নক্ষত্রের কাছে লিখা বেনুবর্ণা অধিকারীর চিঠি

0
538
বেণুবর্ণা অধিকারী

প্রিয় নক্ষত্র,
তোমার শেষ চিঠিটা আমাকে অনেক ভাবিয়েছে। আমি এ নিয়ে অনেক অনেক ভেবেছি কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায়?
আসলে আমার বোধ বা চিন্তার সততায় আমি হয়তো তোমার চিন্তার সাথে একমত নই। আমি যদি কাউকে বন্ধু ভাবি সেখানে লিঙ্গবৈষম্যের বিষয়টা আসেনা। কারণ এখানে প্রেম বা অন্য কারো ক্ষতি হবার সম্ভাবনা না থাকলে আমি পরিস্কার মনে করি।
১) দেখ আমার ৩০/৩৫ বছরের পুরোনো কোন ছেলে বন্ধু যার সাথে যোগাযোগ অক্ষুণ্ণ আছে। সে ইতোমধ্যে বিয়ে করেছে কিন্তু তার স্ত্রী তাকে কোন মেয়েদের সাথে কথা বলা পছন্দ করে না বিধায় সেকি আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবে? আমাদের বন্ধুত্বটা অনেক বছরের। কিম্বা তার বউ পছন্দ করে না বলে আমি কি তার সাথে যোগাযোগ ছেড়ে দেব? সে যদি আমার ভাই হতো, তার স্ত্রী যদি পছন্দ না করতো বোনদের সাথে যোগাযোগ করা তাইলে সেকি বোনকে অস্বীকার করতে পারত? সম্পর্ক কি এতই ঠুনকো? ৩০ বছরের পুরানো মেয়েবন্ধুর সাথেও যদি সম্পর্ক রাখলে যদি তার স্বামী পছন্দ না করে সেখানে আমি কি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেব?
২) এমনই ফেসবুকে আমি এসেছি ২০০৮ সালে৷ লেখালেখির সুবাধে আর একাকীত্বের সুবাধেও যাদের কিছুটা জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা আছে তারা বন্ধু হয়েছে ফেবুতে। সবাই যে ভাল উদ্দেশ্যে বন্ধু হয়েছে তাতো নয়, আমরাও যত দিন যাচ্ছে তত ম্যাচিউরড হচ্ছি। মন্দ গুলোকে ঝেড়ে ফেলছি। এদের ভেতর ছেলে মেয়ে উভয়ই আছে। সবার সাথেই কিন্তু সব ধরণের আলাপ হয়না। পারিবারিক বিষয়ে আমি সাধারণত কিছুই বলিনা বা শুনতেও চাইনা। এরা ভার্চুয়াল বন্ধু। কখনো কখনো বিভিন্ন গ্রুপের বদৌলতে অনেকটা ক্লোজ হয়, ভার্চুয়াল থেকে বাস্তবতায় আসে। তাদের পরিবারের সুখ দুঃখের কথাও অনেক শেয়ার করে হয়তো সাময়িক কষ্ট লাঘব করে, এতে আমি দোষের কিছু দেখিনা যদি সেখানে ইনটেনশনালি মন্দ উদ্দেশ্য না থাকে। এদের মধ্যে ছেলেও হতে পারে মেয়েও হতে পারে। এতে বন্ধুত্ব নষ্ট করার মত কিছু হয় না। একটা মেয়ে যদি তার স্বামীর বদনাম আমার কাছে করতে পারে একটা পুরুষ কেন বলতে পারবে না?
৩) আমরা যখন একসাথে ঘুরতে যাই মেয়েরা তাদের স্বামীদের বা বাচ্চাদের কিন্তু সাথে আনে না বা তারা আসতেও চায়না, একটা পুরুষও যদি তার স্ত্রীকে আনতে না পারে তাইলে তার কি দোষ দেয়া যায়? তার পরিবারতো আমাদের চেনে না তারা আমাদের গ্রুপে আসার আগ্রহ পায়না এটাই স্বাভাবিক না?
সুতরাং সর্বক্ষেত্রে যদি ভাবি আমি আমার স্বামিকে যদি দেখি অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলছে সেটা কি মানি?
এটা ভাবলে তো সমস্যা? সেই মেয়েরা শুধুই তার বন্ধু, মেয়ে বা বোনও তো হতে পারে? এখানে সীমাবদ্ধতা হলো স্ত্রীর, স্বামীর নয় আর স্বামীরাও যদি স্ত্রীদের কোন গ্রুপে বা বন্ধুর সাথে বেড়াতে বা আড্ডা দিতে দেখলে রাগারাগি করে বা সমস্যা করে এটাও তাদের সীমাবদ্ধতা, স্ত্রীদের নয়। হয়তো এই সম্পর্কগুলো কিছুটা সময় অনেক জ্বালা যন্ত্রনা ভুলে নতুন উদ্যোমী হওয়া। বন্ধুত্বের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই খোলা মানসিকতা থাকলে সবাই ভাল থাকবে এটা আমার বিশ্বাস। এতে লুকোচুরি করতে হবেনা একে অপরের সাথে।
তোমার মতামত জানিও। যত দিন যাচ্ছে তত দৃষ্টিভঙ্গিকে অনেকভাবে যাচাই করছি।
তোমার বেণু

Advertisement
উৎসবেণুবর্ণা অধিকারী
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে সুপ্রীম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাতে পুকুর খনন
পরবর্তী নিবন্ধদান খয়রাত – রত্না চক্রবর্তীর অনুগল্প

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে