নাটোরের গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাওয়া তিন বন্ধুর বাড়িতে ইউএনও

0
334

নাটোরের গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চাওয়া তিন বন্ধুর বাড়িতে ইউএনও

স্টাফ রিপোর্টার নাটোর কণ্ঠ:গুরুদাসপুর উপজেলার পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজারের তিন বন্ধুর প্রতি বছরের ১৫ই আগষ্টের এই দিনে তাদের জেল খানার স্মৃতি গুলো মনে পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৫ বছরেও তাদের কোন খোঁজ রাখেনি কেউ। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ২০১৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তিন বন্ধুকে গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন।
সম্প্রতি ১৫ই আগষ্ট শনিবার সকালে সেই তিন বন্ধুর বাড়িতে তাদের সার্বিক খোঁজ খবর নিতে ছুটে যান ইউএনও মো. তমাল হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু রাসেল। তিন বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান তিন বন্ধুর এক বন্ধু অশোক কুমার পালের সহধর্মীনি অসুস্থ অবস্থায় বাসায় পড়ে আছে। অসুস্থ স্ত্রী ও সংসারের খরচ যোগাতে তাকে ভাঙ্গা হারমোনিয়াম নিয়ে ছুটতে হয় বাড়ি বাড়ি। পেশায় তিনি একজন সঙ্গীত শিক্ষক। অশোক কুমারের অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ ও তাকে একটি নতুন হারমোনিয়াম দেয়া হবে বলে তাকে জানিয়েছেন ইউএনও।

দ্বিতীয় বন্ধু নির্মল কর্মকার। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায় বিভিন্ন ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার কারনে ঋণ গ্রস্থ হয়ে পরেছে। বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক এনজিওর চাপে অসহায় হয়ে পরেছে এবং তার চোঁখের অপারেশনের অভাবে ভাল ভাবে দেখতে পায় না। ইউএনও তমাল হোসেন তার চোখের অপারেশনের যাবতীয় খরচ ও ব্যাংক এনজিও’র সাথে কথা বলে তার ঋণের সুদ মৌখুব করার আশ্বাস দেয়।

অপর তৃতীয় বন্ধু প্রবীর বর্মনও পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসা করতে গিয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পরে অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছে তিনি। তার স্ত্রীও দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ হয়ে বাসায় পরে আছে। উন্নত চিকিৎসার অভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ অবস্থায় বাসায় পরে রয়েছে। তার স্ত্রীর উন্নত চিকিৎসা করার জন্য সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করা হবে বলেও ইউএনও তমাল হোসেন জানিয়েছেন।

উল্লেখ, পচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদ করায় নাটোর গুরুদাসপুরে তিন বন্ধুকে দুই বছর ডিটেনশন ও ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। ওই সময় তাদের পক্ষে কথা বলারও কেউ ছিল না। ছাত্রলীগের ঘনিষ্ঠ এ তিনবন্ধু প্রবীর কুমার বর্মন, নির্মল কর্মকার ও অশোক কুমার পালকে ১৯৭৫ সালে “রক্তের বদলে রক্ত চাই, মুজিব হত্যার বিচার চাই” শ্লোগানে পোস্টারিং ও লিফলেট বিতরণ করার অপরাধে আটক করে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল। টানা ২৯ মাস কারাভোগের পর ১৯৭৭ সালে তাদের মুক্তি দেয়া হয়।

তারা বলেন, সে সময় অন্যায়ভাবে আটক করে তাদের জীবনকে বিপন্ন করে তোলা হয়। জীবনের সোনালী সময়ে গড়তে দেয়া হয়নি তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত। জেল থেকে মুক্তির পরও তারা ভয়ে ভয়ে থাকতেন। কখন জানি তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে ওই তিন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনলডাঙ্গা পৌরসভার উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
পরবর্তী নিবন্ধনাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মচারি, দিল আফরোজ মিলি এখন না ফেরার দেশে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে