সজিব আহমেদ : চৈত্রের কাঠফাটা দুপুরের প্রখরতা যেসকল দুরন্তপনা কিশোরকে ঘরে আটকিয়ে রাখতে পারেনা, সেসকল কিশোর হয়তো আমার সৌন্দর্যে বিমহিত হয়। আমাকে চিনেনা এমন কাউকে গ্রামে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু শহরের অনেকেই হয়তো আমাকে কখনও দেখেনি অথবা আমার সাথে পরিচিত নয়। আসো বন্ধুরা আমি নিজে তোমাদের সাথে পরিচয় পর্বটা সেরে ফেলি।
আমার নাম শিয়ালকাঁটা। শিয়ালকাঁটা নাম হওয়ার অবশ্য কারণ আছে বৈ কি? অনেকে বলে আমার পাতা ও ফলের কাঁটা দেখতে অনেকটা শিয়ালের লেজের মতো আবার অনেকে বলে আমার ঝোপে শিয়াল থাকে এ কারণেই হয়তো আমার এই নাম। আমি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে আমার দেখা মেলে। শুষ্ক ও আদ্র দুই মাটিতেই আমি অনায়াসে আমি বেড়ে উঠতে পারি ।
আমি এক থেকে তিন ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারি। আমার কান্ড নরম ও সাদাটে সবুজ। কান্ড ভাঙলে রক্ত রসের মতো আঠা বের হয়। আমার পাতা লম্বা ও একপক্ষল এবং ২-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে।আমার পাতার কিনারা খাঁজকাটা খাঁজকাটা ও শীর্ষ কাঁটাযুক্ত। আমার ফুল হলুদ রঙের। প্রতিটি ডালের অগ্রভাগে একটি করে ফুল হয় । ফুলে পাঁচটি করে পাপড়ি থাকে। ফুল ফুটলে আমার কীট বন্ধুদের আনাগোনা দেখা যায়।
আমার ফল দেখতে অনেকটা তিলের ফলের মতো ।আমার ফল কাঁটা যুক্ত ।ফল কাঁচা অবস্থাতে সাদাটে সবুজ রঙের হয়ে থাকে ।পাকা ফল কালচে ধূসর রঙ ধারণ করে। আমার ফল পাকলে ফলের অগ্রভাগ ফেটে বীজ বের হয়। আমার বীজের আকার সরিষা বীজের মতো ।
সরিষা বীজ মসৃণ হলেও আমার বীজ অমসৃণ। আমার বীজ পিঁপড়ারা সংগ্রহ করে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। বীজ বহনের সময় আমার বীজ বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায় আর এভাবেই আমার বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। ইংরেজি নামঃ Maxican Popy. বৈজ্ঞানিক নামঃ Argemone maxicana