অবিশ্রান্ত বৃষ্টির গান
সে যেনো আজ সুখে থাকে
অনুভবের নীলাকাশে
আগুনের ফুল পাপড়ি মেলে
ভুলে থাকার ভুলে মিশে।
সেইতো প্রথম জানিয়েছিলো
কেমন করে গ্রহণ লাগে
শাবল চালায় কম্পিত হাত
বুকের মধ্যে আঘাত জাগে।
শ্বাস প্রশ্বাসের মাতাল হাওয়ায়
প্রবল এক ভূ কম্পন
নিবিড় সেই অস্থিরতায়
মৃত কোষের সেই স্পন্দন।
সে যেনো আজ ভালো থাকে
গোলাপ ফোঁটা মধ্যরাতে
স্মৃতির কুসুম নিরুদ্দেশে
মাধবকুণ্ডের জলপ্রপাতে।
দহন বেলার করুণ রাগে
মাছে জলে প্রেমের খেলা
মানব জনম হাসে কাঁদে
পাড়ে লাগে জীবন ভেলা।
ঢেউয়ের ডগায় স্বপ্ন হাঁটে
সাদা কালো রঙিন জীবন
সে যেনো আজ সুখে থাকে
জীবন যাপন আপন জীবন।
অবিশ্রান্ত বৃষ্টির গান
রঙিন খামে লিখে দিলাম
তার কাছে যা জমা ছিলো
বিষন্নতায় চেয়ে নিলাম।
সে যেনো তার রাজ্যপাটে
রাজার মত বেঁচে থাকে
নগর নাগর কাক পক্ষী
মৌমাছিরাও তাকেই ডাকে।
বলবে পথিক ঐযে দেখো
সুখের রাজ্যে ভাসছে রাজা
বুকের ভেতর একটা অসুখ
সুখের মতই দিচ্ছে সাজা।
বর্ষা নেমেছিলো নগরে
যতবার ভুলতে চাই আমাদের চলে যাওয়া পথের উপাখ্যান ,
ঠিক ততবার টইটুম্বুর হয়ে ভরপুর আয়োজনে
উৎপাদন করে নতুন বুদবুদ।
অনেকবার তাকে ছুড়ে ফেলেছি গাঢ় অমাবস্যায়,
সেলাই করে নিয়েছি শূন্যতা বিষয়ক গল্পের নকশীকাঁথা
উথলে ওঠা বেদনাকে বলেছি পুড়িয়ে ফেলো স্মৃতির শাখা প্রশাখা।
শেষ দেখার দিনে খুব বর্ষা নেমেছিলো নগরীতে
নিরীহ কাঁদাজল কেঁদেছিলো,
মায়াময় কি এক ঘোরে রাত নেমেছিলো
গাড়ির কালো কাঁচে,
সমস্ত বিষ কোত্থেকে এসে জমেছিলো বাতাসের গুঞ্জনে।
মনে নেই জোড়াতালি প্রেম…
শুধু মনে আছে দাঁড়িয়ে ছিলাম সারারাত
নিঃশ্বাস কেড়ে নেয়া পথের মাঝখানে,
আমাদের আর কোনদিন দেখা হবেনা জেনেও
প্রসারিত দৃষ্টি মেঘাক্রান্ত হয়ে পিছু ফিরে দেখে…..
পয়লা শ্রাবণ
নাগালে নেই
ভুলে থাকা স্মৃতির শরীরে এই দিনটি
কড়া নাড়ে প্রচণ্ড বেগে নাড়ে।
অস্থির উম্মাতাল মন
আয়নায় দাঁড়ায়,
সেই নীল শাড়ি —প্রকৃতি সাজায়
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি এতো বছর পরেও।
তুমি নিশ্চই মোমের আলোয়
খুলছো হুইস্কির ছিপি
হৈ চৈ লোকজন,
তোমার পাশের বিদেশিনী
শাড়ি পরতে পারে!!
সে কি জানে নীল তোমার পছন্দের রং!
আচ্ছা অনিমেষ
ভালোবাসা কি শূন্যে ওড়ে?
শূন্যে তাকিয়ে তবে আজও
কেন গলে যাই!!
