নাটোরকন্ঠ:
যৌতুক দিতে না পারায় এক দরিদ্র এতিম মেয়ে গৃহবধু বর্ণাকে বাড়ি থেকে নির্যাতন করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে নাটোর জেল খানার কারারক্ষী গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে। দরিদ্র বর্ণা এখন মায়ের কাছেই অবস্থান করছে। এ ঘটনায় নাটোর থানায় একটি মামলাদায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে কারারক্ষী গোলাম রাব্বানী অফিসকে না জানিয়ে নিরুদ্দেশ রয়েছেন। ফলে কারাকর্তৃপক্ষ নাটোর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
মামলা ওপারিবারিক সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী নাটোর সদরের হালসা ইউনিয়নের মাহেষা গ্রামের মৃত আবুবক্করের মেয়ে বর্না বেগম (২৩) সাথে নাটোর জেলা কারাগারের কারারক্ষী গোলাম রাব্বানীর (৩৫) সাথে বিবাহ সুসম্পন্ন হয়। বিবাহের পর রাব্বানীর স্ত্রী বর্না কে নাটোর সদর থানাধীন হরিশপুর বাগান বাড়ীর (পুলিশ লাইনের পূর্বপার্শ্বে) মৃত দুলাল চৌধুরীর বাড়িতে ভাড়া নিয়ে নির্জন বন্দি জীবন যাপন করতে বাধ্য করে ।
বর্না অভিযোগ করেন কারারক্ষী রাব্বানী বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা পয়সা যৌতুক দাবী করেন। নাটোর জেলা কারাগারে কারারক্ষী পদে চাকুরি করায় সেই ক্ষমতায়, প্রতিটি মুহুর্তে আমাকে শারিরীক ও মানষিক নির্যতন এবং অন্যায় অত্যাচার করে । বিবাহের পর থেকে আমি অতি কষ্টে জীবন যাপন করতে থাকি । মটর সাইকেল কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা না দিলে আমার মাতার বাড়ীতে যেতে নিষেধ করে,হুমকি দেয় রাব্বানী। বাড়ীর বাহিরে বের হলে আমাকে সারা জীবনের জন্য মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে অথবা মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় রাব্বানী । এমতব্স্থায় গত ৫ জুলাই ভাড়া করা বাড়ীর ঘড়ের মধ্যে যৌতুক বাবদ নগদ দুই লক্ষ টাকা দাবী করে।দাবীকৃত যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে আমার মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুশি ও বাঁশের লাঠি,ছাতা দিয়ে তিন ধাপার আমকে নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায় আমার গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।
বর্নার মা মনোয়ারা জানান মেয়ে আমার এতিম অসহায় টাকার জন্য মেয়ে কে এইচ এস সি পরীক্ষা দেওয়াইতে পারিনি। কষ্টে অর্জিত টাকা পয়সা যৌতুক দিয়ে মেয়ে কে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু রাব্বানীর কাছে আমার মেয়েকে বন্দি জীবন যাপন করতে হয়েছে। ভভিষ্যতে সুখের আসায় কারারক্ষী রাব্বানীর নির্যাতন সহ্য করে আমার মেয়ে সংসার করেছে। গরু ,ছাগল বিক্রি করে বিভিন্ন সময় রাব্বানীকে আমি মোটা অংকের টাকা পয়সা দিয়েছি। মটরছাইকেল কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা না দিতে পারায় আজ আমার মেয়েকে নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বেড় করে দিয়েছে।
বর্নার মামা জানান ঘটনার পরে নাটোর জেলা কারাগারের জেল সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়ে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি কিন্তু রাব্বানী বিভিন্নভাবে তালবাহানা করে,আপোষ মিমাংসা করে নাই। পরে থানায় বিষয় টি অভিযোগ জানালে নাটোর সদর থানা কর্তৃপক্ষ ও জেল সুপার রাব্বানীর সাথে কথা বলে আপোষ মিমাংশা করার চেষ্টা করে। এক পর্যায় নাটোর জেলা কারাগারের কারারক্ষী রাব্বানী ৩ দিন সময় নিয়ে ঘড় সংসার করার কথা জানায়,হটাৎ সংসার করার নামে তালবাহানা করে পালিয়ে যায়। বর্তমানে জেল কারারক্ষী গোলাম রাব্বানী এখন পলাতক ।
এ ঘটনায় স্ত্রী বর্না বাদী হয়ে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করার অভিযোগে নাটোর জেলা কারাগারের কারারক্ষী গোলাম রাব্বানীকে আসামী করে নাটোর সদর থানায় ১১ (গ)২০০০সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংসোধনী ২০০৩,যৌতুকের জন্য মারপিট একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এখন তাকে খুঁজছে।