সেগুড়ে বালি
অসিত কর্মকার
কিরিং কিরিং কিরিং কিরিং,হ্যালো সব ঠিকঠাক
হ্যালো হ্যালো,হ্যালো রাস্তা পরিষ্কার হ্যালো,ইয়েস স্যার
আমরা এখন জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দেবো।
এই হলো তোমাদের অতীত,তাই
বারবার উড়ে যাবার দরকার কী মনস্তত্ত্ববিদের কাছে
মনোব্যাধির অবস্থা জানার জন্য?
স্মৃতির দড়িতে কুয়োর কাঁটা বেঁধে দিলে
আমরাই বলে দিতে পারি তোমাদের মনের ভিতরে
জমে থাকা সমস্ত ব্যাধির খবর।
২৪-০৮-২০২০ ইং
ধর্মের ষাঁড়
অসিত কর্মকার
দেখেছি এই মাঠে গোরু বিচরণ;
চারিদিকে সারি সারি বৃক্ষেরও শোভা আর
মাঠভর্তি লকলকে ঘাসের ফরাশ,তখন
গোরুর-ই রাজত্ব ছিলো মাঠজুড়ে খুব।
সেই মাঠ এখনও আছে তবে
সেখানে রাজত্ব করে একগুঁয়ে ধর্মের ষাঁড়!
৪-১১-২০২০ ইং
বলবে তোমায় কে
অসিত কর্মকার
খাও তো বাছা,খাও তো পেট পুরে
কাল কিন্তু বিষ্যুদবার, পরের দিন-ই শুক্কুর
নাহয় বারের দিন যাত্রা নাস্তি
কিন্তু তার পরের দিন-
তার পরের দিন যাবোই চলে দূরে
তখন বলবে তোমায় কে?
খাও তো বাছা, খাও তো পেট পুরে।
০৯-১২-২০২০ ইং
কবিতাটি ক্ষুদে কবি নীলাদ্রির জন্য
মাথায় রেখো
অসিত কর্মকার
এটা সেই বাহাত্তর সালের না বে
যে- রাষ্ট্রীয় কর্তারা;
বাড়ী বয়ে শিক্ষিত বেকারদের ডেকে ডেকে এনে বলবে এই নাও বাছা
এই সরকারী চাকরিটা তোমায় দিলুম,
যেন এই যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে
তোমার পরিবারসহ
অন্তত দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ আর
আটপৌরে কাপড় পরে সম্মান বাঁচাতে পারো।
এটা দু’হাজার বিশ সাল হে
তুমি যতবড় সনদ বলীয়ান হও না ক্যানো
আজ-কাল বারো পনেরোর নিচে কোনো কর্তাদের-ই
হৃদয় গলে না,
মাথায় রেখো শিক্ষিতরা।
২৫-১১-২০২০ ইং
হাঁ করে থেকো না
অসিত কর্মকার
অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে বাঁচার প্রবণতা বাদ দাও
সচল দুটি পা- হাত আর একটি মাথা তো আছে
পৃথিবী মানেই একটা বিশাল কর্মযজ্ঞের আসর
মূলত এই আসর তোমার দিকেই হাঁ করে আছে
সুতরাং একটিবার প্রমাণ দাও যে – তুমি অন্তত
কিছু না কিছু দিতে পারো এই বিরাট পৃথিবীকে
এভাবে আর হাঁ করে ঊর্ধ্বে মুখ তুলে রেখো না।
২০-১১-২০২০ ইং
একত্রিশে অক্টোবর
অসিত কর্মকার
শাসন ভঙ্গিমায়,
হাতে বেতের একটা লাঠি,চোখদুটো ঈষত্ লালবর্ণ,
অথচ ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি,যেমনটা
নন্দের মা যশোদার,ঠিক তেমনটাই
আমার মা’র।
একত্রিশে অক্টোবর
কেবল একটা তারিখ-ই নয়,ইন্দিরার মৃত্যুদিবসের মত
ঐ দিনটা মায়েরও।
পুত্রশোকে চিতাবক্ষ মা’র
চিতার-ই লেলিহান অগ্নিশিখায় পুড়ে ছাই হয়ে গ্যালো
মুখাগ্নির সুযোগটাও পেলাম না।
যাদের জন্য মা’র মরামুখটা দেখতে পাইনি,
সেসব কুচক্রীরাও মায়ের মরামুখ না দেখার মতনই
আজ পর্যন্ত ক্ষমতার মুখটিও দ্যাখেনি।
৩১-১০-২০১৯ ইং
বুড়ো মেরে খুনের দাবি
অসিত কর্মকার
সেই কবে দিয়েছিলো
হাতে লেখা ক’খানা কাগজের পাতা,আবার
ভালোবেসে খুব করে বলেছিলো
ছেপে দিও মাহাবুব।
এরপর কেটে গেছে আধযুগ
বেমালুম ভুলেগেছে গোবেচারা ছাপানোর কথা
কিন্তু ভুলেনি বাবলাদা আজও
সেই কাগজের কথা!
ইদানিং রাস্তায় দেখা হলে
ঘাড়ে চেপে বসে তার আর চিৎকার করে বলে
আমার ঐ হাতে লেখা পাণ্ডু্লিপি
এখনই ফেরৎ দে মাহাবুব!
ভাগ্যিস ছিলো রাখা আলমারিতে
তবেই তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচে গোবেচারা,
নচেৎ?
৩০-১০-২০২০ ইং
রক্তের বাঁধন
অসিত কর্মকার
আমার চোখ নিঙড়ানো জলটুকু পর্যন্ত
তাঁর সমুদ্রসম চোখে ধারণ করেছিলো;
সেই থেকে কান্নায় হৃদয় ফাটে, চোখে জল আসে না রে!
২৪-১০-২০২০ ইং
আজ ভেবে কী হবে
অসিত কর্মকার
বিশ্বাস করার দরকার নেই
সন্দেহবাতিক রোগ মনের ভিতরে পুষে রাখো;
এদেশে জন্মেছো তাই।
দ্রোহের আগুন জ্বালো,তবে
নেতাদের উসকানিতে নয়,এর কারণ সেই আগুনই
ওদের গদি টেকানোর হাতিয়ার।
শিশ্নদণ্ডের দৌড়াত্বে বিস্মিত হয়ো না,
সেদিন ভবাণীগঞ্জ মাগীপাড়া উচ্ছেদের মূলেই ছিলো
কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী আর জনদরদী নেতা।
১২-১০-২০২০ ইং