কবিতার চেতনায় মানবতা বেঁচে রয় -কবি তাহমিনা মুন্নী’এর কবিতা ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

0
878
Tahomina Parvin

আমি তো কবি নই তবু হয় কাব্য
দেখি শুনি বুঝি কম অনুভূতি তীক্ষ্ণ

তাহমিনা মুন্নী : মূলত ব্যস্ত জীবনের কর্মচাঞ্চিল্যে জ্ঞানী গুনী ঋষি মনীষীদের জীবনী কম পড়া হয়।সেদিক থেকে আমার জানার পরিধিও একটা গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ।তবে হৃদয়ের গভীর অনুভূতি থেকে ভাল কে ভাল আর মন্দকে মন্দ বলতে সংকোচ করিনা।
নিতান্তই কাঁচা হাত আমার।তবু বর্ণ ও শব্দযোগে শব্দের মালা গাথি প্রকৃতি,ভালবাসা, মানুষের মানবিক গুনাবলী, দেশপ্রেমের চেতনা,ন্যায় অন্যায় আর ভাল মন্দের সংমিশ্রণে।

ছোট থেকেই অনেক বড় স্বপ্ন দেখতাম।ভাবুক মন! অসুস্থ রোগীকে কাতরাতে দেখলে ভাবতাম ডাক্তার হবো।টিভিতে সংবাদ শুনলে ভাবতাম সংবাদিক হবো
চোর দেখলে ভাবতাম পুলিশ হবো।

এভাবে হাজারো ভাবনায় নিজেকে ডোবালেও লেখাপড়ার প্রতি মনোনিবেশ ছিল নিতান্তই খেয়াল খুশি।আজ সেই ভাবনাগুলো ধমকে দাঁড়িয়েছে।ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার প্রশাসনিক ক্যাডার না হলেও মহান পেশায় আল্লাহ আমাকে অধিনস্ত করেছেন।

আমি একজন শিক্ষক।পাশাপাশি লেখালেখির সুবাদে পেয়েছি হাজারো গুনগ্রাহী বন্ধু।যারা আমার কবিতার অনুরক্ত। আজ সংকটকালীন সময়ে
কিছু ভাল মানুষের সুচিন্তিত চিন্তাধারা আমার লেখার হাতকে আরো সম্প্রসারিত করে দিল।

হাবিবুর রহমান মিলন সৌদি প্রবাসী। আমাদের পোস্ট(ব্যতিক্রমীউদ্যোগ- শিশুদের পুষ্টি) দেখে ৫০ জন দরিদ্র শিশুর জন্য পাঠানো তরুণ এই ছেলেটির অর্থে আমাদের টাউন মক্তব gps এ শিশু খাদ্যসহ অন্যান্য দ্রব্যাদী বিতরণ করা হয়।সেই থেকেই পরিচয়।

কবিতার প্রতি অনুরাগ থেকে ম্যাসেঞ্জারে নক করে ম্যাডাম আপনার বাড়ি কি সূর্যনগর? আমিও ওই গ্রামের ছেলে। ওর বাবার নাম জানার পর চিনতে পারলাম। একসময় ওদের পরিবারের সাথে আমাদের সখ্যতা ছিল সেটি প্রায় ২৫ বছর আগের কথা।

গতকাল নিজ উদ্যোগে ওর বড় ভাইকে দিয়ে গ্রামের কিছু অসহায় মানুষের জন্য আমার কাছে ইফতারি পাঠিয়েছে। সত্যি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কতটুকুই বা বয়স কিন্তু ওর প্রখর অনুভূতি আমাকে বিমোহিত করেছে।
আজ ওর চিন্তাধারার সাথে মিলে গেছে আমার পংক্তিমালা।

এছাড়া সূদুর প্রবাসী ফ্রান্স ও সাইপ্রাস থেকে বাংলাদেশী যুবক তারেক ও শান্ত।হৃদয়ের গভীর অনুভূতি থেকে নিজ এলাকার অসহায় মানুষের পাশে রয়েছে।ওদের মহৎ চিন্তাধারা আমাকে প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে।ওদের চোখেমুখে আমি স্বপ্ন বীজ দেখতে পাই। সেই স্বপ্নে আগামীর সবুজ ফসলী সমারোহে আমি মানব প্রেমের আভাস পাই।

তাই নিঃসংশয়ে বলি
কবিতা আমার বিশুদ্ধ বাতাসে শব্দ মালার চাষাবাদ
মানবতার জয়োগানে চিরদিন তাই জীবনের আশাবাদ

তাই আজ তারেক, শান্ত আর হাবিবুরকে নিবেদন করে———-

কবিতায় ভালবাসা

দেখিনি তিতুমীর দেখিনি শরীয়ত দেখিনি মহসীন
তবুও ওরা চিরায়ত রুপে যুগে যুগে সমাসীন
দেখিনি নজরুল দেখিনি রবীন্দ্র দেখিনি জীবনানন্দ
তবুও তারা কাব্য সুধায় চিরদিনই অনন্য
দেখিনি মানবদরদী খোকা শেখ মুজিবুর রহমান
স্বাধীন বাংলার সোনার পতাকায় ছিল যার অবদান।।

আকাশ দেখেছি আর দেখেছি হাজার তারার মেলা
চাঁদের সাথে জ্যোস্না রাতে দেখি লুকোচুরি খেলা
পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে পরা শুনেছি ঝরনার গান
দেখেছি নদীর ঢেউগুলো আর উজান ভাটির টান।।

ভাবনার তরী খানি সকিত নয়নে উদ্ধৃত বারবার
তোমরা যারা মানবতার সেবায় জেগে ওঠো অনিবার ।
তোমাদের নাম গহীনে আঁকা তোমরা মহীয়ান
ঘোর অমানিশায় আলোকিত জ্বেলে ওঠো আগুয়ান
সূদুর প্রবাসে রয়েছো তবুও মন কাঁদে নিজ ভূমে
শত অনাহারীর মুখে হাসি ফুটাও নিজ গুনে ধরাধামে।

কত ধনী গুনী কত মহাজন একাএকা ভূরিভোজ
ভবিষ্যতের আখের গোছায় নেয় না কারো খোঁজ।
এদের থেকে তোমরা স্বতন্ত্র প্রসারিত চিন্তাধারা
অপার মহিমার কৃপা অনুসারে প্রশমিত পাগলপারা।।

মানুষের তরে নিবেদিত হলে স্রষ্টাকে পাওয়া যায়।
একে অপরের বিপদের সাথী সবাইতো ভাই ভাই
আমার চেতনায় চিন্তা ধারায় তোমরা অনির্বাণ
চলো সেপথে যে পথে তোমার পথচলা ধাবমান।

জয় পরাজয়ের এই ধরনীতে রবে চির অক্ষয়
মানুষের জন্য নিবেদিত যা সবই তোমাদের জয়।
তোমরা জ্বেলে দিও আলো আজীবন রবে তার মেলা
ধরার বুকে থাকবে না আর অন্ধকারের খেলা।
সেই আলোতে আলোকিত প্রাণ তোমরা জ্যোজুল্যমান
তারেক, শান্ত আর আমাদের হাবিবুর রহমান।।

Advertisement
উৎসTahomina Parvin
পূর্ববর্তী নিবন্ধবাগাতিপাড়ায় দিনরাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
পরবর্তী নিবন্ধগুরুদাসপুরে নিজ উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন ডাঃ মোহাম্মদ আলী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে