মিছে সময় ও জীবন
কবি নাসিমা হক মুক্তা
নীড়ের ভিতর অদ্ভুত এক দোলা
প্রায়শ অস্থির হয়ে সভ্যতা খুঁজে
মাটির এই জীবন
কোথায় যেন শব্দহীন পাখির মতন
ওড়ে যাচ্ছে শান্তি সনাতনে?
আর সময়টা মৃত্যুকে কাঁধে নিয়ে
ঝেড়ে ফেলে পৃথিবীর জলে
মানবসভ্যতা নামক তুচ্ছ গোষ্ঠী
ভুমিষ্ট হওয়ার কিচ্ছার আগেই
যাত্রী মানুষ টিকিটে নাম লিখে
জেগে উঠেছিল রক্তের কোলাহলে!
জন্মসৃষ্টির অগ্রভাগে
লোকান্তরের ইতিহাস
মানুষের পটভূমিতে আঁকা ছিল –
মিছে সময় ও জীবন।
সুখ ছুঁলে জীবন বড় ভাল লাগে
কবি নাসিমা হক মুক্তা
একটি মুখ, একটি সুখ -শিহরিত হয়ে
দেহের ভেতর ঢেউ তুলে
একটি গাছ, একটি রাত – দু’টো মিলে
নিয়তির বন্ধন বাঁধে
এক সময় ছিঁড়ে যায়
চোখে বেদনার জল নামে
তবুও জীবন থেকে নামার ইচ্ছা পুষে না
কেউ যেতে চায় না
সবাই তার সাথে সাথে ছুটতে চায়
ধরতে চায় ঐ আকাশ
কাননে বাসর পাতে
সবুজবীথি ছায়ে, নির্মল বাতাসের মায়ে
অলিখিত পরাঙ্মুখের সুখলতা ধরে
সমুদ্র পার হয়ে
তীরে আশা পুঁতে – ভালোবাসার স্বচ্ছজলে
মুখ দেখতে চায় – গগনচুম্বী
সুখ ছুঁলে জীবন বড় লাগে….
প্রভাত খোঁজে মানুষ
কবি নাসিমা হক মুক্তা
বিষন্ন পৃথিবী ছিঁড়ে
আগুনের ছাঁই
প্রবালপুঞ্জের স্তূপের গায়ে
রক্তফেনা হয়ে গলছে-
সমুদ্রের জলরাশিতে!
মিছেমিছি বেঁচে থাকার সখ্য
ধুলির সাথে মিশে
শূন্য প্রাণে – প্রভাত খোঁজে মানুষ…
যেদিন জন্মছিলে সেদিন সাথে করে এনেছিলে
উঁচু-নিচু ঢালু জীবন
ফসল আজ যা খেয়েছো, যা জন্ম দিয়েছো
তা তোমাদর বাড়তি পাওনা।
পাকস্থলীর টান
কবি নাসিমা হক মুক্তা
মানুষের পাল
যেতেছে চরম সত্যের মুখে
অবাধ পথ খুলে রেখেছে মরণের জন্ম
মহা মিছিলের গান
কাঁকরের রাস্তায় সমর্পিত আত্মার মূর্তি
বলি দিলো পাকস্থলীর টানে।
অসীম সুখের ব্রক্ষাণ্ডে
কি আছে তাদের ভাগ্যে?
বুঝে না দৈব,বুঝে না অপার্থিব সুখ
মশাই আছে মশাল নেই
তিমির রাত্রি যেনো হাঁটে প্রকাণ্ড ময়দানে….
মানুষ নামক দ্বিপদী প্রাণি
কবি নাসিমা হক মুক্তা
শুন্য হয়ে গেছে স্টেডিয়াম
চির রাহুর চিতায়
পুড়ে খাক হয়েছে জনমানব
সূর্য ঠিকই প্রদক্ষিণ করছে তার ধরায়
কবদ্ধ এক দানবের উৎপাতে
মানুষ নামক দ্বি- পদী প্রাণিরা দৌড়াচ্ছে
এঘরওঘর আওড়িয়ে।
বাঁচার নিঃশ্বাসটা শব্দহীন হয়ে মানুষেতে দূরত্ব
এক দু – ছয় ফুট থেকে হাজার বেড়ে
নির্দয় যুগের বল্কলের নিচে ফেঁসে
জগতময় অপার মুগ্ধতা ও বিশুদ্ধ বাতাসের অভাবে
শুকিয়ে যাচ্ছে – ভরা পুকুরের জল !
আত্মীয় স্বজন দূর স্মৃতি হয়ে অথৈ উদাস বিলে
নিঃস্ব ও একা বাউলের ভজনগীতি গায়
এই গীতি নিজের ভেতরে প্রবেশ করাতে
অন্য বাউলের দরকার
মানুষ ছাড়া মানুষেতে এসব জমে না
ওরা পরস্পর ছাড়া বড়োই তৃষ্ণাহীন হয়ে পড়ে।