নাটোরের ‘লিরা জামান’ সখেই ৩ বিঘা মাটিতে ফলায় শত ফুল-ফল

0
566

নাটোর কন্ঠ : লিরা জামান। নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের কাঁটাপুকুরিয়া মহল্লার বাসিন্দা, আবু হেনা মোস্তফা জামান রনি’র সহধর্মিণী। সংসারের সকল কাজ করে বাগানের যত্ন নিতে কমতি নেই এই দুই সন্তানের জননী’র। ছোটবেলায় বাবার বাড়ি আর বিবাহের পরে শশুরবাড়িতে বাগানেই যেন কাটে তাঁর বেশি সময়।

বসতবাড়ির আঙ্গিনায় ফুল-ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন গৃহবধূ লিরা জামান। তার বসতবাড়ির আঙ্গিনায় প্রায় ৩ বিঘা জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে দেশি-বিদেশি প্রায় ১০০ রকমের ফুল গাছ, প্রায় ২৫ রকমের আম গাছ ও ১০ রকমের সবজি গাছ। তার এ সফলতায় ফুল-ফলের বাগান করতে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকেই।

প্রায় ২০ বছর আগে ফুল-ফলের বাগান শুরু করেন লিরা জামান। ঢাকা, রংপুর, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তিনি দেশি-বিদেশি প্রায় ১০০ প্রজাতির ফুল গাছ সংগ্রহ করে বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় বাগানে শোভা পাচ্ছে অসংখ্য ফুল ও ফল।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিতালিলি, পামটি, মানি প্ল্যান্ট, চায়না বট, চায়না বাঁশ, পাতা বাহার বাটারফ্লাই, বাগানবিলাশ, রক্ত পরোবি, হলুদ এ্যালমন্ডা, বেগুনি এ্যালমন্ডা, এ্যারিকাপাম, সিঙ্গোনিয়াম, ফার্ন, বেবি টিয়ারস, অপরাজিতা, স্থলপদ্ম, হাসনাহেনা,

রঙ্গন, শেফালি ফুল, কাঠগোলাপ, দোলনচাঁপা, ফুরুজ ফুল, ৮ রকম ঘাস ফুল, ৬ রকম পর্তুলিকা, ৫ রকম কচুপাতা, ৭ রকম গোলাপ, ৫ রকম জবা, ৭ রকম রেইন লিলি, ৩০ রকম ইন্ডোর প্ল্যান্টসহ প্রায় ১০০ রকমের ফুল গাছ রয়েছে লিরা জামানের বাগানে

এছাড়া ল্যাংড়া, সুরমা ফজলি, বারি-৪, খিরসাপাতসহ প্রায় ২৫ রকম জাতের আম গাছ ও বেগুন, কাঁচা মরিচ, পুঁইশাক, লাউ, টমেটো, কলমি শাক, মিষ্টি কুমড়া, লেবুসহ ১০ রকমের নিরাপদ সবজি উৎপাদন হচ্ছে তার বাগানে।

এ বাগানে তিনি সর্বনিম্ন লিলি ফুল ৫০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা দিয়ে চিতালিলি ফুল ক্রয় করেছেন। অনেকেই বলছেন- চিতালিলি ফুল গাছ সিংড়া উপজেলায় শুধু লিরা জামানের বাগানেই রয়েছে।

লিরা জামান বলেন, ছোটবেলা থেকে ‘গাছ ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকেই এ বাগানের জন্ম। ফুল গাছগুলো প্রকৃতির সৌন্দর্য ধরে রেখেছে, যা সবাইকে মুগ্ধ করে। এখান থেকে ফরমালিনমুক্ত ফল ও সবজি পাওয়া যায়। নিজেদের চাহিদা পূরণ করে প্রতিবেশী ও স্বজনদের দেয়া হয় এ ফল।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে গাছগুলো সংগ্রহ করতে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। দুইজন শ্রমিক বাগানে কাজ করে। বাগানটি আরও বড় করার ইচ্ছা আছে। তাঁর বাগান দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভাবি ও বোনসহ অসংখ্য প্রতিবেশি ও স্বজনরা বাগান করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘যারা ফুল, ফল ও সবজি বাগান করতে আগ্রহী আমরা তাঁদেরকে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তাসহ যাবতীয় সহযোহিতা করে থাকি। যাতে তাঁদেরকে দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হতে পারে। কৃষি বিভাগ সবসময় তাঁদের সাথে রয়েছে।’

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধচলনবিলের ফসল দেশের চাহিদা মেটায় – পলক
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখাতে জেলা প্রশাসকের আহবান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে