কবি সুপ্তি জামান‘এর একগুচ্ছ কবিতা
শব্দ ফুল
অনেক কান্না ঝরে গেছে
হৃদয় এখন পবিত্র নীলাকাশ।
তপ্ত বালুতে ফলে না তো সোনার ফসল।
বরফ গলা জল নেমে গেছে
বেদনার বুক চিরে জেগে ওঠে এক চিলতে ভেজা মাটি।
বুনে দেব আমি রাই, কলাই, মটর, তিল,তিশি, মসিনার বীজ।
বিরান মনোভূমি শূণ্য পড়ে থাক।
শব্দ সমুদ্র খুঁজি ফিরি তেনজিং হিলারীর মতো।
এখন সুখ আসে আরবীয় ঘোরায় সওয়ারী হয়ে,
বিদর্ভ নগরীর দুর্গম পথ ছুঁয়ে।
হলোইনের রাতে যাদুকর আমার জন্য নিয়ে আসে
নিলাভ শব্দ কলোরাডো পাহারের পাদদেশ থেকে।
বেদনার দ্রাক্ষা রসে জারিত শব্দ যেন-
ভেজা শুপুরির মতো গুলাবী নেশায় চূর।
শ্রাবণ মাসের বৃষ্টিতে ভিজে টইটুম্বুর আমার শব্দের ফুল।
অসমাপ্ত কবিতা
অসমাপ্ত কবিতাটি আর লেখা হয়ে ওঠে না,
বলা হয়ে ওঠেনি তোমাকে আমার শেষ কথাটি,
অনেক অব্যক্ত অনুযোগ হলো না জানানো,
আমি নিজের সাথে কথা বলে মিটিয়ে নিয়েছি সকল বিরোধ।
একটি ফোন কলে মিনিট খানেক কথোপকথনের
সীমার বাইরে চলে গেলে কেউ, ঢের কথা জমে যায় রোজ।
স্মৃতির ঘোড়া ছুটে বেড়ায় মগজের ঘোর দৌড়ের মাঠে।
চোখের পাতায় ঝুরঝুর ঝড়ে পড়ে একত্র বাসের নানা উপাখ্যান।
কেমন আছ?
জানবার আজ আর নেই কোন প্রয়োজন।
চরম ভোগান্তি শেষে নিষ্কৃতি আসে
নিশ্চুপ নিরবতা নিয়ে,
নিশি রাতে যেমন সুনসান নিরব পুকুরঘাট।
সহস্র বলিদানের কালো রক্ত
বৃথাই গড়ায় মির্নাভার বেদিমূলে।
হারিয়ে গিয়ে জাগরূক হলে স্মৃতির মান-মন্দিরে,
অন্তরীক্ষে কোথাও নেই যদি
তবে কেন চোখের সীমানায়
কেবলই দেখি হেঁটে যাচ্ছ আরো দূর।
এখন তুমি যুধিষ্ঠিরের মতো স্থির,
মায়ার বাঁধনে বিচলিত নও এক চুল।
আমার মাথার ভিতরে চলমান এক গভীর
গিরিখাত ধরে তুমি ধাবমান অনন্তের পথে,
একবারও চাইলে না পিছন ফিরে।
পশ্চাতে আমি নিরবধি দেখি
তোমার অনন্তের পথে চলে যাওয়া।
আলস্য
কলম ধরলেই উগলে উঠতে চায় ছোটবেলা।
সেই ছোটবেলা যখন ঘুমঘোরে পিতার রোমশ বুকে গড়িয়ে পড়তো চিটচিটে আঠালো লালা।
পিতাকে কখনো বিরক্ত হতে দেখিনি কোন কিছুতে।
জীবনকে উপভোগ করতেন পিরিচে ঢেলে খাওয়া চায়ের মতো। ধেয়ে চলতে জানতেন না, যেন বিকেলের আলস্য মুড়ে রাখতো তাকে সর্বক্ষণ।
পিতা নিজ হাতে ফালি ফালি করে কেটে দিতেন তরমুজ, মনে হতো হাতে পেয়েছি যেন আধখানা চাঁদ। ভরা বর্ষায় খালে ভেসে থাকতো পেয়ারার নৌকো, স্বরুপকাঠির পাকা পেয়ারার মৌ মৌ ঘ্রাণ, পিতা হাতে তুলে দিতেন পাকা পেয়ারা। ছোটবেলায় আমি কেমন বাবা-নেওটা ছিলাম। পিতার মধ্যমা আঙ্গুলটি ধরে ঘুরে বেড়াতাম হাটময়।
তারপর এলো বয়ঃসন্ধিকাল,
বাবার সাথে বিচ্ছেদের সেই শুরু
তারপর আর কোনদিন বাবার রোমশ বুকে রাখিনি মাথা। আমার ছোটবেলার অকাল মৃত্যু ঘটলো তখনই। বড় বেলায় শুধু দূরে সরে গেছি, ক্রমশ পিতার কাছ থেকে, সফিপুর থেকে এমনকি নিজের কাছ থেকেও। আজ অপরাহ্ণে পিতার মতো সূর্য ডোবা দেখছি আলস্যের চাদর জরিয়ে গায়। আমিও অবশেষে পিতার মতো ঢেলে দেই দৃষ্টি দিগন্তে, বিস্তর ছোটাছুটিকে বিদায় দিয়ে আলস্যকে টেনে লই কাছে।
পিতাকে নিয়ে আজো লেখা হয়ে ওঠেনি কোন কবিতা
গতকাল একজন সুহৃদ আমায় প্রশ্ন করলেন-
আমি পিতাকে নিয়ে কোন কবিতা লিখেছি কিনা?
তিনি জাতির পিতাকে করেছেন ইঙ্গিত।
আমি অসহায় মুখে এদিক ওদিক তাকিয়ে বললাম
না, লিখিনি।
সব কথা কি পায় ভাষা কবিতায়!
সব ব্যাথা কি প্রকাশিত হয় রোদনে!
পিতাতো কন্যার প্রথম সন্তান
মাতৃত্বের প্রথম সোনালী সূর্যোদয়।
পিতা যেন কন্যার অবহেলিত প্রথম সন্তান,
বেঁচে থাকতে বুঝতেই পারে না পিতাও কন্যার আত্মজ!
স্থির চিত্রে আঁকা পিতার পাথর চোখ আমার বিদীর্ন করে দেয়,
ও চোখে চোখ রাখা কি আর হয়ে ওঠে সম্ভব।
উপচে ওঠে জলের নহর
আমি কান্নায় ভেসে যাই
ভেসে যায় আমার থরে বিথরে সাজানো কবিতার কথা।
মা কখনো লিখতে পারে না হারানো সন্তানকে নিয়ে কোন কবিতা।
৩২ নম্বরের সিঁড়ির সামনে দাঁড়ানো মৌন দেয়াল জানে
ব্যাথায় কুঁকড়ে থাকা পিতার ছবি বুকে নিয়ে
কবিতা লেখা যায় না।
শোক মন্দীভূত হয়
ব্যাথা কখনো না।
ব্যাথা ছড়িয়ে পড়ে শিরায় শিরায়
ব্যাথা শরীরের জোড়ায় জোড়ায়,
গিঁটে গিঁটে, পেশিতে পেশিতে,
বিসমিল্লাহ খাঁর সানাইয়ের সুরের মতো
ব্যাথা বাজে শরীরের সেতারে।
জন্ম জন্মান্তরের ব্যাথার বেদনে
মুখ থুবরে পড়ে আছি ঝড়ে ভাঙ্গা পাখির নীড়ের মতো,
তাই পিতাকে নিয়ে লেখা হয়ে ওঠেনি আমার আজো কোন কবিতা।
সূর্যাস্ত
বেলা ফুরনোর আগে আমিও বৃক্ষের মতো ঠায় দাঁড়িয়ে পড়ি, সূর্যের শেষ আলোটুকু পান করি ধীর লয়ে। ফুরিয়ে গেলেই তো গেল। সায়াহ্নের রবি ঠেস দিয়ে দাঁড়ায় এসে দুয়ারে , ডুবে যাবার আগে খানিক বিশ্রাম নিতে। নিভে আসা আলোয় সব ধোঁয়াসা মনে হয়। কি হেরিলাম প্রভাত বেলায়, কিবা দেখি এসে সায়াহ্নে! সকালের সোনা রোদ বিকেলে কেন এত বিলাপ ছড়ায়। ছেড়ে যাওয়ার আগে মায়া বাড়ে, আকাশে হেলান দিয়া অস্তরবি কাঁদে, দূর হতে তেজহীন তীর্জকআলোক রশ্নি হাতড়ে ফেরে পৃথিবীর মুখ। ডুবে যাওয়ার আগে মরে আসা চোখ দুটো টেনে মেলতে চায়, শেষবার দেখে লইতে চায় আত্মজার মুখ। সূর্য ডুবে যায়, আধিঁয়ারে পৃথিবী দিশেহারা।
পথ চেয়ে আছে পথের দিকে চেয়ে
জল-কাদা শুকায় না আর
ভেজা বাতাসেও হাহাকার
আবছায়া আঁধার আকাশের কোলজুড়ে
শ্রাবণের কান্না ফুরায় না কোন দিন —
তোমার মুখ থেকে সব রঙ মুছে গেছে
পর্দায় ভেসে ওঠে সাদা-কালো পাংশু ছবি
ক্রমশ আবছা হয়ে যাচ্ছ
স্থির নও, সরে যাচ্ছ দূর থেকে অনেক দূরে—
তুমি আর অপেক্ষা করছ না আমার ফেরার
পশ্চিমের জানালায় শেষ বিকেলের
আলোর পাশে আর বসে থাক না পথ চেয়ে
অনেক অনাদর সয়ে,
বৈতরণী নদী পার হয়েছ ক্লেশে—
আমার চোখের কোণে জমে থাকা বিষাদ
আর কোন দিন বাড়াবে না তোমার উদ্বেগ।
তুমি পেরিয়ে গেছ আমার দৃষ্টিসীমা
চুপিসারে মিলিয়ে গেছ দিগন্ত রেখায়—
দূর আকাশে তারা হয়ে নাওনিতো ঠাঁই
তাইতো কোথাও আমি খুঁজিনা তোমায়।
কোথাও কোন জমিনের পরে পড়ে না তোমার ছায়া
মনোভূম কর্দমাক্ত বিষম বেদনার ভারে—
কোথাও তুমি নেই আর বসে অলস অবসর ভালবেসে,
স্টেশনের চায়ের দোকানে
কেউ আর কোন দিন পাবে না তোমায় খুঁজে
সকলের সকল নরম গরম কথা
শুনবে না আর কোনদিন কান পেতে—
তোমার সকল উৎকন্ঠার অবসান হলো অবশেষে,
তবুও আমি আগের মতোই
সন্ধ্যায় মন্থর পায়ে ফিরে আসি ঘরে,
অন্ধের মতো হাতড়ে বেড়াই-
তোমার স্মৃতিময় চুপচাপ শুয়ে বসে থাকা।
একই গৃহকোণ, একই বিছানা পাতা, হ্যাঙ্গারে ঝুলানো শার্ট
সকলের চোখ পুড়ে কাঠ কয়লা—
বাতাসের মুখ পানে চেয়ে থাকি
বাতাসের সাথে মিলিয়ে যেতে দেখেছি যে তোমায় আমি।
পথ পড়ে আছে পথের দিকে চেয়ে,
পথিক থেমেছে, সরে গেছে আলগোছে দূরে—
আদর
তুমি বললে, আদর খুকুমনি,
আর আমি সত্যি সত্যি খুকুমনি হয়ে গেলাম!
শিশু বেলায় চোখ না ফোঁটা গোলাপী ইঁদুর
শিশুর মতো শুয়ে থাকতাম পিতার লোমশ বুকে।
সিঁদুরে আমের গায়ে কেমন লেপ্টে থাকে রমনীয় আদর!
পেঁপে গাছ মা দুর্গার মতো দশ হাতে
বুকে চেপে রাখে তার সুডৌল ফল
গুলঞ্চের ছোট ছোট গুটি আদরে
হয়ে ওঠে কেমন টকটকে লাল!
আহা আদর!
কবোষ্ণ আদর,
পিতার মতো কেউ কি কখনো আদর করে!
কেউ কি আর বলে তুই অমন কালো হয়ে গেছিস কেন খুকি?
তুমি বললে, আদর খুকুমনি
আমি চোখ বন্ধ করে চোখের পাতায় লুফে নেই আদর।
ছাগল ছানার মতো চপল পায়ে-
তা ধিন তা ধিন পথ চলি সারাবেলা।
কচি শশার মুখে লেগে থাকে খসে যাওয়া ফুলের আশিষ,
বেহেশতি সুধা পান করে শিশু মায়ের স্তনে রেখে ছোট হাত,
মায়ের মতো এমন আদর কে আর করতে পারে।
তুমি বললে, অনেক আদর
পেলব উষ্ণতায় মুখের মধ্যে
যেন ডেইরী মিল্ক চকলেট গলে যায়,
ভাদ্রের গরম মুখ ঘসে সুগোল তালের নরম গালে
আদরে পেকে ওঠে তাল,
আহ্লাদে হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে ভাদ্র মাসের পাকা তাল।
একটু আদর পেলে কে আর শূণ্যে ঝুলে থাকে বলো,
শরতের শুভ্র শেফালির মতো
আনন্দে ঝরে পড়ে শিশিরের ছোঁয়ায়।
তুমি বললে, তোমায় অনেক আদর
আদরে ডুবে মরতে ঝপাৎ করে জলে দিলাম ঝাপ
দেখে নিও হবো আমি গলাজলে ডুবে থাকা কোকনদ।
বয়ষ্ক পুরুষ লাল রঙ মেখে দেয় তরুনী বধূর হেমাভ ডানায়।
তরুনী বধূ সোনালী ডানার চিল হয়ে দূরে উড়ে যায়।
কথোপকথন
নয়নে নয়ন রেখে যে কথা বলি তোমার সাথে
তার চেয়েও ঢের কথা বাকি থেকে যায় গহীন গহনে।
কত কথা বলেছি তোমার বলিষ্ঠ করতলে
সমর্পিত করে আমার কোমল করতল।
কখনো পায়ে পা ঘসে।
কখনো বুভুক্ষু নর-নারী নিশ্চুপ
কান পেতে থাকে ফোনের ওপাশে কান পেতে,
কি কথা থাকে বাকি—কে জানে!
তীব্র বিবাদের পর একটি কোমল কথা
বলার অবকাশ খোঁজে পরান।
সুমধুর গান,
পরাবাস্তব কবিতা অথবা ধুন্ধুমার আড্ডা
সবইতো কেবলই কথা!
সকল কোলাহল পাশ কাটিয়ে নিরালায়ে একলা বসি
নিজের সাথে দুটি কথা কইবার আশে।
এত কথা, এত বিসম্বাদ, শত হৈ চৈ হট্টগোল শেষে
যবে একদিন নির্বিবাদী চোখে চেয়ে থাকে স্বজন,
গভীর উৎকন্ঠায় কান পেতে থাকে আপনার জন
বলে ” কিছু একটা বলো!”
বোবার শত্রু নাই
বোবার তো বন্ধুও নাই!
দিনান্তে শ্রান্ত নর-নারী আশ্রয় খোঁজে শয়নে
অস্ফুট কথোপকথনে জেগে ওঠে ঘুমন্ত উপত্যকা,
বসন্ত বাতাসে হিল্লোলিত গগন শিরিষের শিরা উপশিরা।
কথার কল-কাকলি টেনে নেয় আমায় জানালার পাশে,
কান পেতে শুনি কি বলে মুখরা রমনী?
ও কোন দহনে জ্বলে পুড়ে মরে রাত্রিদিন!
তৃষিত খরতাপ ছড়ায় উত্তাপ,
বহুদিন বৃষ্টিবিলাসে নেয়নি কি কেউ তারে ডেকে!
গাছের পাতা কথা বলে ছুঁয়ে পরষ্পরকে
জলেরও গান আছে
মেঘ বলে গর্জে।
নিঝুম রাতে পোকারা মেতে ওঠে নিগুঢ় কথোপকথনে,
আকাশগঙ্গা দেখতে দেখতে আমরাও
বিভোর কথায় মগ্ন হতাম রাতের কোলে শুয়ে।
হাত
বিনানুমতিতে আমার হাতখানি
রাখলাম তোমার বুকের উপর,
বিকেলের রোদ যেমন রাখে হাত ঘাঁসের উপর।
তখন তুমি ঘুমে,
খানিক নড়েচড়ে উঠেছ কিনা বুঝলাম না।
বুঝবো কি করে?
আমরা তখন এক পালঙ্কে শায়িত ছিলাম না।
আমার সুদীর্ঘ হাত তোমার দিকে ধাবমান
তোমায় ছুঁয়ে থাকে রাতভর।
সুমিষ্ট ঘুম ছুঁয়ে থাকে আমায়।
আমার স্পর্শকাতর হাত ঘাঁসের মতো
খুঁজে ফেরে রোদ, ঘুম ঘুম চোখ খুঁজে ফেরে তোমায়।
শিশুর মতো হাত বাড়িয়ে দেই তোমার দিকে
আমি ঘুমঘোরে হাত রাখি তোমার বুকের উপর।
চেতনা লুপ্ত হলেও
আমার চেতনা লুপ্ত হবে যখন
তখনও বাইরে থাকবে আলো
অথবা আধো অন্ধকার আকাশ,
আলোহীন, ঘনায়মান আঁধার।
আমি দেখবো না সবুজ, লাল,
নীল বৃক্ষের পাতা।
আমি দেখতে পাব না,
কেমন চুপিসারে কাছে এসে দাঁড়িয়েছে
চির আকাঙ্খিত প্রিয় মুখ।
তখনও জেনো, আমার কিছু চেতনা অবশিষ্ট ছিল।
দেখার আড়ালেও দেখা হয়
কথার আড়ালে কথা
থাকে কান্নার অধিক শোক।
তুমি হাত খানি রেখো কপালে
রেখ বুকের জমিনের উপর
অতটুকুতেই তৃপ্তি মিটবে তখন।
পিতা যেমন অন্তিম মুহুর্তে
আত্মজার হাতখানি টেনে নিয়েছিল বুকে
অস্ফুট বলেছিল ‘খুব কষ্ট’।
কিছু চেতনা অবশিষ্ট থাকে চেতনা লুপ্ত হলেও।
দেরি ভেবে করো না আর বেশি দেরি
অন্তিম মুহুর্তে হলেও
আমার চেতনা লুপ্ত হলেও
দাঁড়িও এসে আমার শয্যার পাশে
মনে রেখো,
চেতনা লুপ্ত হলেও কিছু থাকে অবশিষ্ট ।
কপালে রেখো হাতখানি
রেখো বুকের জমিনের উপর।