দেবেশ রায়ের সঙ্গে- অরুণ চক্রবর্তী

0
586
Arun

দেবেশ রায়

দেবেশ রায় (জন্ম ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৩৬) একজন বাঙালি ভারতীয় সাহিত্যিক। জন্ম অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি এক দশক পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস যযাতি। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলি হল: মানুষ খুন করে কেন (১৯৭৬), মফস্বলী বৃত্তান্ত (১৯৮০), সময় অসময়ের বৃত্তান্ত (১৯৯৩), তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ত (১৯৮৮), লগন গান্ধার (১৯৯৫) ইত্যাদি। তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্ত উপন্যাসটির জন্য তিনি ১৯৯০ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হন।তার সম্পর্কে স্মৃতিচারন করতে গিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক এ লেখক অরুণ চক্রবর্তী তার ফেসবুক ওয়ালে যা লিখেছেন তা পাঠকের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো ……………..

দেবেশ রায়ের সঙ্গে…অরুণ চক্রবর্তী

দেবেশ রায়ের ‘মফস্বলী বৃত্তান্ত’ ভারতের তেরটি ভাষায় অনুবাদের জন্য স্থির করে কলকাতায় গিয়ে দেবেশদার সঙ্গে দেখা করলাম। চৌরঙ্গীর ‘প্রতিক্ষণ’র অফিসে। ঘণিষ্ঠতা ছিল না, তাছাড়া দেবেশদা কাউকেই তুমি বলেন না। আপনি সম্বোধনে কথা বলেন।

আমার প্রস্তাবে তাঁর ঘোর আপত্তি। মফস্বলী নয়, নিতে হলে নিতে হবে ‘খরার প্রতিবেদন’। এটা আমার পড়া ছিল না। আমি গুয়ার্তুমি তর্ক জুড়ে দিলাম, প্রকাশক ঠিক করেছে যে-বই, আপনি তাতে সম্মতি দেবেন কিনা সেটাই আসল কথা। তাঁর যুক্তি, ‘লেখকের কোন বই সর্বভারতীয় ভাষায় অনুবাদের যোগ্য, তা ঠিক করবেন লেখক। অবশ্য, আপনারা যদি সেই লেখককে প্রকাশযোগ্য মনে করেন।’

মহা বিপদ! এই রকম ব্যঞ্জনবর্ণ ভাষী মানুষের সম্মুখীন আমি আগে হই নি কখনো। মফস্বলী কেন সর্বভারতীয় পাঠকদের যোগ্য সে কথা সম্পূর্ণ করার আগেই তিনি আমাকে থামিয়ে দিলেন, ‘অরুণ, আপনি যখন খরা পড়েনই নি, তো মিছিমিছি মফস্বলীর গুণগান করছেন কেন?’ চুপ করে যাই। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সম্পাদক-আমি বিড়ালের মত গড়গড় করতেই থাকি। এক কপি খরা কিনে দিল্লি ফিরে আসি।

এসেই খরা পড়ে ফেলি। তারপর….মস্ত একটা চিঠি লিখি দেবেশদাকে। কেন মফস্বলী সর্বভারতীয় পাঠকদের জন্য জরুরী এবং সর্বভারতীয় পাঠ্যবস্তু হলেও তুলনায় কেন খরা এক নম্বরে নয়।

এর কিছুদিনের মধ্যেই দেবেশদা ‘মফস্বলী বৃত্তান্ত’ ভারতের তেরটি ভাষার অনুবাদে সম্মত হয়ে চুক্তিপত্র সই করে আমার কাছে এনবিটি-তে পাঠিয়ে দেন। আর আমার জন্য হাট খুলে দেন তার স্নেহের দরজা।

 

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধবর্তমান প্রেক্ষাপটে অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রীনা ফ্লোরার পরামর্শ
পরবর্তী নিবন্ধঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় বিষয়ে ঈমামদের সাথে প্রশাসনের মতবিনিময়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে