নাটোরকন্ঠ সিংড়া :
নাটোরের সিংড়ায় হাতিয়ান্দহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার হাতিয়ান্দহ বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত অফিস সহকারি রেজাউল করিম কে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়ার প্রতিবাদে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করেন।
উল্লেখ্য গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দ্বাদশ শ্রেণীর এক কলেজ ছাত্রী তার ছোট বোনকে ৬ষ্ট শ্রেণীতে ভর্তি করাতে নাটোরের হাতিয়ান্দহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে যান। ভর্তির কাগজপত্র জমা দেবার পর কৌশলে ছাত্রীটি পাশের রুমে নিয়ে গিয়ে তাকে জাপটে ধরে যৌন নিপীড়ন করে অফিস সহকারী রেজাউল করিম।
ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মেয়েটি নিজেকে ছাড়িয়ে ছোটবোনকে নিয়ে বাড়িতে এসে ঘটনাটি পরিবারকে জানায়।
পরে মেয়েটির পরিবারের লোকজন নিয়ে ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেনকে ঘটনাটি জানায়। তখন থেকেই অধ্যক্ষ, বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ অন্যান্যরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়ে উঠেন।
অত্যন্ত গোপনে ঘটনাটি ধামাচাপা দিলেও ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে যৌন নিপীড়নের মতো স্পর্শকাতর ঘটনাটি তারা মীমাংসা করেছে দেড় লাখ টাকায়। প্রভাবশালীদের চাপের মুখে মীমাংসা ও টাকা নিতে বাধ্য হয়েছেন। পরে ঘটনাটি পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা অবগত হলে তার নির্দেশে ৭ জানুয়ারি অভিযুক্ত রেজাউলকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
এর আগে ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযুক্ত রেজাউলকে একমাত্র আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলায় আপস মিমাংসার কথা উল্লেখ না থাকায় মিমাংসাকারীরা আইনের আওতার বাইরেই থেকে যান।
পরে জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। রোববার তদন্ত রিপোর্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ঢাকা ও রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী নির্যাতন দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, কলেজের অফিস সহকারী যৌন নিপীড়ন করে যতোটুকু অপরাধী যারা ঘটনাটি আপস মিমাংসা করেছিল তারাও ঠিক ততটা অপরাধী। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অধ্যক্ষকে বহিঃস্কারের সুপারিশসহ বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তী দিয়ে একটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। যাতে যৌন নিপীড়নের মতো ভয়াবহ অপরাধ এবং তা ধামাচাপা দেবার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।