মরীচিকা -শাপলা জাকিয়া‘র ভৌতিক গল্প -পর্ব ১১

0
302
Shapla Zakia

মরীচিকা

ভৌতিক গল্প -পর্ব-১১

শাপলা জাকিয়া : দীপু হতাশ হলেও প্রকাশের সাথে রাত জেগে চ্যাটিং চালিয়ে গেলো। পরদিন আমাকে বললো,
-আমার ইন্টুইশন বলছে, প্রকাশের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমেই আমরা মহিমকে পাবো।
আমি বললাম,
-সম্ভাবনা আছে। কারণ রূপালীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রকাশ ও মহিম বিজনেস পার্টনার এবং ফ্ল্যাটটাও ওদের যৌথ মালিকানায় কেনা। মহিম এই কারণেই রূপালীকে নিয়ে এই ফ্ল্যাটে উঠেছিল।
দীপু ঘাড় নাড়িয়ে বললো,

-এটা প্রকাশ্য এবং যৌক্তিক কারণ। অপ্রকাশ্য দিকটা নিয়েও আমাদের ভাবা উচিত। নাম্বার ওয়ান, প্রকাশের সাথে যদি মহিম কানেক্টেড না থাকতো, তবে ওকে মহিম ভেবে চ্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার সময়, কোন না কোন ভাবে আমার ইন্টুইশন আমাকে জানিয়ে দিতো যে আমি ভুল করছি। সেরকম কিছু ঘটেনি।

নাম্বার টু, মানুষ যখন কিছু মনেপ্রাণে খোঁজে তখন প্রকৃতির সবকিছু তাকে নীরবে সাহায্য করতে থাকে। প্রকাশকে পেয়ে যাওয়া এরকমই একটি সাহায্য। সাধারণ মানুষ এই নীরব ইংগিতটা ধরতে পারে না, তাই অনুসরণ করতে পারেনা। কিন্তু আপনার বা আমার সেটা ধরতে পারা উচিত, মেঘলা!
আমি বললাম,
-নীরব ইংগিত কিভাবে ধরতে হয়?
-ধরুন কাউকে খুঁজছেন, সেই সময় যাকে খুঁজছেন না, বারবার তার সাথে দেখা হয়ে যাচ্ছে। তখন বুঝতে হবে যার সাথে বারবার যোগাযোগ হচ্ছে তার সাথে অবশ্যই আপনার কাংখিত মানুষটির যোগাযোগ আছে।

আবার ধরুন, আপনি কোন প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন, তার ক্লু পেয়ে যেতে পারেন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা থেকে। রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন কানে আসবে, কিছু মানুষের আলাপের টুকরো অংশ। টুকরো অংশগুলি নিয়ে ভাববেন, দেখবেন উত্তর পেয়ে গেছেন। অথবা টিভি ছাড়লেন, টিভিতে মুভি হচ্ছে। মুভির কোন চরিত্র কিছু গভীর কথা বলছে, সেটা শুনে ভুলে যাবেন না।

আপনার বর্তমান পরিস্থিতির সাথে চরিত্রের বলা কথাগুলিকে মেলাবেন,অধিকাংশ সময়ই নির্দেশনা পেয়ে যাবেন। অথবা কোন একটা উপন্যাস পড়ছেন, দেখবেন সেখানে আপনার সমস্যার সমাধানের জন্য কোন না কোন কথা লেখা রয়েছে। আমরা আশপাশ থেকে এভাবেই সাহায্য পেতে থাকি, কিন্তু চোখ বন্ধ করে থাকি বলে বুঝিনা।
প্রবাল বললো,
-একটা প্রশ্ন ছিল।
-করুন।
-মুভিটা তৈরি করেছেন যিনি বা উপন্যাসটা লিখেছেন যিনি, তিনি তারমতো করে তৈরি করেছেন, এরসাথে আপনার বা আমার মিলে যাওয়াটা হয়তো ইচ্ছাপ্রনোদিত, মানে বলতে চাইছি, আমরা মেলাতে চাই বলে মিলছে, মেলাতে না চাইলে মিলতো না।

দীপু হেসে বললো,
– এই জগত ও দুনিয়া এতো সহজ হিসাবে চলে না। আমরা এই পৃথিবীতে বাস করেও এই পৃথিবীর সবকিছু জানতে পারিনা। চারদিকে কতো শব্দ হচ্ছে, কিন্তু সব শব্দ শুনিতে পাই না। কানের শ্রবণ ক্ষমতা যতোটুকু ঠিক ততোটুকুই শুনতে পাই। শ্রবণ ক্ষমতার বাইরের অতি উচ্চ শব্দ বা অতি মৃদু শব্দ আমরা শুনতে পাইনা। ঠিক তেমনিভাবে চোখ সব দেখে না, নাক সবকিছুর ঘ্রাণ পায় না। সামনে বসে থাকা মানুষটি হয়তো আপনার পাশে বসেই ঠান্ডা মাথায় আপনাকে খুনের পরিকল্পনা করছে, আপনি কিচ্ছু টের পাবেন না।

তবে প্রবাল সাহেব, কিছু মানুষ টের পায়। এই জগত নির্দিষ্ট নিয়মে চলে, সেই নিয়ম যাদেরকে টের পেতে দেয়, শুধু তারা টের পায়। এখন এই ” তারা” কারা? তারা সাধু, সন্ন্যাসী হতে পারে। জগতের নিয়ম জানার জন্য তারা সাধনা করে, সাধনার মাধ্যমে অনুমতিপ্রাপ্ত হয়ে গোপন তথ্য জানতে পারে।

আরেকদল মানুষ নিজের অজান্তেই তথ্য পেতে থাকে। এরা হচ্ছে সৃষ্টিশীল মানুষ। বিশেষ করে লেখক শ্রেণী। তারা জগত ও জীবনের বাস্তব অথবা ভাবসমুদ্রে ডুব দিয়ে একটা একটা করে মূল্যবান পাথর তুলে আনে, তারপর সেগুলি দিয়ে মালা গাথার মতো তার সৃষ্টিকর্মকে সাজায়।

কোন পাথরটা কে পাবে তা নিয়ন্ত্রিত, নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কেউ কিছু পায় না। দেখবেন অনেক লেখক বলবেন,লেখা আমার ওপর ভর করে। যখন ভর করে তখন না লিখে আমি থাকতে পারিনা, ছটফট করতে থাকি।
এই ছটফটানিই হলো তাগিদ বা প্রেশার। আপনার মাধ্যমে মানুষকে কিছু জানাতে চায় পুরো সিস্টেম। আপনাকে যতোটুকু জানানোর অধিকার দেয়া হবে আপনি ঠিক ততোটুকু জানাতে পারবেন, এক লাইনও বেশি বা কম না।

আর তাই লেখক সবসময় যা লিখতে চান লিখতে পারেন না, আবার যা লিখতে চাননি, তা লিখে ফেলেন। তার কলম নিয়ন্ত্রিত, এ জগতের সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত, সবকিছু চলে কঠিন নিয়মে।
প্রবাল বললো,
-হতে পারে, এরকম নিউজ তো মাঝে মাঝেই পড়ি, পাঁচ বা বিশ বা পঞ্চাশ বছর আগে একজন লেখক গল্পের ছলে যা লিখে গেছেন তা একসময় পৃথিবীতে ঘটতে শুরু করেছে। টাইটানিক জাহাজ ডুবি, মানুষের চাঁদে যাওয়া, করোনা ভাইরাসের আবির্ভাবে মানুষের অকাল মৃত্যু, এইসব নানা ঘটনা প্রথমে গল্প- উপন্যাস বা মুভিতে এসেছে, তারপর পৃথিবীতে ঘটেছে।

দীপু প্রবালের মুখ থেকে এই প্রথম সমর্থন পেয়ে উৎসাহিত হয়ে বলে উঠলো,
-রাইট! শুধু পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া বড় ঘটনাগুলিই নয়, মানুষের জীবনের অন্যান্য ঘটনাও কারো লেখায় আগাম চলে আসতে পারে। পরবর্তীতে বাস্তব জীবনে সেগুলি ঘটে অথচ খোঁজ নিলে দেখা যাবে বাস্তবের ঐ ঘটনার সাথে লেখকের কোনরকম যোগসূত্র ছিল না।
প্রবাল বললো,
-তারমানে যা লেখা হবে তাই গুরুত্বপূর্ণ, তাই শিক্ষনীয়?
-সব সময় নয়। সব বীজ থেকে চারা জন্মায় না। সব গাছ ফলবতী হয়না। তাছাড়া একটা ফলের বাগানে ফলবতী গাছের পাশাপাশি , আগাছাও থাকে। যে গাছে ফল হয় তার বপন, যত্ন ও বিকাশ ঘটান ফল বাগানের মালিক। বাকিগুলি মরে যায় বা উপড়ে ফেলা হয়।

আলোচনা অন্যদিকে ঘুরে যাচ্ছে বলে আমি বললাম,
-প্রকাশকে নিয়ে এখন কি করতে চান?
দীপু নড়েচড়ে বসলো,
-হুম ভেবেছি, ওটা নিয়ে আমার পরিকল্পনাটা বলি।

প্রকাশকে ঐ ফ্ল্যাটে আমন্ত্রণ জানাবো। প্রকাশ আসতে রাজি হয় কিনা সেটা দেখার বিষয়। যদিও সে ফ্ল্যাটটির মালিক কিন্তু আসে না এখানে। রূপালীর ভাষ্যমতে ওর সুইসাইড করা দেহটা প্রকাশ টুকরো টুকরো করে কাটে ফেলে দেয়ার জন্য। এই কাজ প্রকাশ কেন করলো? সে তো খুন করেনি। রূপালীর সুইসাইড করা লাশ সে পুলিশকে হ্যান্ডওভার করে দিতে পারতো, তা না করে লাশ গুম করলো কেনো সে?
সেইরাতে দীপু তার মোবাইল থেকে আমার আইডি দিয়ে প্রকাশের সাথে আলাপ চালিয়ে গেলো। আমি পাশের রুমে শুয়ে আমার মোবাইলে দুই পুরুষের প্রেম-প্রেম ভাব নিয়ে লেখা আলাপচারিতা পড়ছিলাম।

প্রকাশ জানতে চাইছে মেঘলা কোথায় থাকে। দীপু গুলশানের এই নিকুঞ্জকাননের নাম লিখে পাঠালো।
প্রকাশের বিস্মিত হওয়ার কথা কারণ নিকুঞ্জকাননে তার ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রকাশ রিপ্লাই দিতে সময় নিলো। একটু পর লিখলো,
-“তুমি কি আমার পূর্ব পরিচিত কেউ?”
দীপু লিখে পাঠালো,
-“নাতো। তোমার প্রোপিকে আকাশের ছবি আর নামটা খুব ভালো লেগেছিল। তাই হুট করে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ভালো না লাগলে আনফ্রেন্ড করে দেবো।আমি সাধারণত অপরিচিত কাউকে ফ্রেন্ড লিস্টে রাখিনা।”
-” এখন আনফ্রেন্ড করতে চাও?”
-” হা, হা, সেটা বুমেরাং হয়ে যাবে। আমিই কষ্টে পড়ে যাবো।”
-” মেঘলা! তুমি ইনবক্সে কতো আন্তরিক, কিন্তু ফোনে আপনি, আপনি করছিলে কেনো?”
-“তুমিও আমাকে আপনি বলেছো ফোনে!”
-“সেতো তুমি বলছিলে বলে। দেখা হলে কিন্তু তুমি বলতে হবে?”
-“দেখা হবে মানে?”
প্রকাশ সে কথার উত্তর না দিয়ে বললো,
-“নিকুঞ্জকাননের কতো নাম্বার ফ্ল্যাটে তোমরা থাকো? ”
-” সিক্স বি, কেনো বলতো?”
-“এখন বলবো না, দেখা হলে বলবো।”
-“কবে দেখা হবে? ”
-“সামনের ফ্রাইডেতে দেখা হতে পারে। ”
-“আরে না, না! তুমি এরকম হঠাৎ আমার ফ্ল্যাটে চলে এসো না, আমার হাজবেন্ডকে কি বলবো বলো তো?”
-“তোমার হাজবেন্ড আমাকে দেখে খুশি হয়ে আপ্যায়ন করবে দেখো।”
-“অসম্ভব, স্ত্রীর বন্ধুকে সহ্য করা ওর ধাতে নেই!”
-“করবে। তুমি দেখো। ধরবে বাজি?”
-“কি বাজি? ”
-“যদি তোমার হাজবেন্ড আমাকে তার ড্রইং রুমে বসিয়ে হাসিমুখে চা নাস্তা খাওয়ায় তবে তোমাকে চুমু খেতে দিতে হবে।”
-‘ছি! ‘
এরপর দীপু দুই হাতে লজ্জায় মুখ ঢাকা বানরের ইমো পাঠালো।
দীপুর বাঁদরামীতে আমার হাসি পেলো বটে কিন্তু ভয়ও পেলাম। সত্যি যদি প্রকাশ এসে হাজির হয়! একজন বিবাহিত মহিলাকে কি অবলীলায় চুমু খাওয়ার কথা বলছে লোকটা। অবশ্য দীপু নিজেও মেঘলা হয়ে কম অসভ্যতা করছে না। আমার আইডিটা ব্যবহার করছে দীপু।

একটু গা ঘিনঘিন করছে, কিন্তু রূপালীর হাত থেকে বাঁচতে হলে এটুকু সহ্য করে নিতেই হবে।
পরদিন কেয়ার টেকার আলমগীর হোসেন প্রবালকে ফোন করে জানালেন, আমাদের বাড়িওয়ালা অর্থাৎ হারুণ চৌধুরী ঢাকায় একটা কাজে আসবেন। শুক্রবার বিকেলে এসে প্রবালের সাথে পরিচিত হয়ে এক কাপ চা খেয়ে যেতে চান।
দীপু সব শুনে বললো,
– গ্রেট। মাছ টোপ গিলেছে।
আমি বললাম,
– আমি কিছুতেই ঐ লোকের সামনে যাবো না।
দীপু বললো,
-আপনাকে যেতে হবে না। প্রবাল সাহেব আর আমি থাকবো ফ্ল্যাটে আর রূপালী।
বলে হাসলো দীপু।
প্রবাল বললো,
-যদি রূপালী আক্রমণ করে?
-আক্রমণ করার জন্য রূপালীর মেঘলার শরীরটা প্রয়োজন হয়। তাছাড়া রুপালী তখনই শক্তিশালী হয় যখন মেঘলা ওর আশেপাশে থাকে। মেঘলার শক্তি চুরি করে রূপালী। যেহেতু মেঘলা আমাদের সাথে ফ্ল্যাটে যাচ্ছে না সেহেতু রূপালী কিছু করতে পারবে না। তাছাড়া আমি যথাসম্ভব সেইফ রাখার চেষ্টা করবো ফ্ল্যাটটাকে।

পরের শুক্রবার সকালবেলা প্রথমে ঐ ফ্ল্যাটে গেলো দীপু একা। সমস্ত পর্দা সরিয়ে, আলো জ্বেলে, পড়া পানি ছড়িয়ে এলো। ফ্ল্যাটের চার কোনায় দোয়া পড়া কাগজ লাগিয়ে দিয়েছে সেটাও বললো। রূপালী নাকি ছায়ার মতো আশেপাশে ঘুরঘুর করছিল, কিন্তু দীপু ভালো প্রোটেকশনের ব্যবস্থা নেয়ায় কিছু করতে পারেনি।
দীপু বললো,

-একজন কাজের বুয়া দরকার, যে ফ্ল্যাটটা ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করবে। হারুন ওরফে প্রকাশ যেন বুঝতে না পারে ফ্ল্যাটে আপনারা থাকেন না।
রুনা ভাবি তার ঠিকা বুয়াকে দিতে চাইলো। দীপু বললো,
-এই বুয়াকে নেয়া বিপদজনক হবে, ও রিসিভার হিসাবে ভালো।
রুনা ভাবি সিঁড়ি পরিষ্কার করার বুয়া সালেহাকে খবর দিয়ে আনালেন। তাকে দীপুর পছন্দ হলো।
অবশেষে দীপু, প্রবাল ও সালেহা ফ্ল্যাটে গিয়ে সব গোছগাছ করে ফিরে এলো। দীপু বললো,
-আগামী চব্বিশ ঘণ্টা সিক্স বি ফ্ল্যাট নিরাপদ। রূপালী কিছু করতে পারবে না।

বিকাল পাঁচটায় আলমগীর হোসেন প্রবালকে ফোন করে জানালো, হারুন চৌধুরী এসেছেন!
প্রবাল তাকে ওপরে নিয়ে আসতে বললো। তারপর দীপুকে সাথে করে চলে গেলো সিক্স বি ফ্ল্যাটে।
শুরু হলো আমার অস্থিরতা। ওখানে কি হচ্ছে জানতে পারছি না। বারবার ঘড়ি দেখছি। অবশেষে টানা পঞ্চান্ন মিনিট পার করে প্রবাল এলো একা।
আমি বললাম,
-চলে গেছে?
প্রবাল বললো,
-হু।
প্রবালকে চিন্তিত লাগছে সে আর কিছু না বলে বেডরুমে গিয়ে শুয়ে পড়লো। আমি ওকে আরও প্রশ্ন করবো বলে বেডরুমে যেতে চাইলে রুনা ভাবি আটকে দিলেন,
-এখন যেও না। ও বোধহয় একা থাকতে চাইছে। দীপুর মুখ থেকে শুনো।

দীপু ফিরলো তার দশ মিনিট পর। মুখে হাসি। সে ঝলমলে গলায় বললো,
-রূপালী প্রকাশকে দেখেছে। তার ছায়া বারবার প্রকাশের কাছ দিয়ে ঘুরে যাচ্ছিল। কিন্তু আমি বাঁধা তৈরি করে রেখেছি বলে ও কিছু করতে পারেনি।
রুনা ভাবি বললেন,
-তুই দশ মিনিট দেরি করে এলি কেনো? কি করছিলি?
-রূপালীকে একটা প্রস্তাব দিয়ে এলাম। ওকে বলেছি আমরা যে প্রকাশকে চিনি, ভালো আন্তরিক সম্পর্ক ওর সাথে তার প্রমাণ তুমি পেয়েছো। মহিমের খবর প্রকাশের কাছ থেকে আমরা যোগাড় করতে পারব যদি তুমি আমাদের সহায়তা করো। যদি রাজি থাকো তবে ডাইনিং এর করিডোর ধরে হেঁটে বেডরুমে যাও। ও তাই করলো। ওর তো নিজের শরীর নাই। এরকম কৃত্রিম একটা ছবি তৈরি করে দেখালো।

আমি বললাম,
-প্রকাশককে কৃত্রিম ছবি দেখিয়ে ভয় পাওয়াতে চায়নি রূপালী?
-ওটা পারবে না। প্রকাশ রিসিভার হিসাবে যা তা। প্রবাল সাহেবের মতো। প্রকাশকে ভয় দেখাতে হলে রূপালীর একটি জীবন্ত শরীর দরকার।
সেই রাতে প্রকাশ আমার ইনবক্সে বেশ কিছু ছবি পাঠালো। সিক্স বি ফ্ল্যাটে প্রবাল ও দীপুর সাথে বসে কফি খাওয়ার সেলফি তুলেছে সে।
ছবির নিচে লিখে পাঠিয়েছে,
-” চমকে উঠলে তো? এই অসম্ভব কি করে সম্ভব হলো? হা হা, নিকুঞ্জকাননের সিক্স বি ফ্ল্যাটটা আসলে আমার। সেই সূত্রে আজ এসেছিলাম। তুমি বাড়ি ছিলে না, দেখা হলো না। তবু যেন তোমার শরীরের সুবাস পাচ্ছিলাম।

তোমার বেডরুমটা খুব দেখার ইচ্ছা ছিল। দেখার ইচ্ছা ছিল, মেঘলা নামের পরির মতো মেয়েটা কোথায় ঘুমায়? কিন্তু ভদ্রতা করে আর ঢোকা হয়নি তোমার বেডরুমে। আরেকদিন দেখতে চাই। আর হ্যাঁ প্রবাল সাহেব কিন্তু দারুণ কফি বানান। আপ্যায়নের কোন ত্রুটি রাখেননি।

আমরা একসাথে বসে কফি খেয়েছি, ছবিতে তার প্রমাণ রয়েছে। সো, তুমি বাজিতে হেরে গেছো।
বাজিতে হেরে গেলে আমার কি পাওনা ছিল, বলো তো মেয়ে?
দীপু উত্তরে লিখলো,
-আমি কারও পাওনা বাকি রাখিনা।
চলবে… ( এই গল্পে দীপু যা বলছে তা একান্তই দীপুর মতামত, একে সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই।)

Advertisement
উৎসShapla Zakia
পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঘার মনিগ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে নিহত -১ অগ্নিদগ্ধ ৮
পরবর্তী নিবন্ধকরোনাকে করো ভয় – শাহরিমা বৃতি 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে