নদীটা ভালোই আছে
কবি আব্দুল্লাহ আল নোমান
কৈশোরে এক ষোড়শী বালিকা,
আমাকে একটা নদী উপহার দিয়েছিল;
বলেছিল—
‘নদীটা যত্ন করে রেখো বুকের ভেতর।’
তারপর পেরিয়ে গেছে বাইশ বসন্ত,
ষোড়শী বালিকার কথা আমি রাখতে পারিনি!
অবশ্য নদীটা এখনও আমার কাছেই আছে;
বড়ো শান্ত শীতল এক নদী,
যত্নেই রেখেছি—
তবে বুকের ভেতরে নয়;
সে নদী পোষ মেনেছে—
আমার অবিশেষ দুই চোখের কোণে!
ষোড়শী বালিকা নদীর বিনিময়ে,
সুকৌশলে হরণ করেছিল—
আমার সবকটি প্রেমের নীলপদ্ম,
নিমিষেই দখলে নিয়েছিল—
আমার বাম বুকপকেটের নিচে ধুকধুকানি পরান!
শুধু তাই নয়,
বালিকার মেহেদি-রাঙা হাতে,
আমি সরল বিশ্বাসে সঁপে দিয়েছিলাম,
আমার একান্ত আকাশ;
সদ্য কৈশোরের সমস্ত আবেগ,
আর শতেক বেশি জোছনাভাসা রাত!
অথচ অকস্মাৎ—
এক কৈশোর পেরুনো তপ্ত দুপুরে,
দুই বসন্ত পরের অষ্টাদশী যৌবনের দিনে,
হাজার হরেক হেয়ালির মতো,
তার প্রিয় খেয়ালির মতো;
আমি অবাক হয়ে দেখেছি,
বালিকার প্রস্থান— হাসিমুখে চলে যাওয়া!
সেদিনের পর পার হওয়া,
আরও বিশ বসন্ত,
নদীটা বুকের ভেতরেই ছিল;
তারপর—
বালিকাকে দেওয়া কথা ভেঙে,
বাইশ বছরের সকাতর প্রতীক্ষা শেষে,
নদীটাকে পোষ মানিয়েছি—
অবশেষে অবিশেষ দুই চোখে আমার!
প্রিয়তমা—
তবু জেনে রেখো,
তোমার দেওয়া নদীটা আজও ভালোই আছে;
কেবল নদীর ওপরে নেই আমার একান্ত আকাশটা সেই!
২৫-০৫-২০২২