সাহসী সংবিধান
কবি নাজনীন নাহার
বুকের বাজুতে কফিনের কবজে
ঝুলিয়ে রাখা বিশ্বাসঘাতকতা গুলো,
যখন বেদনার দ্রোহে পোড়ায়
সম্পর্কের অবনতির নকশা।
তখন যতই জ্বলজ্বল করা নক্ষত্ররাজি
তার আলোক সায়রের হাতছানিতে ডেকে যাক,
কুহক শূন্যতা কেবলই নির্মোহ
এক ক্ষোভের চিত্রকল্প মুখস্থ করিয়ে যাবে,
শৈশবের দশঘর নামতার ফর্মুলায়!
আহ্ হা!
জীবন বুঝি ঠিক এভাবেই জীবন
খুঁড়ে তুলে আনে তেলচুকচুকে কিছু ঘর্মাক্ত স্মৃতির,
উদ্দেশ্য ও বিধেয় এর দগদগে ঘা সমৃদ্ধ ব্যাকরণ!
আমরা বেশিরভাগ মানুষ তাইতো
অকেজো ক্যালকুলেটরে ফেলে,
ভুল হিসেব নিকেশে অতিবাহিত করে যাই,
আমাদের চৈতন্য চেতন!
জীবন এর নাম বেঁচে থাকা।
জীবনের নাম ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রাম।
তাই জীবন তো প্রতিনিয়ত ঘুরে দাঁড়ানোই শেখায়।
শেখায় আগুনে পুড়ে শুধু ছাই হওয়ার বিতণ্ডায় নিঃশেষ নয়।
বিজয়ের স্ফুলিঙ্গ হয়ে,
জীবনের মানচিত্রে অবিকল এক আগ্নেয়গিরি হয়ে বাঁচতে।
একাই যেখানে একশো!
একাকিত্ব সেখানে সৃষ্টির দুবাহু ছড়িয়ে
আশ্রয় নেয় সৃষ্টিশীলতার ব্রহ্মাণ্ডে।
তাই তো কবি।
ক্ষণজন্মা জীবন সৃষ্টিকে নয়,
দুঃখ ব্যথাকে ক্ষণজন্মা স্রোতের সাথে ভাসিয়ে দেয়।
আর অতলান্ত বিদগ্ধ শব্দ সায়রে ডুবে,
দহন সরিয়ে তুলে আনে একখানা গোটা জীবন।
প্রতিষ্ঠা করে আজন্মকালের স্বপ্ন সাধনার জীবন্ত ভাস্কর্য।
পৃথিবীর মানচিত্রে মানুষ তাই
সৃষ্টিশীলতার এক দ্রোহ সংকল্প হয়ে কথা কয়,
কথা কয় শতাব্দীর পর শতাব্দীব্যাপী,
সত্য, সুন্দর, চিরায়ত এক দুঃখ জয়ের
নজিরবিহীন মহাকাব্য হয়ে।
সাফল্যর মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে,
অনিঃশেষ এক দ্বীপ্তময়তায়।
এভাবেই জীবনের সব-
হেরে যাওয়া গল্পের মেরুদণ্ডেই মূলত বসত করে,
জেতার সঞ্জিবনী মহীরুহ।
প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতো যাপন করে টিকে থাকার,
নিরন্তর এক সংগ্রামী বিপ্লব।
শব্দে, বর্ণে, গন্ধে, বোধে জীবনের চরম এক সত্যর উপস্থাপনে,
আমিও তাই লিখে ফেলি দুকলম,
আমার বোধ আর চৈতন্যর চারুকলা অভিতাপ।
নির্মাণ করি সত্য, সুন্দর, স্বপ্নময় পৃথিবীর সাহসী সংবিধান