খন্দকার মাহাবুবুর রহমান : সবাই বাসায় থাকুন সুস্থ থাকুন। বাসায় থেকে হরিনাম করুন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি কথা বিবেচনায় এই বছরের ৫৬ প্রহর ব্যাপি নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। এই বিশেষ বিজ্ঞপ্তিটি রীঁ শ্রী শ্রী জয়কালী মাতার মন্দিরের পেজে দেওয়া হয় ভক্তদের জ্ঞাতার্থে।
পঞ্জিকা মতে আজ ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ২৫শে মে রোজ সমবার। নাটোর জেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরে ভোর পাঁচটা থেকে ৮ প্রহরব্যাপী, চব্বিশ ঘন্টার জন্য মহানাম যজ্ঞ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে, ভক্ত আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, বিশ্ব শান্তিকল্পে এই মহানাম যজ্ঞ অনুষ্ঠান কেবল ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, পালন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, মন্দির পরিচালনা কমিটি।
তারা আরো বলছেন, গতকাল সন্ধ্যা আরতির পর মন্দির পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় অধিবাস। আজ ভোর ৫টা থেকে, আগামীকাল ভোর ৫টা পর্যন্ত, তিনজন প্রসিদ্ধ ব্রাহ্মণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, শুধুমাত্র হরি নামের মালা জপ করবে বিশ্ব শান্তিকল্পে। প্রতিবছর লাখো ভক্তের সমাগম ঘটলেও চলতি বছরে ভক্ত আগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানালেন, রীঁ শ্রী শ্রী জয়কালী মাতার মন্দিরের হরিবাসর উদযাপন কমিটির সদস্যরা।
১১ জ্যৈষ্ঠ ভোর পাঁচটা থেকে শুরু করে ১৮ জ্যৈষ্ঠ ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সাত দিন ৫৬ প্রহরব্যাপী বিশ্ব শান্তিকল্পে নাম যজ্ঞ অনুষ্ঠান হত। যুগ যুগ ধরে এই রেওয়াজ অব্যাহত ছিল কেবল ব্যতিক্রম ঘটলো চলতি বছরে, করোনা ভাইরাসের কারণে। গত ২৬শে মার্চ থেকে মন্দির পরিচালনা কমিটি, মন্দিরে ভক্ত প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কেবলমাত্র একজন পুরোহিত নিত্য পূজা সম্পন্ন করেন।
প্রতিবছর হরিবাসর কেন্দ্র করে কালিবাড়ি মন্দিরের চতুর্পাশে হরেক রকমের, পসরা সাজিয়ে বসতো, শত শত দোকানিরা। পাপড় ভাজা থেকে শুরু করে ধর্মীয়গ্রন্থ সহ মেলার বিবিধ পন্য বিক্রি করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতো দোকানিরা অবস্থান করতো সাতদিন সাতরাত্রি। ভক্তদের হরি নামের সুধা পান করাতে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কীর্তনের দল আসতো, নাম কীর্তন পরিবেশন করতে।
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, লাখো ভক্তের পদচারণায় মুখরিত থাকতো এই সাতদিন সাতরাত্রি। এমন দিন আসবে, প্রত্যাশা করেছিলেন কোন ভক্তবৃন্দ? ১১ই জ্যৈষ্ঠ নাম যজ্ঞ অনুষ্ঠান শুরুর ৭ দিন আগে থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ভাগবত পাঠ শুরু হত কিন্তু এ বছরে ভাগবত পাঠও ছিল বন্ধ। হাজারো ভক্তের সমাগমে অধিবাস শেষে কীর্তনের একটি দল সারা শহর প্রদক্ষিণ করতেন।
শুরুটা যেভাবে হত ঠিক ৭ দিন পরে সকালে নাম যজ্ঞ অনুষ্ঠান শেষে হাজার হাজার ভক্ত সমাগমে ভোরেকীর্তন বের হতো যা চলতি বছরে থাকবে বন্ধ।
মহাকাল দেবে পারি,
ভক্তদলে হরিনাম যব করি,
এমন আশায় বসে আছে-
যোপিছে মালা, আটটি প্রহরব্যাপী।
-ছবি গত বছরের