নাটোরে গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ -পর্ব -০১

0
375
nATORE

নাটোর কণ্ঠ : “গ্রাম হবে শহর” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন  চলছে আবহমান গ্রাম-বাংলার প্রতিটি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। যদিও গ্রামবাংলার ঐতিহ্য মেঠোপথ, তবে সেই মেঠো পথ দেখার সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য বহন করলেও, বর্ষাকালে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। তৈরি হয় জনদুর্ভোগ এবং  অর্থনীতি উন্নয়ন কর্মকান্ড হয় বাধাগ্রস্ত। দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের এই  কর্মকাণ্ড  প্রশংসার দাবি রাখেন। তবে সেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যদি অনিয়ম অথবা দুর্নীতি হয় ? তা হলে সরকারের কঠোর  পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন  সচেতন মহল। আসুন তাহলে কয়েকটি কেসস্টাডি পর্যালচনা করে দেখবো বাস্তব পরিস্থিতি কেমন? কেমনই বা চলছে মাঠ পর্যায়ে “গ্রাম হবে শহর” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কর্মযজ্ঞ ….

natore

কেসস্টাডি-01

নাটোরের সিংড়া উপজেলা ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সোয়াইর গ্রাম।  এই গ্রামের রাস্তার কাজের অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসীর অভিযোগ এই সামান্য কাজে সরকারি অর্থ অপচয় করা হয়েছে।

গ্রামবাসী খন্দকার সেলিম নাটোর কণ্ঠকে জানান, কাজের অনিয়ম দেখে এস ও’এর নিকট অভিযোগ জানানো হয়েছিল তবে সে অভিযোগ তিনি আমলে নেননি।শুধু এই কাজ নয় এই গ্রামে আরও এমন অনেক কাজ হয়েছে যে কাজগুলোতে প্রায় চারগুণ ব্যয় ধরা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায় কাজের দৈর্ঘ্য ২৬৫ মি. এবং প্রস্থ ২.৪৩১ মি.। ব্যয় ধরা হয়েছে ০৯ লক্ষ ৫৭ হাজার ০২ শত ৩২ টাকা। (৯,৫৭,২৩২)। তিন মাস যেতে না যেতেই বিভিন্ন স্থানে ইট সরে গেছে অন্যত্র। দেবে গেছে অনেক স্থান।

প্রকৌশলবিদের হিসাব অনুযায়ী প্রতি স্কয়ার ফিটে ইটের প্রয়োজন ৩ টা। দৈর্ঘ্য ২৬৫ মি. এবং প্রস্থ ২.৪৩১ মি. প্রায় ২ শত‌ ৭০ স্কয়ার ফিট হয়। যেখানে ইটের প্রয়োজন এজিং, সলিং সহ সিঙ্গেল হেরিং’এ প্রায় ২৫ হাজার। লেবার খরচ বাবদ ব্যয় হয়, ইটপ্রতি এক টাকা। নিচে ৫ ইঞ্চি ওপরে ১ ইঞ্চি হিসাবে বালুর প্রয়োজন ২৮০ সেফটি।

পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২৫ হাজার এক নম্বর ইটের বর্তমান বাজার মূল্য ২ লক্ষ টাকা। ২৮০ সেফটি বালুর বর্তমান মূল্য ১৮ শত টাকা। ২৫ হজার ইটের কাজের লেবার ব্যয় ২৫ হজার টাকা। তাহলে এই কাজের সর্ব মোট ব্যয় হওয়ার কথা ২ লক্ষ ২৬ হাজার ৮ শত টাকা।

বিবিধ খরচ বাবদ যদি আরো ৭৪ হাজার ২ শত টাকা ধরা হয়। তাহলে ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নাটোর কণ্ঠ মুখোমুখি হয় প্রকল্প সভাপতির সঙ্গে।

প্রকল্প সভাপতি ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড মেম্বার মো. নাজিম উদ্দিন ডালিম নাটোর কণ্ঠকে জানান, কাজটি বাস্তবায়ন করেছেন এলজিএসপি-৩ (বিবিজ) প্রকল্প সভাপতি হিসেবে তাঁর দায়িত্ব ছিল দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপ ঠিক আছে কিনা বুঝে নেওয়া।  তিনি দাবি করেন এই প্রকল্পে কোন অনিয়ম হয় নাই। এই কাজের জন্য কত হাজার ইট ব্যবহার হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান প্রায় ৮০ হাজার ইট  ব্যবহৃত হয়েছে এই কাজে। কত নাম্বার ইট দেওয়ার কথা আর কত নাম্বার ইট কাজে ব্যবহার হয়েছে? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

গ্রামীণ এই উন্নয়নের অনিয়ম ও দুর্নীতি কঠোর হস্তে দমন করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এমন প্রত্যাশা সকলের।

প্রিয় পাঠক সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ের কথা যে কাজে সেই কাজে ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। এ বিষয়ে নাটোর কণ্ঠ কথা বলতে চায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্প কর্মকর্তার সাথে। দ্বিতীয় পর্ব পঠের আমন্ত্রণ রইল………

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধআন্দোলনের কৌশল হিসেবেই পৌর নির্বাচনে বিএনপি- দুলু
পরবর্তী নিবন্ধসিংড়ায় নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে সংসদ সদস্যের সাথে সংলাপ 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে