চিশাও চিশাও চিশাও! – হাসনাইন খুরশেদ এর ছোট গল্প
এ যেনো এক পরিত্যক্ত নগরী। রাস্তার দু’পাশে বিশাল সব অট্টালিকা। অথচ সব ভবন ছেয়ে আছে অন্ধকারে। স্ট্রীট লাইটের ম্যাড়মেড়ে হলুদ আলোয় কেমন ভূতুড়ে লাগে।
বার বার ঘড়ি দেখে ফারাহ। শাপলা চত্বরে পৌঁছে আবারো ঘড়ি দেখে। খুব বেশি না, নয়টা চল্লিশ। অথচ চারপাশে কি শুনসান নিরবতা! সব কিছু কেমন নির্জীব!
ওপারের পুলিশবক্সে জ্বলছে হালকা আলো। মানুষের নড়াচড়া চোখে পরে। বোঝা যায়, ডিউটিরত পুলিশরা আছে বক্সের ভেতরেই। রাস্তায় কোন জন-মানব নেই। সব কেমন নিষ্প্রাণ!
লক ডাউনে নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে পুরোটা শহর। এ শহর জুড়ে অসংখ্য সরকারী-বেসরকারী অফিস। অজস্র দোকানপাট। হোটেল-রেস্তোরাঁ। পৌনে দুই কোটি মানুষের শহরটা দিন দশেক ধরে একদম প্রাণহীন।
ফারাহ’র বাবার অবস্থাও এখনকার এই শহরটার মতোন। অচেতন শুয়ে আছেন হাসপাতালের বেডে। তার দু’চোখ বুজে আছে। বুকে কি সব লাগানো। সারাক্ষণ স্যালাইন চলছে। শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা, বোঝাই যায় না। একদম অসার।
সারাটা দিন হাসপাতালেই ছিলো ফারাহ আর ওর মা। যখনই অনুমতি পেয়েছে, আইসিইউ’তে ঢুকেছে। পাশে দাঁড়িয়ে বাবার হাতটা হাতে তুলে নিয়েছে। চুলে হাত বুলিয়ে দিয়েছে। কিছুই টের পাননি আসহাব সাহেব।
প্রচণ্ড কষ্টে বুকটা দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। বুক ফেটে কান্না এসেছে। তবু কাঁদেনি ফারাহ। এখানে তো কান্না নিষিদ্ধ।
এমন করলে তো আসতে দেবো না.. আপনাদের আর ভেতরে আসতেই দেবো না..
স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ডিউটি ডাক্তার। সকালে বাবাকে দেখেই মা যখন ডুকরে কেঁদে উঠলেন, তখনই জানিয়ে দিয়েছেন।
মাকে দ্রুত বাইরে নিয়ে আসে ফারাহ। করিডোরে মানুষের কথা-বার্তা থেমে যায় ওর মায়ের চাপা কান্নায়।
বিকালে ওরা মা’কে আইসিইউ’তে ঢুকতে দেয়নি। অনেক অনুনয় করে শুধু ফারাহ’র ভেতরে যাওয়ার অনুমতি মিলেছে।
উথলে ওঠা কান্না বুকে চেপে ফারাহ দাঁড়িয়ে থেকেছে বাবার শয্যাপাশে। চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকেছে। ওর দুই চোখ ভেসে গেছে অশ্রুজলে।
বাবা চোখ মেলেছে মা!
চোখের অশ্রু মুছে, মুখে হাসি ফুটিয়ে বেরিয়ে এসে বলেছে ফারাহ, বিশ্বাস করো মা.. বাবা আমার দিকে তাকিয়ে হেসেছে.. আবার ঘুমিয়ে পরেছে..
ইচ্ছে করেই মিথ্যা বলেছে মা’কে। এটুকু মিথ্যা না বললে তাকে বাসায় পাঠানো যেতো না। মা’কে বাসায় পৌঁছে দিয়ে একটু বিশ্রাম নেবেন গফুর চাচা। ফিরে এসে সারা রাত কাটাবেন হাসপাতালে।
ঢাকা শহরে আত্মীয় বলতে তেমন কেউ নেই ওদের। নানার বাড়ি, দাদার বাড়ি- দু’টোই সিলেটে। স্বজনরা সব সেখানেই থাকেন।
বাবাকে নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন সবাই। বার বার ফোন করে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। বাড়ি বসে দোয়া-দরুদ পড়ছেন। সদকা দিচ্ছেন। খুব অস্থির হয়ে আছেন।
মামা-চাচারা অনেকেই আসতে চাইছেন। কিন্তু পারছেন না। এই সময়ে এতোটা দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আসা সম্ভব না। চলছে না কোন যানবাহন। সব বন্ধ লক ডাউনে।
এ মূহূর্তে ঢাকা শহরে ফারাহদের একমাত্র স্বজন গফুর চাচা। গোপীবাগের ফ্ল্যাটবাড়িটার কেয়ারটেকার। তিনি আরামবাগ হাসপাতালে ফিরলেন রাত নয়টার আগেই।
আরামবাগ থেকে গোপীবাগ। খুব বেশি দূরে না। আবার খুব কাছেও না। উবার-পাঠাও সব বন্ধ। ক্যাব-সিএনজিও চলছে না। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ফারাহ দেখলো, একটা রিকসাও নেই। একদম জনমানব শূণ্য।
অপেক্ষা করে লাভ নেই। এই লক ডাউনে যানবাহন পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তবু আশা নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো হাসপাতালের সামনে। নিস্ফল অপেক্ষায় থাকলো।
তারপর.. হেঁটেই রওয়ানা দিলো বাসার পথে।
নটরডেম কলেজটা ডানে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে ফারাহ..
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনটা বায়ে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে ফারাহ..
ওর খুব খারাপ লাগছে বাবার জন্য.. ভীষণ কষ্ট লাগছে..
লক ডাউনের দিনগুলোতে বাবাকে নতুন করে পেয়েছে ফারাহ। পেয়েছে বলা যায় না আর- পেয়েছিলো।
লক ডাউনের মাঝেই গতকাল বিকালে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক। অচেতন অবস্থায় বাবাকে আনা হলো হাসপাতালে। এখনো আইসিইউ’তে।
ফারাহ’র বাবা আসহাব সাহেব বেশ রাশভারি মানুষ। ইয়ুথ অ্যাপারেলসের প্রোডাকশন ম্যানেজার। প্রতি ভোরেই তাকে ছুটতে হয় কারখানায়। ফিরতে বেশ রাত হয়ে যায়।
আশুলিয়ার এই ফ্যাক্টরিটা খুব বেশি বড় না। আবার খুব ছোটও না। বারো শ’ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে। তাদের সামলে সারা বছর প্রোডাকশন সচল রাখতে হয় আসহাব সাহেবকেই।
শ্রমিক সামলানো বেশ জটিল কাজ। তারচেয়েও জটিল প্রোডাকশনের মান নিশ্চিত করা। একটু এদিক-ওদিক হলেই বায়াররা রিজেক্ট করে।
সব ঠিক রাখতে বেশ হিমসিম খেতে হয় আসহাব সাহেবকে। প্রায়ই শুক্রবারের ছুটির দিনেও ছুটতে হয় কারখানায়।
বাবার সাথে খুব একটা দেখাই হয় না ফারাহ’র। খুব একটা কথাই হয় না।
মার্চের শুরুতেই কোভিড-১৯ আঘাত হানে মার্কিন মুল্লুকে। সেখান থেকে পাওয়া বেশ কিছু এক্সপোর্ট অর্ডার স্থগিত হয়ে যায়। স্থবির হয়ে যায় ইয়ুথ অ্যাপারেলস। প্রোডাকশন বন্ধ থাকায় অবসর সময় কাটানোর সুযোগ পান আসহাব সাহেব।
অনেক বছর পর এক সপ্তাহ ছুটি নিয়ে বাবা ওদের সাথে সময় কাটান। ওরা তিন জন মিলে শপিংয়ে যায়। রেস্তোঁরায় যায়। সিনেপ্লেক্সে মুভি দেখতে যায়। কক্সবাজারে বেড়াতে যায়।
ভার্সিটিতে ভর্তির অপেক্ষায় থাকা ফারাহ এতোটা বছর পরে বুঝতে পারে, তার বাবা একটুও রাশভারি মানুষ নন। দারূণ প্রাণোচ্ছ্বল, সজীব একজন মানুষ।
ওর মা বলেন, তখনও তোর জন্ম হয়নি.. মাত্র বিয়ে হয়েছে আমাদের.. তোর বাবাকে সেই সময়ের মতো লাগছে..
আজ সেরা রান্নাটা করো.. চেং জিয়াও অনেক দিন ধরেই তোমার হাতের বাঙালি খাবার খেতে চাচ্ছে..
সকালে অফিসে যাওয়ার আগে ফারাহ’র মাকে বললেন আসহাব সাহেব, আমার সহকর্মীরা সবাই জানে, তুমি-ই বাংলা ফুডের সেরা শেফ।
কি যে করো না তুমি! লজ্জ্বা পান ফারাহ’র মা, অফিসে গিয়েও বাসার কথা বলো! উল্টোপাল্টা কথা বলো!
বাবাকে অফিস পাঠিয়েই মা ছুটে যান বাজারে। ফিরেই লেগে যান নানা রকম রান্না-বান্নায়। দারূণ ব্যস্ত হয়ে ওঠেন।
আর কতোক্ষণ পর পর মেয়েকে ডেকে বলেন, সারাটা বাসা ঝেরে-মুছে পরিচ্ছন্ন কর মা.. সব কিছু সুন্দর করে গুছা.. বিদেশী মেহমান আসবে..
ফারাহ দিনভর কাজ করে। মায়ের মন খুশিতে ভরিয়ে দিতে কাজ করে। সারাটা বাসা এতো সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে, দেখে ওর মা-ও অবাক হয়ে যান।
চেং জিয়াও চাচা দারূণ মানুষ। পাঁচ বছর ধরে বাংলাদেশে আছেন। ইয়ুথ অ্যাপারেলসে টেকনিক্যাল এডভাইজার হিসাবে কাজ করছেন। খুব প্রাণবন্ত, খুব মমতাময় মানুষ।
বাবার সমবয়সী চেং জিয়াও চাচা পাঁচ বছরে বেশ ভালো বাংলা শিখে নিয়েছেন। বাংলাতেই কথা বললেন ওদের সাথে। বললেন, স্ত্রী, এক ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে তার পরিবার। ওরা চীনেই থাকে- গুয়াংজুতে। মেয়েটা ফারাহ’রই বয়সী।
নিজের মেয়েটার কথা বলতে গিয়ে ফারাহ’র মাথায় আদর করে হাত বুলিয়ে দিলেন। খুব খুশি মনে বললেন, আজ থেকে তুই-ও আমার মেয়ে। আর আমি তোর চেং জিয়াও চাচা।
যাবার সময় সোনালি সূতোয় বাঁধা পিতলের একটা মাদুলি ওর হাতে তুলে দিলেন। বললেন, সাত প্রজন্ম ধরে আমরা এই মাদুলিগুলো সাথে রেখেছি। তোর চাচী, ভাই আর বোন সব সময় একটা করে সাথে রাখে। আমিও এটা রাখি।
চেং জিয়াও চাচা বললেন, এই মাদুলিটা সব সময় সাথে রাখিস। সত্যিই যদি কখনো বড় কোন বিপদের মুখোমুখি হোস, এটা হাতে নিয়ে তিন বার বলিস- চিশাও! চিশাও! চিশাও!
চেং জিয়াও চাচা এসেছিলেন মার্চের ২২ তারিখে। এর তিন দিন পরই ঘোষণা করা হলো লক ডাউন। আর এই লক ডাউনের মাঝেই অসুস্থ হয়ে পরলেন ফারাহ’র বাবা।
জনশূণ্য মতিঝিল পেরিয়ে ফারাহ ঢুকে পড়লো গোপীবাগের গলিতে। এই গলির শেষপ্রান্তে ওদের বাসা। এই বাসায় থাকে ওরা তিন জন- মা, বাবা আর ফারাহ।
গলিটা বেশ অন্ধকার। দোকানপাটের আলো না থাকায় বেশি অন্ধকার লাগছে। আশে-পাশে কোন মানুষজন না থাকায় বেশি অস্বস্তি লাগছে। কোন ধরণের কোন সাড়া-শব্দ না থাকায় খুব বেশি ভয় লাগছে।
ভয়ে কেমন শিউরে উঠছে ফারাহ। একাকি হাঁটছে সন্ত্রস্ত পায়ে। ভয়ে ওর পা নড়তে চাচ্ছে না। তবু জোর করেই হাঁটছে বাড়ির পথে।
ওই তো.. আর পাঁচটা বাড়ি পরেই ওদের বাসা। ওদের হলুদ রঙের বিল্ডিং।
সামনেই একটা নির্মিয়মান সাত তলা ভবন। সেই ভবনের টিনের গেইটের সামনে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা লোক।
আশে-পাশে আর কোথাও কেউ নেই। লোকটা তাকিয়ে আছে ফারাহ’র দিকে। এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। কাছাকাছি আসতেই গেয়ে উঠলো-
ইয়ে কালি কালি আখি..
ইয়ে গোরে গোরে গাল..
দু’ লাইন গেয়েই থেমে গেলো লোকটা। এখনো ফারাহ’র দিকে তাকিয়ে আছে টিনের গেইটে হেলান দিয়ে ।
ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে ফারাহ। ভীষণ ভয়ে শিউরে উঠছে।
আর মাত্র তিনটা বিল্ডিং পরেই ওদের বাসা। মাঝে তিনটা পুরনো দোতলা বিল্ডিং। ও গুলো পেরুলেই ওদের বাসা।
দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে, আট তলায় মায়ের রুমে আলো জ্বলছে। মনে মনে মা’কে ডাকছে ফারাহ।
লোকটাকে পেরিয়ে ওকে বাসায় পৌঁছতেই হবে। ওকে পৌঁছতেই হবে মায়ের কাছে।
ফারাহ জানে, জায়নামাজে বসে মা এখন কাঁদছেন বাবার জন্য। যে ভাবেই হোক, বাবাকে সুস্থ করে তুলতে হবে।
লোকটা স্থির দাঁড়িয়ে আছে। অনঢ় মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। আর লালসা ভেজা চোখে তাকিয়ে আছে ফারাহ’র দিকে।
ফারাহ যখন ঠিক পাশ দিয়ে যাচ্ছে, অকস্মাৎ লাফিয়ে উঠলো লোকটা। এক লাফে এগিয়ে এসে ফারাহ’কে জাপ্টে ধরলো। ওর মুখ চেপে ধরলো। ওকে টেনে নিয়ে গেলো টিনের গেইটের ভেতরে।
টানতে টানতে ফারাহ’কে নিয়ে গেলো একটা রুমে। সেই রুমে একটা কাঠের চৌকি। নোংরা, ছেঁড়া চাদরের ফাক গলে দেখা যাচ্ছে ময়লা তোষক।
লোকটা এক ধাক্কায় ফারাহ’কে ফেলে দিলো সেই চৌকির ওপর।
অসহায় চোখে ফারাহ তাকিয়ে আছে লোকটার দিকে।
ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে লোকটা। কেমন বিভৎসভাবে হাসছে।
ফারাহ’র খুব মনে পড়ছে মায়ের কথা। খুব মনে পড়ছে বাবার কথা।
লোকটা এগিয়ে আসছে।
হঠাৎ কি যেনো মনে পড়লো ফারাহ’র। ও চমকে তাকিয়ে দেখলো, এতো কিছুর পরও ব্যাগটা সাথেই আছে।
ব্যাগের বাঁ দিকের পকেটটা হাতড়াচ্ছে ফারাহ। পাগলের মতো কি যেনো খুঁজছে!
লোকটা চলে এসেছে একদম চৌকির কাছে। চলে এসেছে ফারাহ’র ঠিক সামনে। যে কোন মূহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়বে!
পরদিন খুব ভোরে ফারাহ’র মা যখন ফজরের নামাজ পরছেন, তখন বেজে উঠলো মোবাইল ফোন। একটানা বেজেই চললো। মা তখনো মোনাজাতে রত।
মোবাইলের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো ফারাহ’র। অচেনা নম্বর। হাসপাতালের কেউ না তো! কোন দুঃসংবাদ নয় তো! বাবা কেমন আছেন!
ভয়ে ভয়ে ফোনটা ধরলো ফারাহ। ও প্রান্ত থেকে কথা ভেসে আসছে। বুঝে উঠতে সময় লাগছে ফারাহ’র। ও কাঁপছে! তীব্র উত্তেজনায় কাঁপছে! দারূণ খুশিতে কাঁপছে!
মোনাজাত শেষে উদ্বিগ্ন চোখে ফারাহ’র দিকে তাকিয়ে আছেন ওর মা। জায়নামাজে বসেই অস্থির তাকিয়ে আছেন।
প্রবল আনন্দের চিৎকারে ফেটে পরে ফারাহ, বাবা..!
সেই ভোরে ফজরের আজানের পর জেগে ওঠেন ফারাহ’র বাবা। এতোটা বছর প্রতি ভোরে যে রকম সুস্থতা নিয়ে জেগে উঠতেন , ঠিক সেই রকম সুস্থতা নিয়ে জেগে ওঠেন আসহাব সাহেব। সবাইকে চমকে দিয়ে হাসপাতালের বেড থেকে নেমে আসেন হাসি মুখে।
সেদিন বিকালে গফুর চাচার কাছে আরেকটা খবর পায় ফারাহ। অদূরের নির্মিয়মান ভবন থেকে একটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশটা কার, চেনার উপায় নেই। পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে।
আগের রাতে গোপীবাগের গলির সেই ভয়ংকর ঘটনা পুরোপুরি মুছে গেছে ফারাহ’র স্মৃতি থেকে। সে নিজেও জানে না-
লোকটা যখন ঝাঁপিয়ে পড়তে যাচ্ছিলো, তখন ব্যাগ থেকে একটানে হাতটা বের করে ফারাহ।
সেই মাদুলি হাতে লোকটার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ওঠে- চিশাও! চিশাও! চিশাও!
জ্বলন্ত আগুন পেছনে ফেলে সেই রাতে ফিরে আসে ফারাহ। কেমন এক ঘোরের মাঝে ফিরে আসে মায়ের কাছে।