কবি শ্রাবণী গুপ্ত‘এর একগুচ্ছ কবিতা

0
479
Srabani Gupta

এপিটাফে লেখার আগে

আজ থেকে হাজার বছর আগে
তোমাদের জন্যই লিখেছিলাম ভালোবাসার চিঠি বহু অজানা অক্ষরমালায়।
আজ থেকে হাজার বছর পরেও
তোমাদের ভীরু কেঁপে ওঠাটুকু লেখার জন্যই আবার জন্ম নেব নির্দ্বিধায়।
সমস্ত ভৌগোলিক সীমানা লঙ্ঘন করে
রোদ্দুরের আলপোনা আঁকা বারান্দায় আমিই শুকোতে দেব চুল,
চুনখসা বাড়ির আঙিনায়, থেমে যাওয়া পেন্ডুলামের কাঁটায় রেখে যাব ফুল।
আমার নাম এপিটাফে লিখে রাখতে
তোমাদের বাঁচতে হবে আরো হাজার বছর,
হয়তোবা আরো বেশি, হয়তোবা অনন্তকাল।
বলো পারবে কি?
আমার দেহের সমস্ত নদী যদি শুকিয়ে আসে?
সমস্ত চিরহরিৎ-এ যদি ফুলকি ছোটে আগুনের?
সমস্ত হিমবাহ যদি গলতে শুরু করে অসহ্য উষ্ণতায়?
প্রাচি প্রতীচির সমস্ত বাগানের ফুল যদি না ফোটার আগেই নুইয়ে পড়ে তীব্র যন্ত্রনায়?
বলো পারবে কি?
যদি পারো, তবে এপিটাফে লিখে দাও নাম,
আমিই তো সেই নারী,
“প্রকৃতি” যার নাম….

অপেক্ষা

ভিতরে ভিতরে শ্বাস ফুরিয়ে এলে
আমি বসে থাকি একাদশী চাঁদ হাতে

এখন তোমার পালা
তুমি আছড়ে ফ্যালো সমুদ্র
পালটে ফ্যালো কথা

আমি কিন্তু বসেই আছি একমুঠো জ্যোৎস্না হাতে
কবে তুমি মোহের শেষে ঋষি হবে
আর লিখে নেবে নতুন কোন মহাকাব্য?

বরং চলো…..

বরং চলো
সমুদ্রে যাই
তোমার রাগের ওপর সন্ধ্যের ছায়া আসুক নেমে,
আমি অনুমান করি তোমার অনন্ত পরিধি,
অনুবাদ করি তোমার রাগ
সমুদ্রের লোনা জলে,
উদভ্রান্ত বাতাসে,
ফিরে যাওয়া ঢেউ-এ|
তোমাকে পাওয়ার জন্য সমুদ্রে যাইনি কখনো,
তোমাকে খুঁজে পেতে
বরং চলো
সমুদ্রে যাই……

ভালবাসা ঈশ্বর সমান

বহতা নদীর মতন চলমান জীবন
আসলে দুমুঠো ভালবাসাই চায়,
পলিতে পলিতে একে স্তব্ধ করে দিও না….
এ যাবৎ যা কিছু নশ্বর দেখেছি,
ভালবাসাই একমাত্র ব্যতিক্রম,
আরো প্রেম দাও,
মুখরিত হোক জীবন যেন কলকল তান,
জেনো ভালবাসা ঈশ্বর সমান।

১৯/০৭/২০২০

অনেকটা ধুমকেতুর মতন

বিরহ যে কবিতার জন্ম দেয়
তার আখরে আখরে খেলা করে নক্ষত্রদ্যুতি,
আমি বিরাজমান ধুমকেতু থেকে
তুলে আনতে চাই স্থিরতার আঙ্গিক আর
বলে যেতে চাই একাকিত্বও আসলে একটা স্থিতি।

১৯/০৭/২০২০

Advertisement
উৎসSrabani Gupta
পূর্ববর্তী নিবন্ধলেখক নাজনীন নাহার‘এর অনুকাব্য
পরবর্তী নিবন্ধ৪ হাজার টাকা সার্টিফিকেটের করোনা রোগী এখন নাটোরে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে