নাটোর মালঞ্চি রেলস্টেশনে ট্রেন থামে না প্লাটফ্রমে, মই ভরসা যাত্রীদের, নেই টিকেট, নেই মাস্টার

0
787
Malonchi

ফজলে রাব্বি, বাগাতিপাড়া নাটোর কন্ঠ: নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি রেলস্টেশন চলছে স্টেশন মাস্টার ছাড়া। স্টেশনে ঝুলছে তালা। প্লাটফর্ম থাকলেও তা ব্যবহারের সুযোগ নেই। মই বেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠানামা করতে হয় যাত্রীদের। নেই টিকেট, সিগন্যাল ছাড়াই চলছে ট্রেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মালঞ্চি রেলস্টেশনটি ১৯২৭ সালে বৃটিশ সরকারের আমলে স্থাপিত হয়। তখন লোকমানপুর, আড়ানী রেলস্ট্রেশন ছিল না। উপজেলার বাস যোগাযোগব্যবস্থা না থাকায় সহজ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল মালঞ্চি রেলস্টেশন। বিশেষ করে উপজেলা সরকারি অফিসগুলো স্টেশনের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অধিকাংশই ট্রেনে যাতায়াত করে থাকে। সেই সময় মালঞ্চি রেলস্টেশনে কর্মরত ছিলেন তিনজন স্টেশন মাস্টারসহ, প্রয়োজনীয় সকল কর্মচারী। কিন্তু গত ২০০৩ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে সকল স্টাফ বর্তমানে শূন্য। ২৪ ঘণ্টা স্টেশনে ঝুলছে তালা।

সূত্র আরো জানায়, চারটি পৃথক রেলক্রসিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবহারের উপযোগী একটি। সেটাও প্লাটফরম থেকে বেশ দূরত্ব থাকায় যাত্রীদের ট্রেনের হ্যান্ডেল ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠানামা করতে হয়। স্টেশন মাস্টার না থাকায় ট্রেনের ঘণ্টা আর বাজে না। ট্রেন পৌঁছানোর পর ছেড়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। যাত্রীরা তড়িঘড়ি ট্রেনে উঠতে গিয়ে বিশেষ করে নারী যাত্রীরা বিভিন্ন সময়ে হতাহত হয়েছে। যাত্রীরা ট্রেনের সময় সূচি জানতে না পেরে নিরুপায় হয়ে ট্রেনের অপেক্ষোয় থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। স্টেশন বন্ধের কারণে যাত্রীরা সময়মতো টিকিট কাটতে পারে না।

টিকিট ছাড়াই ট্রেন ভ্রমণ করার অপরাধে হয়রানিসহ জরিমানা গুনতে হয় অনেক যাত্রীদের। স্টেশনে ইতিপূর্বে পাঁচটি ট্রেনে যাত্রী উঠানামা করলেও বর্তমানে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা ট্রেন ও চিলাহাটি থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী মেইল ট্রেন দুটিতে যাত্রী উঠানামা করে। ট্রেনের সিগন্যাল ছাড়াই চলছে ট্রেনগুলো। ট্রেনের সিগন্যালগুলো আর ব্যবহার না হওয়ায় অযত্নে নষ্ট হচ্ছে। এমন কি চুরি হচ্ছে সিগনালের তার, লোহাসহ মূল্যবান সরকারি সম্পদ।

স্টেশন থেকে ২০০ শত গজ দূরে মালঞ্চি রেলগেট। গেটম্যান ট্রেন আসার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে রেলের ওপরে রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে। গেটম্যান ট্রেনের খবর জানতে যে টেলিফোন ব্যবহার করতেন, সেটাও খুলে নেওয়া হয়েছে অজ্ঞাত কারণে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ঘরগুলো অরক্ষিত হওয়ায় ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইতিপূর্বে স্টেশনটি রক্ষার্থে অবসর কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে একটি মানববন্ধন হয়। বাগাতিপাড়া উপজেলা একটি জনবহুল এলাকা হওয়ায় বাগাতিপাড়াবাসীর দাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্টেশনটির সাবেক রূপ ফিরে পেতে স্থানীয় এমপিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরের সিংড়ায় কৃষকের মরদেহ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধলালপুরে সাংবাদিকদের কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে