কবি অসিত কর্মকার‘এর একগুচ্ছ কবিতা

0
725
Asit Karmakar

তুলসীকবি

একটাই তো টিয়ো
টিয়োর দাদা খোকা,তবুও দ্যাখো টিয়োর বাবার
চাউনি বোকা বোকা।

রেগে গেলে গুরুগম্ভীর
জ্ঞান থাকে না তার,নিজের প্রতি নিজেই তখন
ছুঁড়েন তিরস্কার।

সে অবিশ্যি জাত কবি
সব ভক্তরাই জানে,তবুও ব্যাটা এমন ঠ্যাঁটা
এই কথা না মানে।

না মানে তো না মানুক
কার কী আসে যায়,চাতক চাউনির ভক্তরা সব
তুলসীর লেখা চায়।

একটাই তো টিয়ো
টিয়োর দাদা খোকা,ওদের বাবা তুলসীকবি
চাউনি বোকা বোকা।

২১-০৭-২০২০ ইং

নিজেকে আড়াল করি

মুখগ্রন্থের হাটে ঘুরতে ঘুরতে
একটা সাহিত্যমারানির দোকানের ভিতরে ঢুকি,দেখি,
একদল কুম্ভীলক পরনিন্দায় মুখর।
বিস্ময়ে ভাবি,এরা যদি কবিয়াল হয়
তাহলে মুখোমুখি মঞ্চে দাঁড়িয়ে অবতীর্ণ হতো বাকযুদ্ধে,
বাক্যবাণে উতোর-চাপান হতো,অথচ
এসবের কোনো বালাই নেই।
তখন ভাবনাকে সাহিত্যের দ্বিতীয় আঁধারে রিভার্স করি,
দেখি,কবিসাদৃশ্যের হলেও ওরা আসলে অণ্ডহীন পাঁঠা।
ইদানীং পাঁঠা প্রসঙ্গ উঠলেই
কাব্যপ্রভু বলেন,স্বাস্থ্য বিচারে পাঁঠা ভক্ষণ ভালো,
তবে অণ্ডহীন পাঁঠায় হৃদরোগের আশংকা থাকে।
তারপর থেকে অণ্ডহীন পাঁঠা দেখলেই
বঁহঁহঁ-হুস বঁহঁহঁ-হুস বলে নাকে-মুখে কাপড় জড়িয়ে
পাশ কাটিয়ে আড়ালে যাই।

০৮-০৭-২০২০ ইং

কিছু কথা

ভগবান শ্রীবিষ্ণুর প্রথম অবতার খেলে ধর্ম নষ্ট হয় না
অথচ ওরা গোরু খেলে তোমার ভগবান অপবিত্র হয়!
রণক্ষেত্রের ডামাডোলে বাড়ে শকুনের উল্লাস
ভাদ্র আর আশ্বিনের মৌসুম এলে কুকুরেরও।
মানুষের চোখের জল শোধন করতে গিয়ে দেখি
প্রত্যেকের চোখের জলেই পক্ষপাত আছে।
হাত-পা চক্ষুহীন কামুক পুরুষেরাও জানে
সন্তান জন্মাতে সর্বাঙ্গ লাগে না।
সাপের দংশনে কেবল মানুষের মৃত্যুই হয় না
তার বিষে মানুষের জীবনও বাঁচে।
চাতক দৃষ্টিতে ধর্মান্ধরা তাই ভালোলাগার
তামাম দুনিয়ায় এখন শবের গন্ধ।
ভালোলাগার পৃথিবীতে যদি মানুষই না বাঁচে
তাহলে কে পূজিবে স্রষ্টারে?

১৮-০৭-২০২০ ইং

শব্দগুলি

অবস্থাদৃষ্টে যা মনে হচ্ছে,

আদি, গোরু, কিংবা, গোজাত, ক্রমশ,

গরুর রূপ ধারণ করছে।
আবার এটাও দেখছি যে,

শব্দকুশলী, শুয়োর,প্রথম শ্রেণির, হারামি, সব,

শব্দগুলি এজমালিতে পরিণত হচ্ছে।

১৫-০৭-২০২০ ইং

লালু হও

মানুষের মতো মানুষ হও
যদি না-ই পারও তবে লালু হও
তবু শেফার্ড হয়ো না।

১৪-০৭-২০২০ ইং

যার যেমন পাওনা

মুখগ্রন্থের হাটে
তোমার দোকানে ঢু মেরে
থরেবিথরে সাজানো শংসাপত্র দেখে বুঝেগেছি,
তুমি সনদসর্বস্ব অতিবিদ্বান।

তাই তোমার
সনদবলীয়ান মুখে
উদগীর্ণ হচ্ছে লিঙ্গ-জ্ঞানহীন শব্দের সাথে
আত্মশ্লাঘার ফুলঝুরি।

অশ্লাঘ্য আচরণ
আর আত্মগরিমার ঢেকুরে দুর্গন্ধ শব্দত্যাগ।
কে শংকর আর কে শংকরী বোঝ না।
জানি কবিগুরুকে পড়েছো,
অথচ আত্মস্থ করো’নি।

কুতার্কিক নই,
গুরুর শিক্ষাবলে বলীয়ান,
প্রথিতযশা কবিদের সান্নিধ্য পেয়েছি
তাই শালীন শব্দবহির্ভূত সনদসর্বস্বদের
চাঁদ সওদাগরের মতো বিদ্রুপের কণা মিশ্রিত
পেন্নাম ছুঁড়ে দিলাম।

০২-১২-২০১৮ ইং

গৃহে তোর মেয়ে

রে বৃদ্ধ
তোর চিতাবক্ষ চাইছে ষোলোর সাগরে ডুবতে
আর ষোলোও চাইছে
তোর স্থাবর অস্থাবরে সাঁতরানোর অধিকার।
অথচ গৃহে তোর মেয়ে!

০৫-০১-২০১৯ ইং

নিস্তার আছে

নদী কত কত গ্রাসিত ভূমি-লুটেরাতে
রুলিং-পার্টিও ভক্ষিত পতিত নট দ্বারা আর
অতি-সাধারণ লুণ্ঠিত নট-জনদাসে!
অথচ আজ ধার্মিক থেকে ধর্মান্ধ;
উচ্চমানব থেকে পথকলি,কেউ কি পাচ্ছে ক্ষমা,
সৌরমুকুট-সঞ্জাত ভাইরাস থেকে?

২৫-০৭-২০২০ ইং

গুরুবাক্য মিথ্যে না

কোচিং সেন্টারের বারান্দায় বসে
খোশগল্পে মত্ত যেসব বৌগুলো দেখছো,ওরা এখন
ইংরেজি টিচার সবিতা ম্যাডামের টাইট ফিটিং জিন্সের
পিণ্ডি চটকাতে ভীষণ রকম ব্যস্ত!
পাশেই কাশেমের চা-দোকান,অথচ কেউ
একা একা চা-সিঙাড়া খেতে যাবেই না,এর কারণ
গল্পের আসর ছেড়ে যে একবার উঠে যাবে,তখন তারই
টাইট ফিটিং ব্লাউজের পিণ্ডি চটকাবে ওরাই!
[কথাগুলো গুরুদেব অন্যভাবে বলেছিলেন]

২৬-০৭-২০২০ ইং

নেতারা চাখছে

আর্য বা অনার্য নেতারা
গোপন ডাইনিংয়ে বসে অষ্টব্যঞ্জন বাদেও
কতো কি চাখে তাকি জানো?
ধরো নাকের দু’পাশে দু’খানা রাষ্ট্র
আর নাকটাকে ধরে নাও প্রান্তভাগ,এবার
চোখদুটো দু’দিকে নিক্ষেপ করো।
দু’চোখেই খোঁজো রাষ্ট্র ডাইনিং
দৃষ্টি ভালো হলে দেখবে-তিনশো সত্তর আর একাত্তর,
তখনও বা এখনও চাখছে কাঁড়িকাঁড়ি শব।

২৮-০৭-২০২০ ইং

Advertisement
উৎস‍Asit Karmakar
পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্যোগে কেউ মনোবল হারাবেন না, দ্রুত বাঁধ পুনর্নির্মাণ করা হবে- পলক
পরবর্তী নিবন্ধসিংড়ায় ২৫০ টি পরিবারে ডিআইজি নাফিউল ইসলামের ঈদ সামগ্রী প্রদান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে