক, মধ্যদুপুরে!
একটু না হয় আমাকে আপন করে নিক!