তোমার জন্মদিনে
ঠোঁটে করে তুলে আনি পুরোটা আকাশের নীল।
তুমি কি জানো ঐ নীল আমাকে
আঁচরে আঁচরে রক্তাক্ত করে
তাই টিপ লাল হয়ে যায়।
স্বপ্নগুলো খুব নির্লজ্জ হয়
শূন্যতায় বার বার ফিরে আসে,
ওরা বলে যায়
যদি কোন দিন ফিরে আসো
হিসেবের বাইরে যাবো
দেখাবো ভেতরে কতটা তাণ্ডবে
নিঃসঙ্গতার সেতার বাজে——
তবুও পর
মেঘ ফাটিয়ে কে আসে রোজ
জানলা দিয়ে ছুঁই
অনেক দিনের আপণ সেই
একটা আমার তুই,
রৌদ্র খরায় দিন যাপনে
কেবল দূরে যাস
টুকরো করে আকাশটাকে
এমন কি সুখ পাস!!
হাত বাড়ালে শরীর কেবল
মন বাড়ালে মন
নিজেকে তুই প্রশ্ন করে
সঠিক জবাব শোন,
সেই যে দূরে বিদায় বিষে
এক পৃথিবী খরা
বৃষ্টি নামে তুমুল বৃষ্টি
মন তবুও মরা,
ভাঙা মনের টুকরো গুলো
মেঘের মতো চেঁচায়
বৃষ্টি এলে ইচ্ছেগুলো
বন্ধ করি খাঁচায়,
আঁচর কাটে ভাসিয়ে রাখে
জানলাবিহীন ঘর
বুকের মধ্যে ঘর বানিয়ে
রইলি তবুও পর।
অভ্যাস
অসংখ্য দীর্ঘশ্বাসের প্রগাঢ় এপিক যেনো শতবর্ষী গাছ হয়ে ডালপালা ছড়িয়ে দারুণ বেঁচে আছে।
অভ্যাস হয়ে যায়, ভালোবাসার দরজাগুলো বন্ধকরে প্রাত্যহিক বিপন্ন এক চরে জল ঢেলে চলা মানুষেরা কি গভীর দীর্ঘশ্বাস বয়ে বেড়ায়।
চাঁদের তাপে পুড়ে যাওয়া হৃদয় অবলিলায় সূর্য গিলে খায়!
পৃথিবীর সমস্ত জল ঢুকে গেলে রক্তের ভেতর
কেউ কিনে নেয় তার ঘ্রাণ।
জীবন খেয়ে বেঁচে ওঠা জীবন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়।
বুভুক্ষু প্রান্তরে নোঙর ফেলে অভ্যাসগুলো বেঁচে থাকে এককোটি বছর।
জলের সংসার
শিথিল করে দিয়েছি হৃদয় অলিন্দের বাঁধন।
যেখানে দ্বান্দ্বিক পৃথিবীর অবিমৃষ্যকারিতা
সেখানে কবিতার শরীর সাঁতরে জেনেছি মানুষের গোপন রহস্য।
সর্পিল স্বভাবের ভাঁজে ভাঁজে খেলা করে হাইব্রিড প্রেম।
বোধের ভেতর সাদা- কালো -রঙিন ছায়া, কেউ খুব বেশি স্পর্শকাতর,
মুখোমুখি মুগ্ধতায় পুড়েছি প্রাণভরে ,
তবুও শুনেছি প্রচণ্ড তাণ্ডবে ভাঙনের শব্দ।
বেঁচে থাকার মাঝে গভীর মৃত্যুর দর্শক হয়ে
শোকের নহরে ভেসেছি।
বাস্তবের কানামাছি খেলায় কক্ষপথ পথ ছেড়ে গোলকধাঁধায় জিরাফ গলায় সুখের মুখোশে বেশ আছি।
অনেকটা মূল্যে কিনেছি জলহীন চোখ,
রক্তাক্ত গোলাপের বাগান।
অদৃশ্য ভাঙনে আজও দেখি কত শত হৃদয়ের অভিসম্পাত।
সমস্ত আয়োজন ব্যর্থ হলে
অন্ধকার হাতরে ফের এই খানেই আশ্রয় চাও!!
এসো
সমস্ত শ্রান্তিরকাল চোখে নষ্ট হৃদপিণ্ড নিয়ে বিষাক্ত শরীরে লখিন্দর হয়ে ঘুমাও,
বেহুলার মতো অসীম অগাধ জলে একা বাঁচি জলের সংসারে।