বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: তমাল গাছ বাংলাদেশের সংরক্ষিত দারুবৃক্ষ। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে তমাল গাছ বিলুপ্ত হওয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। এটা একটি বিরল প্রজাতির বৃক্ষ। যা সাধারণত সব জায়গায় দেখতে পাওয়া যায় না। আবার কিছু কিছু জায়গায় তমাল গাছ সংরক্ষণও করা হয়।
তেমনি নাটোরের বাগাতিপাড়াৱ তমালতলা বাজারের ঐতিহ্য বহন করছে একটি তমাল গাছ। যার নামানুসারে এই বাজারটির নামকরণ করা হয়েছিল তমালতলা বাজার নামে। কিন্তু তমাল গাছটিই আর থাকছে না! এমন কথাও শোনা যাচ্ছে।
এ বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাটোরের বাগাতিপাড়ার তমালতলা বাজারের স্থানীয় দোকানদার মোঃ মেহেদী হাসান (শিপন) বলেন তমাল গাছ আমাদের এই তমালতলা বাজারের একটি ঐতিহ্য ৷ তমাল গাছের নাম অনুসারে আমাদের এ বাজারের নামই হয়েছে তমালতলা বাজার। আর এখন যদি এই তমাল গাছটিই না থাকে তাহলে আর বাজারের মূল্য কি? তমালতলা বাজারে এই তমাল গাছটি বাদেও আরো দুই থেকে তিনটি তমাল গাছ রোপন ছিল। দুর্ভাগ্যবশত সেই গাছগুলি এখন আর নেই। কিন্তু আমাদের তমালতলা বাজারের এই তমাল গাছটি এখন আর আমরা হারাতে চাইনা। আমরা চাই উন্নয়ন হোক কিন্তু এই গাছটি রেখেই উন্নয়ন হোক। তা নাহলে আমরা এলাকাবাসীরা কঠোর মানববন্ধনে নামতে বাদ্ধ হব ৷
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাইকেল মেরামত কারী।
মহাজেম আলী আরও বলেন। গাছটি অনেক আগে থেকেই দেখে আসছি। এটি একটি বিরল প্রজাতির গাছ। এই গাছ না থাকলে মানুষ যদি জিজ্ঞেস করে যে তমালতলা বাজারের নামকরণ হয়েছে কেন? তাহলে স্থানীয়ৱা কি উত্তর দেবে! আমরা দেখেছি এর আগে দুই দিন উপজেলা থেকে লোক এসে মাপজোক করে গেছেন, গোলচত্বরের বিষয়ে। আমরা চাই আমাদের এলাকার উন্নয়ন হোক। কিন্তু এই না যে ঐতিহ্য কে বিদায় দিতে হবে।
এ বিষয়ে উক্ত বাজার কমিটির সভাপতি জানান। অনেক আগে থেকেই শুনছি এখানে গোলচত্বর করে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করা হবে। কিন্তু আমাদের ঐতিহ্যের তমাল গাছ আর থাকবে না! এনিয়ে নাকি দুই- তিনদিন মাপজোকও করা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছুই জানায়নি। আমি যে বাজার কমিটির সভাপতি আমাকে তারা মূল্যায়ন করেননি এ নিয়ে আমি চিন্তিত। এই তমালতলার ঐতিহ্য তমাল গাছ রক্ষণাবেক্ষণেৱ দায়িত্বে ছিলাম আমি। এই গাছে বিভিন্ন কীটনাশক স্যার ইত্যাদি দিয়ে গাছকে এতদিন রক্ষা করে এসেছি আমাদের ঐতিহ্য বলেই। কিন্তু এই তমাল বৃক্ষই যদি এখন আর না থাকে তাহলে আমাদের ঐতিহ্য হারাবো আমরা।
কেউ নিজেদের ঐতিহ্য হারাতে কখনোই চায় না। এই উন্নয়নের কাজকে সাধুবাদ জানিয়ে বলছি এই গাছটি যেন না কাটা পরে। এই গাছের জায়গা বাদেও আশপাশের সরকারি জমিজমা আছে প্রায় ১৩০ ফুট। সেই জায়গা সাথে নিয়েই এই গাছটা রাস্তার মধ্যে রেখে গোল চত্বর বানানো সম্ভব।আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নয়। উন্নয়ন হোক আমরাও চাই। তাই আমাদের জোর দাবি এই বিরল প্রজাতির গাছটি রেখেই গোল চত্বর হোক ৷
বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল স্থাপন ও তমাল গাছ কাটার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন। গাছ কাটা না কাটা এটা একক বিষয় নয়। এমপি মহোদয়, উপজেলা নির্বাহি অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির নেতারা সহ সকলের সম্মতিতে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর বাজার কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা তাদের নিজস্ব ফোরাম থেকে দাবি করতেই পারেন। এর আগে একাধিকবার আমরা সরেজমিনে গিয়ে বাজার ঘুরে দেখেছি কিন্তু বাজার কমিটির সভাপতি কে জানানো হয়নি।এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। সিদ্ধান্ত আসলে হয়তো আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব।