নাটোরকন্ঠ: লালপুরে সাবেক চেয়ারম্যানের ভাইয়ের কর্তনকৃত গাছ দুটি সরকারি রাস্তার নাটোরের লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের আট্টিকা-গন্ডবিল রাস্তায় সাবেক চেয়ারম্যানের ভাইয়ের কাটা শিশু ও জাম দুটি সরকারি রাস্তায় বলে নিশ্চিত করেছেন লালপুর উপজেলা সার্ভেয়ার সাহাদত হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সরেজমিন জমি মাপ শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। পাইকপাড়া সেন্টারে আশরাফ আলীর স’মিলে রাখা কর্তৃনকৃত গাছ দুটি ইউনিয়ন তহসিলদারের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের আট্টিকা-গন্ডবিল সড়কের ২টি শিশু ও জাম গাছ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আট্টিকা গ্রামের আজিজুল আলম মক্কেল মাস্টারের ভাই আব্দুল মান্নান ওরফে মটর শুক্রবার (১৯ জুন) দুপুরে গাছ কাটার চেষ্টাকালে খবর পেয়ে লালপুর থানা পুলিশ গাছ দুটির ক্রেতা রুলু কে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। এ সময় গাছ দুটির বিক্রেতা আব্দুল মান্নান মটর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে গাছের মালিকানা নিষ্পত্তি না হওয়া অবধি গাছ না কাটার শর্তে রুলুকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ নিষেধ অমান্য করে গত রোববার (৫ জুলাই) গাছ দুটি কেটে নেন আব্দুল মান্নান মটর। খবর পেয়ে পরের দিন সোমবার (৬ জুলাই) ঘটনাস্থলে আসেন নাটোর জেলা পরিষদ সার্ভেয়ার তন্ময়। কথোপকথোনের এক পর্যায়ে সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলমের নির্দেশে তার ছেলে আসাদুজ্জামান বাবু জেলা পরিষদ সার্ভেয়ার তন্ময় ও পার্শবর্তী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হায়দার আলীকে মারপিট শুরু করলে বাকী সঙ্গীরা তাদের রক্ষার জন্য এগিয়ে যায়।
এ সময় গাছ কর্তনকারী আব্দুল মান্নান মটর, সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে আব্দুল আলীম, আমিনুল ইসলাম পলাশ, সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই মহাসিন আলীর ছেলে মুনজুর রহমান ও জাকির হোসেন মিন্টু তাদের সকলকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। নিজেদের রক্ষার্থে ঘটনাস্থল থেকে সার্ভেয়ার সহ বাকীরা চুপচাপ চলে যান। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য হায়দার আলী বাদি হয়ে লালপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে লালপুর থানা পুলিশের এসআই ফজলুর রহমান সরেজমিন তদন্ত করে মারপিটের সত্যতা পান বলে নিশ্চিত করেন। এ ঘটনার পর লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাছটির সঠিক অবস্থান নিশ্চিতের জন্য সরেজমিন তদন্তের নির্দেশ দেন উপজেলা সার্ভেয়ারকে। নির্দেশনা মোতাবেক বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সরেজমিন কর্তনকৃত গাছের নিচে আরো ১২ ফুট রাস্তা আছে বলে মাপ শেষে নির্ধারিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম মক্কেল, লালপুর উপজেলা সার্ভেয়ার সাহাদাত হোসেন, বেসরকারী সার্ভেয়ার আফজাল হোসেন, দুদু সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ তহসিলদার ইউসুফ আলী জানান, কর্তনকৃত গাছ দুটি সরকারি রাস্তায় তা মাপ শেষে প্রমানিত হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, উনারাই সিদ্ধান্ত নিবেন। লালপুর উপজেলা সার্ভেয়ার সাহাদত হোসেন জানান, গাছ দুটি সরকারি রাস্তার মাপ শেষে নিশ্চিত হয়ে ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। আইনগত ব্যবস্থার বিষয়ে উনিই ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, গাছ দুটি সরকারি রাস্তার তা মাপ শেষে নিশ্চিত হওয়া গেছে। রাস্তাটি কোন দপ্তরের সেটা নিশ্চিত হতে হবে, আমাদের হলে আমি নিজেই গাছ কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। আর যদি অন্য কোন দপ্তরের রাস্তা হয়, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।