মওলা বাবার আখড়াবাড়ি -মাহবুব রুবেল

0
877
Pakkhik Lalon

মাহবুব রুবেল : মওলা বাবার আখড়াবাড়িতে আমাদের ঘেরা দুটো মাত্র ঘর। যখন ফকির – বাউল – সাধুগুরুরা আসেন স্থান সংকুলান হয় না । একতারা, দোতারা, খমক, ডুবকির মাঝে চুপটি করে বসতে হয়। বেশি নড়াচড়া করা যায় না। সন্ধ্যার পর ভক্তি শ্রদ্ধা নিবেদন করে চালপানি নিতে হয় আমাদের। সে সময় যে গান গাওয়া হয় তাকে বলা হয় দৈন্য গান। গুরুর কাছে নিজেকে সমর্পণ করে এই গানগুলো রচিত।

সেই গান পর্ব চলতে থাকে একদিকে আর অন্যদিকে চলে সাধুগুরুদের সেবা বানানোর কাজ এই কাজে সক্রিয়ভাবে আমাদের টোটন ভাই সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন প্রবলভাবে। আখড়াবাড়িতে একটুকরো জমি। সেখানে আগামী শীতে পালং, মূলো, ফুলকপি, ধনেপাতা করতে পারবো আমরা। জানিয়েছেন আখড়াবাড়ীর সার্বিক কাজ করেন যে মানুষটি অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন আমাদের প্রিয় শরিফুল ইসলাম টোটন ভাই। আসলে যা যেদিন জোটে আর কি।

আমরা শিষ্যছেলেরা একটু সাহায্য করি। এই সময় গান ওঠে। মহাজনী পদ। ফকির লালন সাঁই, কুবির গোঁসাই, শাহ আবদুল করিম, রাধারমণ। গান আর সেবার গন্ধে ম ম আমাদের আখড়াবাড়ি। সঙ্গে -র রান্নার গন্ধ। একটু সাহায্য করি আমিও। ফকির – বাউলদের জন্য সেবা সাজি। আমরা চন্দন বেটে সেবার সঙ্গে ডলে সেবা নিই। সেবার সঙ্গে সাধনার কোনও সম্পর্ক নেই। আসলে দেহসাধনা স্থূলতা থেকে সূক্ষ্ণে চলার সাধনা।

নেশা এখানে সেই অর্থে ব্যবহৃত। গানের পর আমরা কলাপাতায় করে সেবা নিই। গরম ভাত আর ভাজি – তরকারি – মাছের ঝোলের গন্ধে আখড়াবাড়ি আবার ম ম করে। সবার সেবা হলে। আমরাও সেবা নেই। এই হল আখড়াবাড়ির জীবন। আমি এখানকার রোজকার নয়, তবে মাঝেমধ্যে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকি মাত্র। আবারো দেখা হবে আমাদের আগের মত করে, দেখা হবে করোনা ভাইরাস মুক্ত সুস্থ বাংলার বুকে, আবারও প্রাণ ফিরে পাব প্রত্যাশা রইলো।
_____জ্ঞান অঞ্জন দাও নয়নে …. আলেক সাঁই

Advertisement
উৎসPakkhik Lalon
পূর্ববর্তী নিবন্ধক্ষুধার্তের ক্ষুধা – ভাস্কর বাগচী
পরবর্তী নিবন্ধবাগাতিপাড়ায় টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে